করোনা: চীনে একদিনে ১০৮ জনের মৃত্যু
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চীনে মৃত্যু মিছিল অব্যাহত। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে এক হাজারেরও বেশি লোকের। চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে সোমবার শুধু হুবেই প্রদেশেই মৃত্যু হয়েছে ১০৩ জনের। আর হুবেইয়ের বাইরে মৃত্যু হয়েছে আরও পাঁচ জনের। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে এক দিনে এটাই এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মৃত্যু।
সোমবার বেজিংয়ের একটি হাসপাতালে রোগীদের দেখতে গিয়েছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। মুখে মাস্ক লাগিয়ে হাসপাতাল পরিদর্শনের পরে তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলেন। হাসপাতালেই তিনি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এখনও যথেষ্ট উদ্বেগজনক। তবে করোনার সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য চীন সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
করোনা ভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু। সোমবার সংস্থার তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, করোনা মহামারির চেহারা নিয়েছে। পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে চলে না যায়, তার জন্য সকলকে সচেতন থাকতে হবে।
রবিবার চীনের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়েছে। তবে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। কিন্তু রবিবার সেই চিত্রটাও বদলে গিয়েছে। একদিনে ১০০ জনেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার। চীনের এক সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেশি বলেই মনে করছেন সে দেশের সাধারণ মানুষ। হুবেই সহ একাধিক এলাকা গত এক মাস ধরে কার্যত অবরুদ্ধ। সাধারণ মানুষ বাড়ি থেকে বেরতেও ভয় পাচ্ছেন।
হু জানিয়েছে, চীনের বাইরে ২৪টি দেশে এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩১৯। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই জনের।
এ দিকে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চীনের অর্থনীতি ক্রমশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সম্প্রতি চীনের অর্থ দফতরের একটি রিপোর্ট বলছে, শেষ কোয়ার্টারে দেশের অর্থনীতি এক শতাংশ নীচে নেমেছে। মনে রাখা দরকার, এর আগে ২০০৩ সালে সার্স ভাইরাসের প্রকোপে এক অর্থবর্ষে চীনের অর্থনীতি ২ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের ধারণা এ ভাবে চলতে থাকলে আগামী অর্থবর্ষে চীনের জিডিপি ০ দশমিক ২ থেকে ১ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে।
চীনের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে আন্তর্জাতিক অর্থ ব্যবস্থাতেও। অ্যামেরিকা সহ বিশ্বের বহু গাড়ি এবং ইলেকট্রনিক সংস্থা চীন থেকে যন্ত্রাংশ আমদানি করে। গত দেড় মাসে তা কার্যত বন্ধ। টয়োটাও তাদের চীনের কারখানা বন্ধ রেখেছে৷ কোনও দেশ তাদের প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে না চীনে। চীনের প্রতিনিধিরাও বাইরে যাওয়ার ভিসা পাচ্ছেন না। বন্ধ রয়েছে আমদানি-রপ্তানিও। তার প্রভাব স্বাভাবিকভাবে চীনের ও বিশ্বের অর্থনীতির ওপর পড়বে৷
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এএফপি)