উপজেলা নির্বাচনে গরম হাওয়া
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
এ পর্যন্ত চার ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন৷ প্রথম ধাপের নির্বাচনের বাকি আর মাত্র চার দিন৷ ১৯শে ফেব্রুয়ারি পথম পর্বে ৯৭টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ এরপর নির্বাচনের মধ্যেই থাকবে দেশ৷ ২৭শে ফেব্রুয়ারি ১১৭টি, ১৫ই মার্চ ৮৩টি এবং ২৩শে মার্চ ৯২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন৷ এই চারটি ধাপে মোট ৪৮৭টি উপজেলা পরিষদের মধ্যে ৩৮৯টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ বাকি ৯৮টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিলও ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন৷ তবে মেয়াদ শেষ হওয়া সাপেক্ষে ৯৮টির নির্বাচনে কমপক্ষে দুটি ধাপ লাগবে বলে জানা গেছে৷ প্রথম দিকে নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত না নিলেও বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে এসে যাওয়ায় নির্বাচনের গুরুত্ব গেছে বেড়ে৷ তাই শেষ পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন বা ইসি৷
এই নির্বাচনে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অংশ নেয়ায় জাতীয় নির্বাচনের আমেজ চলে এসেছে৷ এ নিয়ে চলছে নানা বিতর্কও৷ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, বিএনপির আন্দোলন স্তিমিত করতেই উপজেলা নির্বাচনের তফসিল দেয়া হয়েছে৷ তবে এই নির্বাচনকে বিএনপি দলীয়ভাবেই নিয়েছে৷ তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের নির্বাচন হলেও তারা দলীয়ভাবে প্রার্থী দিয়েছে৷
ওদিকে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু ডয়চে ভেলেকে বলেন, তাঁরা আন্দোলনের অংশ হিসেবেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে নিয়েছেন৷ এতে আন্দোলন স্তিমিত হবে না৷ এই নির্বাচন স্থানীয় পর্যায়ের হলেও জাতীয় ইস্যুকে কেন্দ্র করেই ভোটাররা ভোট দেবেন বলে মনে করেন তিনি৷
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়া ঠিক হয়নি৷ তবুও এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের মুখোশ খুলে যাবে, বলেন তিনি৷ কারণ বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ায় সরকার এরই মধ্যে বেসামাল হয়ে উঠেছে৷
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মনে করে, ৫ই জানুযারির সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি যে ভুল করেছে তা প্রমাণ হয়ে গেছে৷ তারা তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এখন উপজেলা নির্বাচনে কোমর বেঁধে নেমেছে৷ আওয়ামী লীগ নেতা এবং খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনের পথে ফিরে এসেছে৷ তারা বুঝতে পেরেছে আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে, তাই নির্বাচন ছাড়া পথ নেই৷ তারা যদি এভাবে সুস্থ রাজনীতিতে ফিরে আসে তাহলে সরকার তাদের সহযোগিতা করবে৷ তবে তিনি মনে করেন, বিএনপি-জামায়াত যে কোনো সময় আবারো সহিংস হয়ে উঠতে পারে৷
উপজেলা নির্বাচনকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এখন সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে৷ উভয় দলই চাইছে একক প্রার্থী দিতে৷ কিন্তু অনেক জায়গাতেই তারা বিদ্রোহী প্রার্থীদের বাগে আনতে পারছে না৷ তাই বিদ্রোহী প্রার্থীদের দল থেকে বহিষ্কার করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে৷