গিটার দাঁত দিয়েও বাজিয়েছেন জিমি হেন্ড্রিক্স
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০রক সংগীতের মহাকাব্যে এক বিপ্লবী নায়ক জিমি হেন্ড্রিক্স৷ গীতিকার, সুরকার, গায়ক ও গিটার বাদক৷ মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে, সংগীতে ভিন্ন আঙ্গিক এবং তাঁর অসাধারণ গিটার পরিবেশনশৈলী শুধু রক সংগীতেই নয়, অন্যান্য সংগীত অঙ্গণেও আজও আদর্শ হয়ে রয়েছে৷
জিমি হেন্ড্রিক্সের জন্ম ১৯৪২ সালের ২৭ নভেম্বর, অ্যামেরিকার ওয়াশিংটন, সিয়েটেলে৷ ছোটবেলা থেকেই ‘রক অ্যান্ড রোল' সংগীতের প্রতি তাঁর ছিল গভীর অনুরাগ৷ বাবার কাছ থকে ১৩ বছর বয়সে পান তাঁর প্রথম বাদ্যযন্ত্র একটি হার্মোনিকা বা মাউথ অর্গান৷ ১৫ বছর বয়সে তাঁর বাবা তাঁকে উপহার দেন একটি অ্যাকুস্টিক গিটার৷ অতি অল্প সময়েই গিটার বাজানোয় পারদর্শী হয়ে ওঠেন জিমি এবং প্রতিষ্ঠা করেন তাঁর প্রথম সংগীত গোষ্ঠী৷ এর কিছুকাল পরই তাঁর হাতে আসে ইলেকট্রি গিটার৷ হাই স্কুল শেষ করার পর তাঁকে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হয় কিছুদিনের জন্য৷ ১৯৬৪ সালে জিমি চলে আসেন নিউ ইয়র্কে৷এখান থেকেই শুরু হয় রক সংগীত জগতে তাঁর অগ্রযাত্রা৷
১৯৬৬ সালে নিউ ইয়র্কের শিল্পী এলাকা ‘গ্রীনউইচ ভিলেজ' এ অনুষ্ঠিত কনসার্ট জিমি হেন্ড্রিক্সে এনে দেয় বিশ্বখ্যাতি৷ তাঁর অসংখ্য কনসার্টের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, ১৯৬৭ সালে ‘মন্টেরে পপ ফেস্টিভ্যাল' যেখানে তিনি তাঁর‘ওয়াইল্ড থিং' গানের শেষে মঞ্চে তাঁর গিটার পুড়িয়ে ফেলেন৷ জিমি হেন্ড্রিক্সের ভাষায়: ‘যা তুমি ভালবাস তাকেই তুমি বিসর্জন দাও'৷ ১৯৬৯ সালে ঘটে ঐতিহাসিক ‘উডস্টক ফেস্টিভ্যাল', যেখানে তিনি সংগীত আর তাঁর গিটারে অভাবনীয় সুরধ্বনির মধ্য দিয়ে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে৷
রক, ব্লুজ, জ্যাজ আর সৌল সংগীতের সংমিশ্রনে এক নতুন আঙ্গিকের সুদক্ষ ও সৃজনশীল সংগীত সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন জিমি হেনড্রিক্স৷ আর সেই সাথে ছিল তাঁর অসাধারণ গিটার বাজানোর ক্ষমতা৷ কিন্তু সংগীতের পাশাপাশি মাদকাসক্তি ছিল তাঁর নিত্যদিনের সঙ্গী৷ এবং তারই পরিণতি, ১৯৭০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর, মাত্র সাতাশ বছর বয়সে লন্ডনের এক হোটেল কক্ষে মৃত্যুবরণ করেন এই সংগীত প্রতিভা৷
প্রতিবেদন: মারুফ আহমদ
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী