একটু পানির জন্য
মরক্কোতে সাহারা মরুভূমির কাছে প্রত্যন্ত ১৩টি গ্রামের মানুষের পানির চাহিদা মেটাতে অভিনব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ জার্মানির এক ফাউন্ডেশন এতে সহায়তা করছে৷
প্রত্যন্ত এলাকা
মরক্কোতে সাহারা মরুভূমির কাছে অবস্থিত ১৩টি গ্রামে প্রায় ৪০০ মানুষের বাস৷ গ্রামগুলো এতই প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত যে, সেখানকার বাসিন্দাদের পানির জন্য অনেক দূরে যেতে হয়৷ প্রতিদিন এই কাজে গড়ে অন্তত তিন ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়৷ সাধারণত নারীরাই এই কাজটি করে থাকেন৷ তবে একটি প্রকল্প তাঁদের কষ্ট লাঘবের স্বপ্ন দেখাচ্ছে৷
সমাধান কুয়াশা
এলাকাটি বছরের প্রায় ছ’মাস ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে৷ সেই কুয়াশাকে কাজে লাগিয়েই গ্রামবাসীদের জন্য পানির ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷
কুয়াশা ধরতে জাল
পাহাড়ের উঁচুতে স্থাপিত বিশেষ জালে কুয়াশা আটকে পানি হয়ে ঝরবে৷ পানি ধরার জন্য থাকবে বড় বড় পাত্র৷ এরপর পাইপের মাধ্যমে তা পাহাড়ের নীচে অবস্থিত গ্রামগুলোতে সরবরাহ করা হবে৷ ঘন কুয়াশার সময় এক বর্গমিটার জাল থেকে দিনে প্রায় ২২ লিটার পানি পাওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছে প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা৷ ভিডিও দেখতে ‘+’ চিহ্নে ক্লিক করুন৷
জার্মান সহায়তা
যে প্রযুক্তিতে কুয়াশা থেকে পানি সংগ্রহ করা হবে তার নাম ‘ক্লাউডফিশার’৷ জার্মানির ভাসাস্টিফটুং ফাউন্ডেশনের প্রকৌশলী পেটার ট্রাউটভাইন এটি উদ্ভাবন করেছেন৷ মরক্কোর বেসরকারি সংস্থা ‘দার সি হামদ’ ঐ ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ইতিমধ্যে প্রকল্পের পরীক্ষামূলক কাজ শেষ করেছে৷ ফলে কিছু গ্রামের বাসিন্দারা এখনই তাদের ঘরে পানি পাচ্ছেন৷ কয়েকদিনের মধ্যে সবার জন্য পানির ব্যবস্থা করতে আরও জাল স্থাপনের কাজ শুরু হবে৷
শিক্ষিত হচ্ছেন নারী
যে গ্রামগুলোতে ইতিমধ্যে পানি পাওয়া যাচ্ছে সেখানকার নারীদের প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা সময় বেঁচে যাওয়ায় এখন তাঁরা লেখাপড়া শেখা থেকে শুরু করে অন্যান্য অর্থনৈতিক কাজে জড়িত হতে পারছেন৷ প্রকল্পের আওতায় তাঁদের শিক্ষিত করে তোলা হচ্ছে৷
কাজের স্বীকৃতি
প্রকল্পটিকে সম্প্রতি জাতিসংঘের ক্লাইমেট চেঞ্জ পুরস্কার দেয়া হয়েছে৷ কুয়াশা থেকে পানি সংগ্রহের এটিই সবচেয়ে বড় প্রকল্প বলে ধারণা করা হয়৷ জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংস্থা ইউএনএফসিসির মুখপাত্র নিক নাটাল বলেন, ‘‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় এ ধরনের অভিনব পরিকল্পনা সত্যিই এক দারুণ ব্যাপার৷’’