1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কচুরিপানাকে সম্পদে পরিণত করছেন তাঁরা

২৪ জুলাই ২০১৮

পানিতে কচুরিপানা থাকলে পানির গুন নষ্ট হয়ে যায় – যা মাছেদের জন্য ভাল নয়৷ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় স্বাদু পানির হ্রদ ‘লেক ভিক্টোরিয়ায় কচুরিপানার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মাছেরা ছাড়াও বিপদে পড়েছেন লেক পাড়ের প্রায় তিন কোটি মানুষ৷

https://p.dw.com/p/31v4l
Turning the ominous hyacinth into manure
ছবি: DW

তবে আশার কথা, এই কচুরিপানাকে এখন সম্পদে পরিণত করছেন সেখানকার একদল কৃষক৷ চার্লস ওনিয়াঙ্গো নামের এক কৃষক বলছেন, ‘‘লেকে বেশি কচুরিপানা থাকলে জেলেদের সমস্যা হয়৷ কারণ তাঁরা মাছ ধরতে যেতে পারেন না৷ কিন্তু কচুরিপানা আমাদের জন্য আশীর্বাদ৷ কচুরিপানা সংগ্রহ করে আমরা জেলেদেরও উপকার করছি৷ কারণ যেখান থেকে আমরা কচুরিপানা নিই, সেখানে জেলেরা মাছ ধরতে যেতে পারেন৷''

চার্লস ওনিয়াঙ্গোসহ অন্য কৃষকরা স্বাদু পানির কচুরিপানা, মাটি ও ছাই দিয়ে কমপোস্ট তৈরি করেন৷ নয় সপ্তাহের মধ্যে কচুরিপানা উচ্চমানের সারে পরিণত হয়৷

ওনিয়াঙ্গো বলছেন, ‘‘ভালো ফলনের জন্য মাটিতে তিন ধরনের পুষ্টি থাকা চাই৷ এগুলো হলো, নাইট্রোজেন, পটাশিয়াম ও ফসফরাস৷ কচুরিপানায় এর সবগুলোই আছে৷ তাই আমরা লেক থেকে কচুরিপানা সংগ্রহ করে কমপোস্ট বানাই৷''

মাছ ধরা ছেড়ে পুরোপুরি কৃষক হয়ে গেছেন চার্লস ওনিয়াঙ্গো৷ পরিবেশকর্মী অ্যালেক্স ওমিনো চার্লস ও অন্য কৃষকদের কচুরিপানা থেকে সার তৈরি করা শিখিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘কচুরিপানার সার মাটির জন্য খুব উপকারী৷ কারণ এই সার মাটিতে থাকা ক্ষুদ্র জীবকে মারেনা৷ এগুলো সেই জীব, যারা মাটিকে পচিয়ে এবং মাটির মধ্যে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করে, মাটিকে সজীব রাখে৷ এমন মাটি শস্যের ভালোভাবে বেড়ে ওঠায় সহায়ক৷''

কচুরিপানা যখন পানির নীচে পচতে শুরু করে তখন বিষাক্ত গ্যাসের আবির্ভাব হয় এবং পানিতে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়৷ ফলে পানির গুণ নষ্ট হয়ে যায়, মাছ মারা যায়৷ মানুষের পান করার জন্যও তখন পানি অনিরাপদ হয়ে যায়৷

মার্গারেট ওডালা-ও কচুরিপানা থেকে সার তৈরির কথা শুনেছেন৷ এই সার ব্যবহার করে তিনি ফসল উৎপাদন দ্বিগুণ করতে পেরেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এই সার আমার জমির উর্বরতা বাড়িয়েছে৷ যখন শুরু করেছিলাম তখন ফসল এত স্বাস্থ্যবান হত না৷ কিন্তু এখন এই জৈব সার ব্যবহারের কারণে ফসল দেখতে সতেজ লাগে৷ ফলে আগে ফসল ফলিয়ে যত আয় করতাম এখন তাতে পরিবর্তন এসেছে৷''

কচুরিপানা দিয়ে সার তৈরি

ওডালার ক্রেতারা তাঁর জমিতে এসে সরাসরি শস্য কেনেন, কারণ তাঁরা জানেন সেগুলো একেবারে সতেজ৷ মার্গারেট ওডালা তাঁর জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করেননা৷ কচুরিপানা দিয়ে তৈরি সার শুধু অরগ্যানিকই নয়, এটি ব্যবহারের কারণে পানিও ভালো থাকে৷

 

পরিবেশকর্মী অ্যালেক্স ওমিনো বলেন, ‘‘রাসায়নিক সারের নেতিবাচক প্রভাব আছে৷ আপনি দেখবেন, যখন বৃষ্টি হয় না তখন গাছ শুকিয়ে যাওয়া শুরু করে৷ কিন্তু যখন জৈব সার ব্যবহার করা হয়, তখন বৃষ্টি হতে দেরি হলেও গাছগুলো ভালো থাকে৷''

এখন পর্যন্ত ৪৫ জন কৃষক কচুরিপানা সার ব্যবহার করছেন৷ অ্যালেক্স ওমিনো আশা করছেন, শিগগিরই এই অঞ্চলের এক হাজার কৃষকের সবাইকে তিনি এই সার ব্যবহারে আগ্রহী করে তুলতে পারবেন৷

ওয়াসেরা নগুনজিরি/জেডএইচ