এন্ড্রু কিশোরের জীবনাবসান
৬ জুলাই ২০২০জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর মারা গেছেন। নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ব্লাড ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন তিনি৷
চিকিৎসা শেষে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ১১ জুন তার দেশে ফেরার কথা ছিল৷ কিন্তু ১০ জুন এক পরীক্ষায় তার শরীরে আবারও লিম্ফোমার অস্তিত্ব মেলে।
চিকিৎসকরা জানান, শিল্পীর রোগমুক্তির সম্ভাবনা প্রায় শেষ৷ ১১ জুন দেশে ফিরে পরদিন রাজশাহী নগরীর মহিষবাতান এলাকায় বোন শিখা বিশ্বাসের ক্লিনিকে ভর্তি হন তিনি৷ সেখানে ভগ্নিপতি ও চিকিৎসক প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে ছিলেন এন্ড্রু কিশোর।
রোববার বিকালে এন্ড্রু কিশোরের শারীরিক অবস্থা খুব সঙ্কটাপন্ন হয়। এন্ড্রু কিশোর আর কথা বলতে পারছিলেন না।
রোববার রাতে স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু স্বামীর ফেসবুকে লেখেন, “এখন কিশোর কোনো কথা বলে না। চুপচাপ চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকে। আমি বলি কী ভাব, বলে, ‘কিছু না, পুরনো কথা মনে পড়ে আর ঈশ্বরকে বলি আমাকে তাড়াতাড়ি নিয়ে যাও, বেশি কষ্ট দিয়ো না’।”
লিপিকা আরো লেখেন, “ক্যানসারের লাস্ট স্টেজ খুব যন্ত্রণাদায়ক ও কষ্টের হয়। এন্ড্রু কিশোরের জন্য সবাই প্রাণ খুলে দোয়া করবেন, যেন কম কষ্ট পায় এবং একটু শান্তিতে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে যেতে পারে।”
সোমবার প্যাট্রিক বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, দুপুরে এন্ড্রু কিশোরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বাংলা চলচ্চিত্রে ১৫ হাজারেরও বেশি গান গাওয়া শিল্পী উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘আমার বুকের মধ্যে খানে’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘পদ্মপাতার পানি’,সবাই তো ভালোবাসা চায়’’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা’, ‘পড়ে না চোখের পলক’,‘ওগো বিদেশিনী’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘আমি চিরকাল প্রেমের কাঙাল’ প্রভৃতি।
এন্ড্রু কিশোরের বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। তিনি স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু ও দুই সন্তান রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এডিকে/এসিবি