1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
রাজনীতিক্রোয়েশিয়া

ইউরো ও শেঙেন এলাকার সদস্য হলো ক্রোয়েশিয়া

২ জানুয়ারি ২০২৩

নতুন বছরের শুরুতেই ইউরোপের দু-দুটি জোটে যোগ দিলো ক্রোয়েশিয়া৷ রোববার সে দেশ ইউরোপীয় অভিন্ন মুদ্রা ইউরো চালু করলো এবং সীমাহীন শেঙেন এলাকার অংশ হলো৷

https://p.dw.com/p/4Lcxt
ক্রোয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেই প্লেঙ্কোভিচ এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন
ক্রোয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেই প্লেঙ্কোভিচ এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েনছবি: Denis Lovrovic/AFP

বিশ্বকাপ ফুটবলে অনেক দূর এগিয়েও থমকে যেতে হয়েছিলো ক্রোয়েশিয়াকে৷ কিন্তু ইউরোপীয় সমন্বয় প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট এগিয়ে গেলো সাবেক ইয়ুগোস্লাভিয়ার এই দেশ৷ ক্রোয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেই প্লেনকোভিচ নতুন বছরের প্রথম দিনে এই ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত'-এর গুরুত্ব তুলে ধরেন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের দশ বছর পর সে দেশ নিজস্ব মুদ্রা কুনা ত্যাগ করে ইউরো চালু করলো৷ ফলে ইউরো এলাকার সদস্য দাঁড়ালো ২০৷

বিশ্বের সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীন সীমাহীন এলাকা হিসেবে শেঙেন চুক্তিভুক্ত দেশের সংখ্যাও রোববার ২৭ ছুঁলো৷ প্রায় ৩৯ লাখ মানুষের দেশ ক্রোয়েশিয়া যোগ দেওয়ায় শেঙেন এলাকার জনসংখ্যা দাঁড়ালো প্রায় ৪০ কোটি৷ স্লোভেনিয়া ও হাঙ্গেরির সঙ্গে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ উঠে যাবার পর ইউরোপের বহির্সীমানা হিসেবে সার্বিয়া ও বসনিয়া সীমান্তে আরও কড়া নিয়ন্ত্রণ চালু করছে ক্রোয়েশিয়া৷ এতকাল স্লোভেনিয়া ও হাঙ্গেরি সীমান্ত পার হতে দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হতো৷ স্থল সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ উঠে গেলেও প্রযুক্তিগত কারণে বিমানবন্দরে সেই সুযোগ চালু করতে ২৬শে মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে৷ অভিন্ন ভিসার সুযোগের দৌলতে সে দেশে পর্যটন ক্ষেত্রের বাড়তি সুবিধা হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ পর্যটন শিল্প ক্রোয়েশিয়ার জিডিপি-র প্রায় ২০ শতাংশ অবদান রাখে৷

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন স্লোভেনিয়া ও ক্রোয়েশিয়া সীমান্তে দুই দেশের সরকার প্রধানের সঙ্গে মিলিত হয়ে সেই ঐতিহাসিক ঘটনার গুরুত্ব তুলে ধরেন৷ ব্রেগানা সীমান্তে ক্রোয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্লেনকোভিচ ও স্লোভেনিয়ার প্রেসিডেন্ট নাতাসা পির্ক মুসারের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি ইইউ-র সর্বশেষ সদস্য দেশ হিসেবে একই দিনে ক্রোয়েশিয়ার দু-দুটি বিশাল সাফল্যের উল্লেখ করেন৷ পরে ক্রোয়েশিয়ার  রাজধানী জাগ্রেবের একটি ক্যাফেতে প্রধানমন্ত্রী প্লেনকোভিচ ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্টকে কফি পানের আমন্ত্রণ জানিয়ে ইউরো মুদ্রায় দাম মেটান৷

ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো ক্রোয়েশিয়ার মানুষও অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতির কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন৷ নভেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিলো প্রায় সাড়ে ১৩ শতাংশ৷ অথচ ইউরো এলাকায় সেই হার ছিলো ১০ শতাংশ৷ ইউরো চালু হবার ফলে সে দেশের অর্থনীতির সুবিধা হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷ তবে ক্রোয়েশিয়ার অনেক মানুষের আশঙ্কা, ইউরো মুদ্রায় মূল্য হিসেব করতে গিয়ে অনেক পণ্য ও পরিষেবার মূল্য আরও বেড়ে যাবে৷ উল্লেখ্য, সরকারিভাবে চালু হবার আগেই ক্রোয়েশিয়ায় বেশ কিছুকাল ধরে ইউরোর প্রচলন ছিল৷

এমন প্রেক্ষাপটে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে পূর্ব ইউরোপের অনেক ইইউ সদস্যের তুলনা উঠে আসছে৷ পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরির মতো দেশ এখনো ইউরো চালু করতে না পারায় মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা আরও বাড়ছে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন৷ অন্যদিকে বুলগেরিয়া ও রোমানিয়া এখনো শেঙেন এলাকায় যোগদান করতে পারে নি৷ ইইউ-তে ঐকমত্যের অভাবে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে এই দুই দেশ ১লা জানুয়ারি সেই সাফল্যের অংশ হতে ব্যর্থ হয়েছে৷

এসবি/কেএম (এএফপি, রয়টার্স)