1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কী করবে বিএনপি?

১৯ জানুয়ারি ২০১৯

জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হতে না হতেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে বাংলাদেশে৷ এ নিয়ে আওয়ামী শিবির তৎপর হয়ে উঠলেও, বিএনপিতে নিস্তব্ধ নিরবতা৷ জামায়াতও নীরব৷ তাহলে কী করবে তারা উপজেলা নির্বাচনে?

https://p.dw.com/p/3Bpd1
Bangladesch Wahlen Wahlkampf 2018 Nationalisten BNP
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে বিএনপির ভেতর এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার এক ধরনের কথা আছে৷ তারা মনে করে, বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়৷তবে বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি যে আর কোনো নির্বাচনে যাবে না, তা তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেনি বা প্রকাশ্যে বলেনি৷ তাই আলোচনা থেকেই যাচ্ছে এই নিয়ে যে বিএনপি শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেবে?

এবারই প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হচ্ছে৷ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও সংসদ নির্বাচনের পর ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়৷ দেশে মোট উপজেলা ৪৬০টি৷ সে সময় ছয় ধাপে হয়েছিল এই নির্বাচন৷ নির্বাচনে অধিকাংশ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়ী হলেও বিএনপির প্রার্থীরা প্রায় ১শ'রও বেশি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়৷ জামায়াতেরও ৩৪ জন চেয়ারম্যান পদে নির্বচিত হয়েছিলেন৷ ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছিলেন ১০৫ জন৷ নির্বাচন দলীয় প্রতীকে না হলেও দলীয়ভাবে প্রার্থী দেয়া হয়৷

তমিজ উদ্দিন আহমেদ

নির্বাচন কশিমন এরইমধ্যে উপজেলা নির্বাচনের কাজ শুরু করেছে৷ তাদের কথা অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে৷ তবে এবার নির্বাচন হবে পাঁচ ধাপে৷

এ দিকে দেশের কয়েকটি উপজেলা পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে যে বিএনপি থেকে যাঁরা আগে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরা কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন৷ কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত নেতিবাচক হলে তাঁদের বড় একটি অংশ স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে পারেন৷ তাঁদের যুক্তি হলো, ‘‘২০১৪ সালে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয়নি৷ আমরা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেছি৷ তাই এবারো প্রয়োজনে স্বতন্ত্র নির্বাচনই করবো৷''

জয়নাল আবদিন

২০১৪ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচিত ধামরাই উপজেলার চেয়ারম্যান তমিজ উদ্দিন আহমেদ অবশ্য ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি আর উপজেলা নির্বাচন করবো না৷ দেশের যা অবস্থা, তাতে এখান থেকে আমরা আগ্রহী প্রার্থীও পাচ্ছি না৷ দল যদি নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন হয়ত কেউ প্রার্থী হবেন৷ এখন কেউ আগ্রহ দেখাচ্ছেন না৷ তবে আমি নির্বাচন করবো না এটা চূড়ান্ত৷ আর রাজনৈতিক অবস্থা এ রকম থাকলে আমি রাজনীতিই ছেড়ে দেবো৷''

২০১৪ সালে জামায়াতের সমর্থনে জৈন্তাপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জয়নাল আবদিন৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি জামায়াত সমর্থক সত্য৷ কিন্তু আমাকে তো প্রগতিশীল ভোটাররাও ভোট দিয়েছেন৷ জামায়াত যদি উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তা আমার ওপর চাপিয়ে দিতে পারবে না৷ কারণ আমি জামায়াতের কোনো পদে নেই৷ আমি এবারো স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি৷ আমি সেভাবেই নির্বাচন করবো৷''

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

জামায়াতের যেহেতু নিবন্ধন ও প্রতীক নেই, তাই এবার জামায়াতের প্রার্থীরা বিএনপির সাথে জোট না করে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন৷ সঙ্গে সঙ্গে শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্ত কী হয়, সেটার জন্যও অপেক্ষা করছেন তাঁরা৷

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে কি করবে না – এ ব্যাপারে এখানো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি৷ তবে সংসদ নির্বাচনে যা হয়েছে, তাতে তো আর নির্বাচনের কথা চিন্তা করা যায় না৷ একটি অনির্বাচিত সরকার, অনির্বাচিত সংসদ৷ নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থা নেই৷''

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবো না – এমন কোনো সিদ্ধান্ত এখনো নেইনি৷ তবে আমরা মনে করি, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই আর গ্রহণযোগ্য হবে না৷ তাই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ তেমন নেই৷''

জানা গেছে, বিএনপি থেকে যাঁরা প্রার্থী হতে চান তাঁরা কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করছেন৷ এলাকায় কোনো তৎপরতা না চালালেও কেন্দ্রের সাথে কথা বলছেন৷ কেন্দ্র থেকে অবশ্য তাঁদের ‘হ্যাঁ' বা ‘না' কিছুই বলা হচ্ছে না৷ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির দু'টি বৈঠক হয়েছে৷ তাতে নির্বাচনের সার্বিক দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ উপজেলা নির্বাচন নিয়েও কথা হয়েছে৷ কিন্তু সকলেই একতমত যে শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে না৷ নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়৷ সংসদ নির্বাচন দিয়েই তা আরেকবার প্রমাণ হলো৷ এই নির্বাচন দেশে-বিদেশে কোথাও গ্রহণযোগ্য হয়নি৷''

শামসুজ্জামান দুদু

তাঁর কথায়, ‘‘আমরা এর আগে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে অংশ নিয়েছি৷ উপজেলা নির্বাচনের এখনো তফসিল ঘোষণা হয়নি৷ তফসিল হওয়ার পর নির্বাহী কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নেবে৷ আমরা এ নিয়ে সারাদেশে কোনো ধরনের নির্দেশনা এখানো দেইনি৷''

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ১৯৮৫ সালে প্রথম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ এরপর ১৯৯০, ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হয়৷ স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় উপজেলা পরিষদই হলো সর্বোচ্চ নির্বাচিত পরিষদ৷

আপনার কী মনে হয় বন্ধু? বিএনপি কি আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে? লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য