কেরালায় পদপিষ্ট হয়ে নিহত ১০৫ তীর্থযাত্রী
১৫ জানুয়ারি ২০১১গতরাত্রে কেরালার ইড়ুক্কি জেলায় জঙ্গলে ঘেরা পাহাড়ি তীর্থভূমি সবরিমালায় শ্রীআয়াপ্পা মন্দিরে বাৎসরিক মকরজ্যোতি দর্শনশেষে ফেরার পথে এক দুর্ঘটনায় পদপিষ্ট হয়ে মারা যায় এপর্যন্ত ১০৫ জন তীর্থযাত্রি৷ আহত ১০০ জনেরও বেশি৷ মকরসংক্রান্তি উপলক্ষে সংক্রামা পূজা শেষে এই দিব্য জ্যোতির উদয় হয়৷ সেটা দেখতে প্রতিবছর এত ভিড় হয়৷ মৃত তীর্থযাত্রীদের বেশিরভাগ তামিলনাড়ুর৷
কেরালার মুখ্যমন্ত্রী ভি.এস অচ্যুদানন্দন এই দুর্ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দেন৷ মৃতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবার কথা ঘোষণা করেন৷ মৃতদেহগুলি আনার ও পৌঁছোবার যাবতীয় খরচ বহন করবে সরকার৷ দ্রুত ত্রাণ ও উদ্ধার কাজের ব্যবস্থা করতে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী৷ শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ.কে অ্যান্টনি সেনা সাহায্য পাঠাচ্ছেন৷ নৌবাহিনীর মেডিক্যাল টিম দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁচেছে৷ জাতীয় বিপর্যয় ত্রাণ বাহিনীও পৌঁছে গেছে৷
দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে নানা মত রয়েছে৷ তবে বেশিরভাগ প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, একটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি অটো রিক্সাকে ধাক্কা মেরে পথের ধারের তীর্থযাত্রীদের একটি বিশ্রামশিবিরে ঢুকে পড়ে৷ রাতের অন্ধকারে কিছু বুঝে ওঠার আগে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, কাছের পেরিয়ার সংরক্ষিত অরণ্য থেকে হাতির পাল ও বাঘ ঢুকেছে৷ আতঙ্কিত তীর্থযাত্রীরা দিগবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পালাতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কিতে পদপিষ্ট হয়ে মারা যায়৷ স্থানীয় স্বেচছাসেবকদের মতে এবার দুলাখেরও বেশি তীর্থযাত্রীর সমাগম হয়, যা ভাবা যায়নি৷ সেই তুলনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল নগণ্য৷ একে পাহাড়ি দুর্গম পথ তার উপর অন্ধকার৷ জনৈক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বিদ্যুতের ব্যবস্থাও ছিল না৷ ছিল না জল, চিকিৎসা সুবিধা৷ হাসপাতাল বহুদূরে৷ অ্যাম্বুলেন্স গেছে অনেক দেরিতে৷ রাজ্যসরকারের গাফিলতিই এত লোকের মৃত্যুর কারণ৷ কেরালার অর্থমন্ত্রী সাফাই দিয়ে বলেন, প্রকৃত কারণ জানা যাবে বিচারবিভাগীয় তদন্ত শেষে৷
উল্লেখ্য, সবরিমালায় অনুরূপ দুর্ঘটনা ঘটেছিল ১৯৯৯ সালে৷ সেবার মারা গিয়েছিল ৫০ জন৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়