1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তপ্ত লাদাখ, রেড অ্যালার্ট সিকিম সীমান্তে

২ সেপ্টেম্বর ২০২০

ভারত-চীন সংঘাত আরও উত্তপ্ত। ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি।

https://p.dw.com/p/3htN2
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/S. Hameed

সাত দিনে পর পর দুইবার। মুখোমুখি সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হলো ভারত এবং চীনের সৈন্যের। প্রথম দিন সামান্য সংঘাত হলেও দ্বিতীয় দিন তারা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েনি বলেই খবর। তবে লাদাখে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে আছে যে, যে কোনও সময় ফের সংঘাতের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অন্য দিকে, ভারত-চীন সীমান্তবর্তী প্রতিটি অঞ্চলে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রক। পাঠানো হয়েছে অতিরিক্ত সেনা। গোয়েন্দা সূত্র জানাচ্ছে, পূর্ব লাদাখে প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে ভারতীয় সেনাকে ব্যস্ত রেখে উত্তর পূর্ব ভারতের চীন সীমান্তে বড়সড় আক্রমণ চালাতে পারে চীন।

২৯ অগাস্ট রাত থেকে ৩০ অগাস্ট ভোর পর্যন্ত প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে সংঘাত হয়েছিল ভারত এবং চীনের সেনার। ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রক জানিয়েছে ৩১ অগাস্টও একই ঘটনা ঘটেছে। তবে এ বারে হাতাহাতি হয়নি। ৩১ অগাস্ট ভারতীয় সেনাকে প্যাংগংয়ের দক্ষিণ প্রান্তে ঘিরে ধরেছিল চীনের সেনা। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পরে হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হলেও কম্যান্ডারদের নির্দেশে দুই পক্ষই সরে যায়।

ভারতের দাবি, চীন অন্যায্য ভাবে দক্ষিণ প্যাংগং এলাকায় ভারতীয় এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করছে। কিন্তু দিল্লিতে চীনের দূতাবাস অত্যন্ত কড়া ভাষায় যে বিবৃতি জারি করেছে, তাতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনা চীনের এলাকা দখল করে বসে আছে। যা ভারত এবং চীনের সীমান্ত চুক্তির বিরোধী। অবিলম্বে ভারতীয় সেনাকে ওই এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার দাবি করেছে চীন।

‘ভারতের জমিতে কাঠামো তৈরি করেছে চীন’

নতুন সংঘাতের উৎস একটি পাহাড়কে কেন্দ্র করে। প্যাংগংয়ের দক্ষিণ প্রান্তে একটি পাহাড়ের দখল নিয়েছে ভারতীয় সেনা। স্ট্র্যাটেজিক দিক থেকে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় সেনা ওই পাহাড়ের দখল নেওয়ার পর থেকেই চীনের সেনা বার বার সেখান থেকে ভারতীয় সেনাকে সরানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু উচ্চতার সুযোগ নিচ্ছে ভারতীয় সেনা। এ নিয়েই আপাতত বিতর্ক চলছে। বস্তুত, ৩১ অগাস্ট চীনের সেনা যখন ভারতীয় সেনাকে ঘিরে ফেলে, অদূরেই চুসুল সেক্টরে কম্যান্ডার স্তরের বৈঠক চলছিল দুই দেশের সেনার। তারই মধ্যে নতুন সংঘাতের খবর পৌঁছায়। কম্যান্ডাররা সেনাদের সরে যাওয়ার কথা বলেন। ফলে বড়সড় সংঘর্ষ হয়নি।

কেন দক্ষিণ প্যাংগং

প্যাংগংয়ের দক্ষিণ প্রান্ত এতদিন বিতর্কে ছিল না। প্যাংগংয়ের উত্তর প্রান্তের আটটি ফিঙ্গার পয়েন্ট নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিতর্ক ছিল। ভারতীয় এনএসএ অজিত ডোভালের সঙ্গে গোয়েন্দা এবং রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্স উইংয়ের প্রধানের সাম্প্রতিক বৈঠকে এনএসএ কে জানানো হয়েছে, উত্তর পূর্ব ভারতে চীন সীমান্তে প্রভূত পরিমাণ সৈন্য জমায়েত করেছে পিপলস লিবারেশন আর্মি। মনে করা হচ্ছে, অরুণাচল এবং সিকিম সীমান্তে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন। লাদাখ সীমান্তে সেনাকে ব্যস্ত রাখার জন্যই কার্যত অনালোচিত একটি জায়গায় বার বার সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে।

৩১ অগাস্ট ডোভালের বৈঠকের পরেই সিকিম, উত্তরাখণ্ড এবং অরুণাচল সীমান্তে সেনা বাড়ানো হয়েছে। জারি হয়েছে হাই অ্যালার্ট। শুধু তাই নয়, গুরুত্বপূর্ণ অফিসারদের ওই সব অঞ্চলে পাঠানো হচ্ছে।

দ্বিতীয় তত্ত্ব

তবে অন্য সূত্র বলছে, লাদাখ সীমান্তেও আগের চেয়ে সেনার সংখ্যা অনেকটাই বাড়িয়েছে চীন। মাঝে সেনা খানিকটা পিছিয়ে নিলেও ২৯ অগাস্টের ঘটনার পরে প্রকৃত সীমান্তরেখার খুব কাছে মর্টার, ট্যাঙ্ক নিয়ে এসেছে চীন। ভারতও সেনার সংখ্যা বাড়িয়েছে লাদাখে।

তবে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, নেপালের ওলি সরকারকেও সঙ্গে রাখছে চীন। তাই উত্তরাখণ্ডেরকালাপানি অঞ্চলে বিশেষ সতর্কতা জারি হয়েছে। এই অঞ্চলকেই সম্প্রতি নিজেদের মানচিত্রে দেখিয়েছে নেপাল। কালাপানি অঞ্চলে ভারত, চীন এবং নেপালের ত্রিমুখী সীমান্ত আছে। অন্য দিকে সিকিমে ভারত, চীন এবং তিব্বতের সীমান্তেও অতিরিক্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

এসজি/জিএইচ (এএনআই)