1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খোকনের ভাগ্য শনিবার যাচাই

২৭ ডিসেম্বর ২০১৯

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করবে শনিবার৷ বিএনপিও একই দিনের মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে৷ শেষ সময়ে এ নিয়ে জল্পনা তাই তুঙ্গে৷

https://p.dw.com/p/3VOTy
Bangladesch Sayeed Khokon, Dhaka South City Corporation
ছবি: bdnews24.com

প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে চিন্তায় আছেন দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন৷ দক্ষিণ সিটিতে আওয়ামী লীগ তাকে মনোনয়ন দেবে, না নতুন মুখ খুঁজবে? এই প্রশ্নই এখন সবখানে৷

শনিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বোর্ডেও বৈঠক৷ এই বৈঠকেই ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে দলীয় মনোননয়ন চূড়ান্ত হবে৷ উত্তর ঢাকায় বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলামই যে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হচ্ছেন তা মোটামুটি চূড়ান্ত৷

তবে দক্ষিণ ঢাকায় অনিশ্চয়তা বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকনকে নিয়ে৷ মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ধানমন্ডি এলাকার ঢাকা-১০ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপসও দলীয় মনোনয়ন পত্র কিনেছেন৷ তাপস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে৷ তাপসের বড় ভাই শেখ ফজলে শামস পরশকে এবার যুবলীগের সভাপতি করা হয়েছে৷ তাপস ছাড়াও সংসদ সদস্য হাজি সেলিমসহ আরো দু'জন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাও দলীয় মনোনয়ন পত্র কিনেছেন৷

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে সিগন্যাল পেয়েই মেয়র পদে প্রার্থী হতে মনোনয়ন পত্র কিনেছেন তাপস৷ সেটা ধারণা করতে পারছেন সাঈদ খোকনও৷ বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র কেনার সময় কেঁদেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘আমি কখনো কোনো দায়িত্বে অবহেলা করিনি৷'' সাঈদ খোকন ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মেহাম্মদ হানিফের ছেলে৷

সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারার অভিযোগ রয়েছে সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে৷ এছাড়া দলের সঙ্গে দূরত্ব এবং সিন্ডিকেট তৈরি করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে৷ তবে শুক্রবার সাঈদ খোকন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি মনোনয়ন পাব বলে পুরোপুরি আশাবাদী৷ প্রার্থী পরিবর্তনের যে খবর আপনারা শুনছেন আমার কাছে তার উল্টো খবর আছে৷''

সাঈদ খোকন

মনোনয়ন পত্র কেনার সময় কেঁদে দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি আবেগে কেঁদে ফেলেছি৷ ষড়যন্ত্র বলা ঠিক হবে না৷ নানা রকম অপপ্রচার চালিয়ে আমাকে কোণঠাসা করে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে, সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল৷ আমি নগরবাসীর দোয়া চেয়েছি, তাদের দেয়া পেয়েছি৷ সব ঠিক হয়ে গেছে৷''

অন্যদিকে, আতিকুল ইসলামকে আরো একবার মনোনয়ন দিয়ে তার সক্ষমতা প্রমাণের সুযোগ দিতে চায় আওয়ামী লীগ৷ ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিলের নির্বাচনে নির্বাচিত ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক মারা গেলে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি উপ নির্বাচনে মেয়র হন আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম৷ সেই হিসেবে তিনি মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন  মাত্র ১০ মাস৷ তাই তাকে আওয়ামী লীগ একবার পূর্ণ মেয়াদে সুযোগ দিতে চায়৷

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘‘আমরা ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্য, সৎ এবং বিতর্কমুক্ত প্রার্থীকেই মেয়র পদে মনোনয়ন দেব৷ যারা তারা প্রার্থী হতে আবেদন করেছেন তাদের মধ্য থেকেই প্রার্থী ঠিক করবো৷ প্রার্থী পরিবর্তন হবে কিনা, নতুন মুখ আসবে কিনা তা এখন বলা যাবে না৷ আমরা এটা ঠিক করব শনিবারের বৈঠকে৷''

ঢাকা উত্তরে এবার বিএনপির মেয়র প্রার্থীও পরিবর্তন হচ্ছে না৷ উপনির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও ২০১৫ সালের এপ্রিলের মেয়র নির্বাচনে উত্তরে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ছিলেন তাবিথ আউয়াল৷ ওই নির্বাচনে তিনি হেরে গেলেও তাকে এবারও প্রার্থী করা হচ্ছে৷ তিনি বিএনপি নেতা এবং এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে৷ তাবিথ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য৷ জানা গেছে এখানে ব্যবসায়ী শিল্পপতিদেরও এক ধরনের হিসেবনিকেষ আছে৷

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

তবে ঢাকা দক্ষিণে এবার প্রার্থী পরিবর্তন করছে বিএনপি৷ গত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় নেতা মীর্জা আব্বাস হেরে যান৷ এবার সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নাম উঠে এসেছে সদ্যপ্রয়াত ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেনকে৷ তিনি বিএনপির চেয়ারপার্সনের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য৷ সাদেক হোসেন খোকার ইমেজকে কাজে লাগাতে চায় বিএনপি৷

বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে দুই সিটিতে বিএনপি'র মেয়র পদে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করব৷ প্রার্থী প্রায় চূড়ান্ত৷ প্রার্থী নির্বাচনে আমরা তরুণ, যোগ্য, শিক্ষিত এবং গ্রহণযোগ্যতাকে প্রাধান্য দিয়েছি৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘এই নির্বাচনে আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সচল রাখতে অংশ নিচ্ছি৷ কারণ ভোটে অংশ না নিলে জনগণ ভোট দেয় না৷ আর অংশ নিলে ভোট দিতে পারে না৷ আমরা দেখতে চাই তারা কত ভোট চুরি করতে পারে৷ ভোটে অংশ না নিলে তো প্রক্রিয়াটিই আর থাকবে না৷''

সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলেও কাউন্সিলররা স্বতন্ত্র৷ তবে দলীয় সমর্থন থাকবে৷ দুই বড় দলই তাই তাদের সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করবে বলে দুই দলের নেতারা জানিয়েছেন৷

এদিকে জাতীয় পার্টি এই নির্বাচনে আলাদাভাবে অংশ নেবে৷ দলটি মেয়র পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে৷ কয়েকটি বাম সংগঠনও এই নির্বাচনে প্রার্থী দিচ্ছে বলে জানা গেছে৷

নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী দুই সিটিতে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ৩১ ডিসেম্বর৷ মনোনয়নপত্র যাচাই ২ জানুয়ারি৷ প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৯ জানুয়ারি৷ ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি ভোট৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য