করোনা ভাইরাস: ইউরোপের কোথায় কেমন ‘লকডাউন’?
কোভিড-১৯ যেন ছড়াতে না পারে, সেজন্য ইউরোপের সর্বত্র জনজীবনের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে৷ কিন্তু সেই কড়াকড়িগুলো কেমন? চলুন দেখে নিই ছবিঘরে৷
ইটালি
ইটালিতে গত ৯ মার্চ সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়৷ এর ছয় কোটি জনগোষ্ঠীকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়৷ অন্যথায় চারশ’ থেকে তিন হাজার ইউরো পর্যন্ত জরিমানা গুণতে হবে৷ সুপারমার্কেট, ব্যাংক, ফার্মেসি ও পোস্ট অফিস ছাড়া বাকি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়৷ আপাাতত এই ঘোষণা ৩ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যকর থাকলেও তা ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে৷
স্পেন
গত ১৪ মার্চ সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে৷ দেশের চার কোটি ৬০ লাখ মানুষকে ঘরে থাকতে বলা হয়৷ ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এই অবস্থা কার্যকর থাকবে৷ হাজার হাজার পুলিশ ও সেনাবাহিনি মোতায়েন করা হয়েছে৷ স্পেনও তার ইউরোপীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে সীমান্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে৷
ফ্রান্স
ফ্রান্সে ১৭ মার্চ লকডাউন ঘোষণা করা হয়৷ চলবে ১ এপ্রিল পর্যন্ত৷ কিন্তু বাড়ানো হতে পারে৷ ঘর থেকে বেরোতে হলে একটি ফর্ম পূরণ করে কারণ ব্যাখ্যা করতে হয়৷ দিনে একবার শরীরচর্চা করতে এক ঘন্টার জন্য একা বের হওয়া যাবে৷ এছাড়া ঘরের এক কিলোমিটারের মধ্যে হেঁটে আসা যাবে৷ না মানলে ১৩৫ ইউরো থেকে ৩৭০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা৷
জার্মানি
ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো জার্মানি তার ৮ কোটি জনগণের জন্য অত কড়াকড়ি আরোপ করেনি৷ তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে নিয়ম করে দিয়েছে, যেমন, ঘরের বাইরে ভিন্ন পরিবারের দু’জনের বেশি একসঙ্গে থাকতে পারবেন না৷ ২০ এপ্রিল পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা না মানলে কোনো কোনো রাজ্য ২৫ হাজার ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে৷
যুক্তরাজ্য
২৩ মার্চ লকডাউনের ঘোষণা দেয় যুক্তরাজ্য৷ চলবে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত৷ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সংগ্রহ বা যাদের অফিসে যেতেই হবে তারা বাইরে যেতে পারেন৷ তবে কোনর কাগজ দেখাতে হবে না৷ বড় আকারের জমায়েত বন্ধ রয়েছে৷
অস্ট্রিয়া
অস্ট্রিয়াও কিছুটা শিথিল৷ ৯০ লাখ মানুষের দেশটিতে গত ১৬ তারিখ থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে, যা বলবৎ থাকবে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত৷ মানুষ জরুরি কাজে কিংবা শরীরচর্চা করতে ঘরের বাইরে যেতে পারবেন৷ তবে পাঁচ জনের বেশি একসঙ্গে থাকতে পারবেন না৷ অন্য দেশগুলোর মতো তারাও সব রেস্টুরেন্ট, বার এসব বন্ধ রেখেছে৷ কেউ নিষেধাজ্ঞা না মানলে ৩৬০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে৷
বেলজিয়াম
গত ১৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল অব্দি লকডাউন ঘোষণা করে বেলজিয়াম৷ তবে তা আট সপ্তাহ বা এর বেশিও হতে পারে৷ এক কোটি ১৪ লাখ মানুষের দেশটিও ডাক্তার দেখানো, জরুরি কাজ, কিংবা হালকা শরীরচর্চা ছাড়া জনগণকে ঘরেই থাকতে বলেছে৷ রাস্তায় পুলিশ টহল দিচ্ছে৷ তারা নিয়ম না মানলে যে কাউকে জরিমানা করতে পারে৷
পর্তুগাল
১৯৭৬ সালে গণতন্ত্র ফেরত পাবার পর এই প্রথম জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে পর্তুগাল৷ ২ এপ্রিল পর্যন্ত থাকবে তা৷ জরুরি অবস্থার আওতায় সরকার সেনা মোতায়েনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামসহ বেশিরভাগ বিষয়ই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে৷ লোকজনকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে৷ ব্যাংক, ফার্মেসি ও খাদ্যদ্রব্যের দোকান খোলা রয়েছে, তবে রেস্টুরেন্ট বন্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে৷