1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘করোনার হোম কোয়ারেন্টাইনে নেই নজরদারি’

১৫ মার্চ ২০২০

ইটালি ফেরত ১৪২ জনকে আশককোনা হজ ক্যাম্পে না রেখে বাড়ি পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ আইইডিসিআর-এর সাবেক পরিচালক ডা. মাহমুদুর রহমান মনে করেন তাদের বাড়ি পাঠাতে বাধ্য হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর৷

https://p.dw.com/p/3ZSvZ
ফাইল ছবিছবি: A. Goni

শনিবার ইটালি থিকে ফিরে আসা ১৪২ জনকে আশকোনো হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনের জন্য আনার পরও কেন বাড়িতে পাঠানো হল তা নিয়ে বিতর্ক চলছে সামাজিক মাধ্যমে৷ বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে থাকাদের ওপর নজরদারি না থাকা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন৷ ডা. মাহমুদুর রহমান মনে করেন এক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার সংকট রয়েছে৷ আশকোনো হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনের পরিবেশ ও প্রস্তুতি ছিলো না৷ এমনকি যাদের নেয়া হয়েছিলো তাদের পানি খাওয়ারও ব্যবস্থা ছিলো না৷ ফলে তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন৷ শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তাদের বাড়ি পাঠাতে একপ্রকার বাধ্যই হয়েছে বলে মনে করেন তিনি৷ তিনি আরো মনে করেন, ব্যবস্থাপনার এমন সংকট এবং প্রস্তুতিহীনতা পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে৷  

তবে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, ওই ১৪২ জনকে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে তাদের শারীরে করোনা আক্রান্ত হওয়ার কোনো উপসর্গ না পাওয়ায় বাড়ি পাঠানো হয়েছে৷ আগামী ১৪ দিন তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে৷ কারো করেনার উপসর্গ দেখা দিলেই তাদের যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে৷ 

ডা. এ এস এম আলমগীর

শনিবার ইটালি ফেরত ১৪২ জনকে বাড়ি পাঠানো হলেও পরে ইটালি এবং অন্যদেশ থেকে আসা আরো ২৭২ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে৷ ৪৮ জনকে রাখা হয়েছে গাজীপুরের একটি নার্সিং ট্রেনিং সেন্টারে, বাকিদের আশাকোনা হজ ক্যাম্পে৷ আইইডিসিআর জানিয়েছে, তাদেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা হচেছ৷ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কোনো লক্ষণ পাওয়া না গেলে তাদেরকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দেয়া হবে৷

আইইডিসিআর-প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর বলেন, ‘‘আমরা আসলে পরীক্ষা নিরীক্ষা বলতে তাপমাত্রা পরীক্ষা করি৷ আর তাদের আগের কেস হিস্ট্রি দেখি৷ ওই ১৪২ জনের মধ্যে কোনো লক্ষণ পাইনি৷ আশকোনায় এখন যারা আছেন তাদেরও আমরা পরীক্ষা করে পর্যায়ক্রমে ছেড়ে দিচ্ছি৷ গাজীপুরে যারা আছেন তাদেরও পরীক্ষা হচ্ছে৷ যাদের কোনো লক্ষণ পাওয়া না যাবে তাদের ছেড়ে দিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে৷’’ 

আইইডিসিআর জানায় করোনায় আক্রান্ত পাঁচ জনের মধ্যে তিনজন সুস্থ হয়েছেন৷ দুইজন চিকিৎসা নিচ্ছেন৷ এছাড়া চারজন নিবিড় কোয়ারেন্টাইনে এবং ১০ জন আছেন আইসোলেশনে৷ সারাদেশে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন দুই হাজার হাজার ৩১৪ জন৷

ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘‘যাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে তারা আদৌ থাকেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়৷ তারা যদি নিয়ম না মানেন তাহলেতো আর হলো না৷ এজন্য তাদের মনিটরিং-এর আওতায় রাখতে হবে৷ তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরিস্থিতি জানতে হবে৷ এজন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা নিতে হবে৷ আর যারা কোয়ারেন্টাইনে আছেন তাদের বিষয়টি বোঝাতে হবে৷’’ 

প্রিভেন্টিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘‘আসলে এখন ব্যাপক অব্যবস্থাপনা চলছে৷ ওই ১৪২ জনকে কোনোভাবেই বাড়িতে যেতে দেয়া ঠিক হয়নি৷ তাদের নিবিড় কোয়ারেন্টাইনেই রাখা উচিত ছিলো৷ আইন প্রয়োগে এখানে শিথিলতা দেখানো হয়েছে৷ এটা হলে পরিস্থিতি খারাপ হবে৷’’  

ডা. মাহমুদুর রহমান

তিনি বলেন, ‘‘৮ মার্চ যাদের করোনা রোগী হিসেবে প্রথম শনাক্ত করা হলো তারা কিন্তু নিজেরা রিপোর্ট করেছে৷ এর আগে আসলে কোয়ারেন্টাইন বিষয়টি আমলেই নেয়া হয়নি৷’’ 

তিনি জানান, ‘‘এখন যাদের সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনে বাড়ি পাঠানো হয়েছে, আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি তাদের ওপর নজরদারি নেই৷ এমনকি স্বাস্থ্যকর্মীরাও তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে যান না ভয়ে৷’’

তবে ডা. এ এস এম আলমগীর বলছেন, ‘‘যাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হচ্ছে তাদের কার্ড দিয়ে দেয়া হচ্ছে৷ তাদের সব ধরনের তথ্য রাখা হচ্ছে৷ যোগাযোগের নাম্বার দিয়ে তাদেরকে কী করতে হবে তাও বলে দেয়া হচ্ছে৷ আমরা হোম কোয়ান্টোইনে যাদের পাঠাই তাদের কাউন্সেলিং করি৷ আর সারাদেশে আমাদের যে স্বাস্থ্যকর্মীরা আছেন তাদের মাধ্যমে মনিটর করি৷’’

তবে এখনো বিদেশ থেকে আসা অনেকে কোনো ধরনের কোয়ারেন্টাইনেই যাননি৷ এদিকে আইইডিসিআর জানিয়েছে, শনিবার প্রতিষ্ঠানটির কাছে সরাসরি ৬৩ জন এসেছেন করোনা পরীক্ষা করাতে৷ ব্রিফিং-এ পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সরাসরি আইইডিসিআরে না আসার জন্য অনুরোধ করেছেন৷  কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে আইইডিসিআরে আসার পথে তাদের মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে৷ তাই হটলাইনে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে৷’’ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের টিম বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা করবে৷ আইইডিসিআরে আনার প্রয়োজন হলে তারাই নিয়ে আসবে৷’’ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান