1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উচ্চমহলের প্রভাবই শুধু নয়, দক্ষতারও অভাব

৬ আগস্ট ২০১৮

বাংলাদেশ ব্যাংক কতটা সফলভাবে কাজ করতে পারছে, তা বারবারই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে৷ দু'রকমের অভিযোগ আছে এখানে৷ প্রথমত, প্রতিষ্ঠানটিকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না৷ দ্বিতীয়ত, এখানে দক্ষতার অভাব রয়েছে৷

https://p.dw.com/p/32cWC
ছবি: Reuters/A. Rahman

সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ে দু'টি আলোচিত ঘটনা হলো রিজার্ভ চুরি এবং ভল্টের সোনায় হেরফের৷ রিজার্ভ চুরির ঘটনার তদন্ত এখনো চলছে৷ কিছু অর্থ ফেরত পাওয়া গেলেও সিংহভাগের ভবিষ্যত অনিশ্চিত৷ আর সোনায় হেরফেরের বিষয়টি স্বীকারই করছে না বাংলাদেশ ব্যাংক৷ কিন্তু সোনায় হেরফেরের ঘটনা উদঘাটন করেছে সরকারেরই আরেকটি প্রতিষ্ঠান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্ক ও গোয়েন্দা বিভাগ৷

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে৷ এই ঘটনার জেরে ব্যাংকের তখনকার গভর্নর ড. আতিউর রহমানকে পদ ছাড়তে হয়৷ হ্যাকাররা ভুয়া ট্রান্সফার অর্ডার ব্যবহার করে নিউ ইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ থেকে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার অর্থ হাতিয়ে নেয়৷ এর মধ্যে দুই কোটি ডলার চলে যায় শ্রীলঙ্কা এবং ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইন্সের ক্যাসিনোতে৷

২০১৬ সালের নভেম্বরে ফিলিপিন্স বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রায় দেড় কোটি ডলার ফেরত দিয়েছে৷ আট কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে সাড়ে কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ এখনও ফেরত আনা সম্ভব হয়নি৷ এই চুরি নিয়ে থানায় যে মামলা হয়েছে তার প্রতিবেদন বা তদন্ত প্রতিবেদন এখনো দেয়নি সিআইডি৷ আর সরকারের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও আলোর মুখ দেখেনি৷ যার ফলে বাংলাদেশ কেন সারা বিশ্বে আলোচিত রিজার্ভ চুরির ঘটনায় প্রকৃতই বাংলাদেশের কারা জড়িত তা প্রকাশ এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি দুই বছরেও৷ মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসটেন্স রিকোয়েস্টর মাধ্যমে ফিলিপাইন্সের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস-এ  বাংলাদেশ একটি মামলা করে অর্থ ফেরত আনার জন্য৷ সেই মামলাও কবে নিস্পত্তি হবে নিশ্চয়তা নেই৷

রিজার্ভ চুরির পর এবার বাংলাদেশ ব্যাংক সমালোচনার মুখে পড়েছে ভল্টে রাখা স্বর্ণের হেরফের নিয়ে৷ চাকতিকে শতকরা ৮০ ভাগ সোনা ৪০ ভাগ হয়ে যাওয়া, ২২ ক্যারেটের সোনা ১৮ ক্যারেট হওয়া নিয়ে চলছে বিতর্ক৷

সরকারের শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভল্টে জমা রাখা ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের সোনার চাকতি ও আংটি মিশ্র বা সংকর ধাতু হয়ে গেছে৷ সেখানে শতকরা ৮০ ভাগ স্বর্ণ  ছিল৷ পরে  সেখানে শতকরা ৪০ ভাগ স্বর্ণ পাওয়া গেছে৷ আর ২২ ক্যারেট সোনা, হয়ে গেছে ১৮ ক্যারেট৷

২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে অনুসন্ধান চালায়  শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর৷ দৈবচয়ন ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত ৯৬৩ কেজি সোনা পরীক্ষা করে বেশির ভাগের ক্ষেত্রে তারা এই অনিয়ম পায়৷ এই অনিয়মের ঘটনা সরকারেরই আরেকটি প্রতিষ্ঠান শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর অনুসন্ধান করলেও সরকারই আবার তা অস্বীকার করছে৷ বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড়াও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, ‘‘সোনা ঠিকই আছে৷ কোনো হেরফের হয়নি৷''

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির দাবি করেছেন, ‘‘ভল্টে কাস্টমস কর্মকর্তাদের রাখা স্বর্ণের কোনো হেরফের হয়নি৷ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট খুবই সুরক্ষিত৷ ছয় স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তার মধ্যে ৪২টি সিসিটিভি রয়েছে৷''

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর কঠোর নিরাপত্তার কথা বললেও অতীতে এরমকম ঘটনা ঘটেছে৷ ২০১৫  সালের ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে টাকা বের করার পর সেখান থেকে পাঁচ লাখ টাকা চুরি হয়৷ টাকা চুরি করে নিয়ে যাওয়ার পর সিসি ক্যামেরায় তা ধরা পড়ে৷ আর এই টাকা চুরির ঘটনায় স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী দীপক চন্দ্র দাশকে আটক তখন করা হয়৷ তবে তাঁকে পুলিশে না দিয়ে ভারতের ব্যাংকটির কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল৷ তিনি টাকা নিতে এসে ওই টাকা চুরি করেছিলেন৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনমিক মডেলিং (সাসেম)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সম্প্রতি কিছু সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়েছে ব্যক্তি খাতে ব্যাংক মালিকদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে৷ অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে ভূমিকা থাকার কথা ছিল, আমি মনে করি বাংলাদেশ ব্যাংক সেখানে ব্যর্থ হয়েছে৷''

খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ

আর বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘হ্যাকিং যেটা হয়েছে সেটার জন্য আমি বাংলাদেশ ব্যাংককে দায়ী করি না৷ কারণ আমাদের দেশের দু'বছর আগে রাশিয়ার সেন্ট্রাল ব্যাংকেও হ্যাকিং হয়েছিল৷ ওটার জন্য রাশিয়ার সেন্ট্রাল ব্যাংকের গভর্নর পদত্যাগ করেননি বা কেউই পদত্যাগ করেননি৷ এফবিআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের হ্যাকিংটা হয়েছে নর্থ কোরিয়া থেকে৷ তাই এর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে আমি দায়ী করি না৷ কিন্তু পরবর্তী কালে স্বর্ণ নিয়ে যে ঘটনা ঘটল সেটার জন্য আমি বাংলাদেশ ব্যাংককে দায়ী করব৷ কারণ কিছু যদি না-ই হয়ে থাকে তাহলে এত প্যাঁচানোর দরকার ছিল না৷ আর যদি হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করা উচিত ছিল৷ তারা বলেছেন, ইরেজি আট আর বাংলা চার একই রকম বলে মিসটেক হয়েছে৷ এটা হাস্যকর কথা এবং কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো ব্যাংকে ৪০ হাজার টাকার চেক দিলে ৮০ হাজার টাকা দেবে না৷ কারণ ফিগার অঙ্কে এবং কথায় লেখা থাকে৷ তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের উপর মহল থেকে এই ধরনের বাজে কথা যখন বলা হয়, তখন বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পর্কে একটি পুওর ধারণা তৈরি হয়৷''

নিয়ন্ত্রক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক

হলমার্ক কেলেঙ্কারি, বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি, জনতা ব্যাংক কেলেঙ্কারি বাংলাদেশে এই সময়ে সবচেয়ে আলোচিত ঋণ কেলেঙ্কারি৷ বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংকগুলোতেই বেশি৷ বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে এখন পুঞ্জিভূত খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা৷ গত এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১২ হাজার ১শ' ৪৮ কোটি টাকা৷ খেলাপি ঋণের ৩৪ হাজার ৫শ' ৮১ কোটি টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের৷ এছাড়া ৪০টি বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৩১ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা৷ বিদেশি ৯ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দুই হাজার ৩শ' ২১ কোটি টাকা এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর পাঁচ হাজার ৫শ' ১৮ কোটি টাকা৷

অবলোপন করা ৪৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ যোগ করলে ব্যাংকিং খাতে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা৷ ঋণ অবলোপন হলো পাঁচ বছরের পুরনো খেলাপি ঋণ, যা আদায় হচ্ছে না৷ তার বিপরীতে একটি মামলা ও শতভাগ নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন রেখে মূল খাতা থেকে বাদ দেয়া৷

ব্যাংকের সংকট চলে আসছে অনেক দিন ধরেই৷ গত ১৮ জানুয়ারি সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম জাতীয় সংসদে বলেন, ‘‘২০১৭ সালে ব্যাংক খাত নড়বড়ে অবস্থায় পড়েছে৷ ৫৭টি ব্যাংকের মধ্যে ২০ টিতে আর্থিক অবস্থা ছিল দৃশ্যমানভাবে খারাপ৷ অন্য ব্যাংকগুলোতেও কম-বেশি সুশাসনের অভাব ছিল৷ খেলাপি ঋণ মারাত্মকভাবে বেড়েছে৷ নামে-বেনামে ইচ্ছামতো ঋণ নেয়া হয়েছে৷ ব্যাংকের পরিচালক, নির্বাহী, বড় কর্মকর্তারা এ সব কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন৷''

তারপরও নতুন নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে৷ রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকের অনুমোদন দেয়ায় নতুন ব্যাংকগুলোও সফল হচ্ছে না৷ যার বড় উদাহরণ ফার্মার্স ব্যাংক৷

গত এপ্রিলে বাংলাদেশ ব্যাংক বেসরকারি ব্যাংকগুলোর নগদ জমা সংরক্ষণ (ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও বা সিআরআর) এক শতাংশ কমিয়েছে৷ সিআরআর কমানোর ফলে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বেসরকারি ব্যাংকগুলোর হাতে যায়৷ এর ফলে ব্যাংক গ্রাহকদের ঝুঁকি বেড়ে যায়৷

ড. সেলিম রায়হান মনে করেন, ‘‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঠিক পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে৷ তার সঠিক মূদ্রানীতি ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ বাড়াতে পারে৷ ঋণপ্রবাহ বাড়াতে পারে৷ কিন্তু এখানে দেখছি বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে সাম্প্রতিক সময়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে ঋণ কেলেঙ্কারি, অদক্ষতার কারণে কিছু ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়া, পাশাপাশি ভুল সিদ্ধান্তের কারণে নানা রকম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে ব্যাংকিং খাতে৷ বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে ব্যক্তি বিনিয়োগ খাতে স্থবিরতা চলছে৷ নতুন করে আমরা সেখানে বিনিয়োগ দেখছি না৷ ব্যাংকিং খাতে অনাস্থার চিত্র৷ আমি মনে করি বাংলাদেশ ব্যাংকের যে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল, প্রত্যাশা অনুযায়ী সে দায়িত্ব পালন করতে না পরায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে৷''

ড. সেলিম রায়হান

খন্দকার ইব্রাহিম খালেদের মতে, ‘‘আর্থিক খাতের দুর্দশার জন্য তাত্ত্বিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্যই দায়ী৷ কিন্তু বাস্তবে আমি বাংলাদেশ ব্যাংককে ততখানি দায়ী করতে পারছি না৷ কারণ সরকার একটি উচ্চতর শক্তি৷ এই উচ্চতর শক্তি সবদেশেই কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আলাদা করে রাখে, সম্মান দেখায়৷ হস্তক্ষেপ করে না৷ কিন্তু সম্প্রতি আমাদের সরকার বাংলাদেশ ব্যাংককে অন্যভাবে ব্যবহার করেছে৷  সরকার যখন একটি ব্যাংকে একই পরিবারে দু'জন পরিচালক থাকার বিধান সংশোধন করে চারজন করে, তখন বাংলাদেশ ব্যাংক আপত্তি করেছিল৷ কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তি আমলে নেয়া হয়নি৷''

সরকার বনাম কেন্দ্রীয় ব্যাংক

আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান৷ সিদ্ধান্ত গ্রহণেও পুরোপুরি স্বাধীন৷ কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকে তার কোনো কতৃত্ব নেই৷ এটা দেখে অর্থ মন্ত্রনালয়৷ আর বড় বড় ঋণ কেলেঙ্কারি হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকে৷ বেসরকারি ব্যাংকেও কি বাংলাদেশ ব্যাংক তার স্বাধীন সিদ্ধান্ত কাজে লাগাতে পারে? ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘‘বাংলাদেশের আর্থিক খাতে এখন দ্বৈত শাসন চলছে৷ ব্যক্তি খাতের ব্যাংকগুলো দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক৷ আর রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংকগুলো দেখছে অর্থমন্ত্রণালয়৷ আমি মনে করি, এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংককে আরো স্বাধীনতা দেয়া প্রয়োজন৷ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, শক্তিশালী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদাহরণ হতে পারে৷

আর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘‘আইনত কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নাই৷ আগে দু-একটি ব্যাপারে কো-অর্ডিনেশনের বিষয় ছিল৷ কিন্তু ২০০৪ সালে আইন সংশোধন করে বলা হয় কোনো ব্যাপরেই বাংলাদেশ ব্যাংকের সরকারের সঙ্গে আলোচনার দরকার নেই৷ কিন্তু বাস্তবে সরকারই বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷''

দক্ষতা আর পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন

ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘‘তবে এখানে একটা প্রশ্ন উঠতে পারে৷ বাংলাদেশ ব্যাংকের যে জনবল, দক্ষতা এবং পেশাদারিত্বের অভাব, সেখানে এই স্বাধীনতা দিলে তারা তা ব্যবহার করতে পারবে কিনা৷ এটা নিয়ে সন্দেহ আছে৷ আমার কাছে মনে হয় বাংলাদেশ ব্যাংকে পেশাদারিত্ব এবং দক্ষতার অভাব আছে৷  এই দিকগুলোতে নজর দেয়া প্রয়োজন৷ দক্ষতা আর পেশাদরিত্বের উন্নয়ন না ঘটিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে স্বাধীনতা দিলে তা কাগজে কলমেই থেকে যেতে পারে৷ আর বাংলাদেশ ব্যাংককে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে৷ অতীতে আমরা দেখেছি সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক এবং গোষ্ঠীগত প্রভাব কাজ করেছে, যা অর্থনীতিতে নেতিবিাচক প্রভাব ফেলছে৷''

খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ মনে করেন, ‘‘দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের কোনো বিকল্প নেই৷ তবে আগে প্রয়োজন বাংলাদেশ ব্যাংককে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়া৷''

প্রতিবেদনটি সম্পর্কে আপনার মতামত জানান, লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য