1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্রসফায়ারে দেয় এমপি, না পুলিশ?

১৯ জুলাই ২০১৭

এক দৈনিকের খবর অনুযায়ী, এক এমপি বলেছেন, ‘‘পাঁচজনকে ক্রসফায়ার দিয়েছি, ১৪ জনের লিস্ট করেছি৷'' তবে ডয়চে ভেলের কাছে তাঁর দাবি, ‘‘ক্রসফয়ারে দিয়েছে পুলিশ৷ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো হয়েছে, অপারেশন ক্লিনহার্টও ভালো ফল দিয়েছে৷''

https://p.dw.com/p/2gmqe
Rapid Action Battalion RAB Spezialeinheit Militär Dhaka Bangladesh
ছবি: Getty Images/AFP

বাংলাদেশের ট্যাবলয়েড দৈনিক ‘মানবজমিনকে' এক সাক্ষাৎকারে সাভারের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান বলেছিলেন, ‘‘সাভারে অনেক ক্যাডার আর মাস্তান ছিল৷ এখন সব পানি হয়ে গেছে৷ কারও ‘টু' শব্দ করার সাহস নেই৷ পাঁচজনকে ক্রসফায়ারে দিয়েছি, আরো ১৪ জনের লিস্ট করেছি৷ এখন সব ঠান্ডা৷ লিস্ট করার পর যে দু'একজন ছিল তারা আমার পা ধরে বলেছে, আমাকে জানে মাইরেন না৷ আমরা ভালো হয়ে যাবো৷''

কিন্তু ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকে ডা. এনামুরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি ঠিক ওভাবে বলিনি৷ ওরা ঘুরিয়ে লিখেছে৷ আমি বলেছি, পুলিশ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে৷ আরো ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তালিকা হচ্ছে৷ এ সব কারণে সাভারের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো হয়েছে৷''

ডা. এনামুর রহমান

এই ব্যবস্থার মানে কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ক্রসফায়ার? আমি তো ক্রসফায়ার দেই না৷ এটা দেয় পুলিশ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী৷ তাদের ওপর হামলা হয়, তারাও জবাব দেয়৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘অপারেশন ক্লিনহার্ট এবং এখন যে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে (ক্রসফায়ার) তাতে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে৷ মানুষ ভালো আছে৷''

সাভারে ক্রসফায়ারের জন্য ১৪ জনের তালিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসী এবং মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা হয়েছে৷ যাদের বিরুদ্ধে আটটির বেশি মামলা আছে, তারাই এই তালিকায় আছে৷''

তাহলে তাদেরও কি ক্রসফায়ারে দেয়া হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে৷''

কাজী সোহাগ

তাঁর কথায়, ‘‘ওই পাঁচজনকে গত চার বছরে ক্রসফায়ারে দেয়া হয়েছে৷ তারা সন্ত্রাসী এবং বহু মামলার আসমি৷''

দু-একজন আপনার হাত-পা ধরে ক্রসফায়ার থেকে নাকি রেহাইও পেয়েছে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এমন কথা আমি কোথাও বলিনি৷ এটা ডাহা মিথ্যা কথা৷''

এদিকে মানবজমিনে প্রকাশিত প্রতিবদেনের প্রদিবেদক কাজী সোহাগ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এমপি ডা. এনামুর রহমান আমাকে যা বলেছেন, তাই উদ্ধৃত করা হয়েছে৷ তাঁর কথার রেকর্ডিং আমার কাছে আছে৷ তাঁর অনুমতি নিয়েই তাঁর সাক্ষাৎকার রেকর্ড করা হয়৷ গোপনে ধারণ করা হয়নি৷''

কাজী সোহাগ বলেন, ‘‘আমি ক্রসফায়ার নিয়ে কোনো প্রশ্ন তাঁকে করিনি৷ তিনি নিজেই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে পাঁচজনকে ক্রসফায়ারে দেয়ার কথা বলেছেন৷ বলেছেন ১৪ জনের তালিকা করার কথাও৷ তাঁর কথা হুবহু উদ্ধৃত করা হয়েছে আমাদের পত্রিকায়৷''

সংসদ সদস্য এনামুর রহমান এখনো (বুধবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত) কোনো প্রতিবাদ পাঠনননি বলে জানান কাজী সোহাগ৷

তৌহিদ জং মুরাদ

রানা প্লাজা ধসের পর ডা. এনামুর রহমান সাভারে তাঁর নিজম্ব ক্লিনিক এনাম মেডিক্যালে আহতদের চিকিৎসা দিয়ে আলোচনায় আসেন এবং প্রশংসিত হন৷ এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হন তিনি৷ এর আগে সাভারের সংসদ সদস্য ছিলেন আওয়ামী লীগেরই তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ৷

ডা. এনামুরের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে সাভারের সরকার দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা কোনো সুস্থ মানুষের কথা না৷ কোনো সুস্থ মানুষ এটা বলতে পারেন না৷ এটা তো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এখতিয়ার৷ জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের কাজ হলো জনগণের নিরাপত্তা দেয়া৷''

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কি তালিকা করে ক্রসফায়ারে দেয়? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আই ডোন্ট থিংক সো৷''

বন্ধু, আপনার কী মনে হয়? ক্রসফায়ারে দেয় এমপি, না পুলিশ? জানান নীচে, মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য