আরব লিগ থেকে বহিস্কার করা হল সিরিয়াকে
১২ নভেম্বর ২০১১সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ গোটা দুনিয়ার তো বটেই, আরব লিগের একের পর এক অনুরোধ উপরোধেও কর্ণপাত না করে সেদেশের সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর দমননীতি চালিয়ে যাওয়ায় এবার নড়েচড়ে বসল আরব লিগ৷ শনিবার এক জরুরি বৈঠকে আরব লিগের নেতারা সিদ্ধান্ত নিলেন, লিগ থেকে সদস্যপদ খারিজ করে দেওয়া হবে সিরিয়ার৷ পাশাপাশি সিরিয়ার ওপরে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্তও নিয়েছে আরব লিগ৷
বস্তুত, আরব লিগের ওপরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য চাপ বাড়ছিল আন্তর্জাতিক মহলের তরফে৷ গত কয়েক সপ্তাহ যাবৎ মধ্যস্থতার চেষ্টা করেছিল আরব লিগ৷ তাদের সর্বশেষ প্রস্তাব ছিল, আসাদ সরকার বিরোধীদের সঙ্গে মুখোমুখি বসে দেশের অভ্যন্তরে রক্তক্ষয় বন্ধ করুক৷ কিন্তু আসাদ প্রশাসন আরব লিগের এই মধ্যস্থতার প্রস্তাব সরাসরি খারিজ করে দেয়৷ তার আগে, আসাদ প্রশাসন আরব লিগের প্রস্তাব মেনে নিয়ে কিছু রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিয়েছিল৷ দেশের অভ্যন্তরে সেনাবাহিনী তুলে নেওয়ার প্রস্তাবেও রাজি হয় আসাদ প্রশাসন৷ কিন্তু তারপরেও সহিংসা বন্ধ তো হয়ইনি, উপরন্তু হোমস শহরে সেনা নামিয়ে সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে ট্যাঙ্ক আর বন্দুকের মুখে ফেলা হতে থাকে৷ আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় শহরের বিভিন্ন এলাকায়৷ জাতিসংঘের হিসেবেই বলা হয়েছে, গত ছয়মাসের বিক্ষোভ পরিস্থিতিতে এ পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে সিরিয়ায়৷ মানবাধিকার সংগঠনগুলি এ বিষয়ে সোচ্চার হয়ে ওঠে সিরিয়ার অভ্যন্তরে এবং বাইরেও৷ অবশেষে সিরিয়াকে লিগ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত শনিবার চূড়ান্ত করল আরব লিগ৷
মিশরের রাজধানী কায়রোতে এদিন আরব লিগের সদর দপ্তরের বাইরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা যায়৷ সিরিয়ার পরিস্থিতি সামলাতে আরব লিগের ব্যর্থতার প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীরা সিরিয়ায় নিহতদের প্রতীক হিসেবে কফিন এনে বিক্ষোভ দেখান৷ তার মধ্যেই আরব লিগের এই সিরিয়াকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত লিগের ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও উজ্জ্বল করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ তবে আরব লিগের সদস্যপদ বাতিল হওয়ার পর সিরিয়ার তরফে এ বিষয়ে কোন প্রতিক্রিয়া এখনও শোনা যায়নি৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই