ঘৃণা ঠেকাতে জার্মানিতে মিলেমিশে মুসলমান ও ইহুদি
২৪ মে ২০২১প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা একজন ইহুদি ধর্মতত্ত্ববিদ পেটরা বুঙ্ক ও একজন মুসলমান সার্জন বিলাল এল-জায়েত৷ কুড়ি বছর ধরে তারা একে অপরকে চেনেন ৷ তারা দুজনই তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য জার্মান ইন্টিগ্রেশন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন৷ বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত দুটি ধর্মের মানুষের বিশ্বাসে ভাটা পড়েছে৷ ছোট শহর মারবুর্গে গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিসহ প্রায় ৫০ হাজার মুসলমান রয়েছেন৷ এল-জায়েত তাদের সমিতির এক সদস্যের কথা জানাতে গিয়ে বললেন সাম্প্রতিক বিমান হামলার কারণে তার পরিবার বাড়ি হারিয়েছেন৷ ২০১৪ সালে গাজা যুদ্ধের সময়, সংকট মধ্যস্থতাকারী হিসাবে ভূমিকা নিতে বলা হয়েছিল বাঙ্ক এবং এল-জায়াতকে৷
সমিতির সদস্যরা ইসরাইলের নীতি নিয়ে সমালোচনা করতে পারেন, তবে প্ল্যাকার্ড এবং স্লোগানেও যেন কোন রকম বাড়াবাড়ি না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয় বলে তারা জানান৷
বাকস্বাধীনতা এবং এর সীমাবদ্ধতা নিয়ে তারা জানান, সংস্থাটির মাধ্যমে মারবুর্গ শহরে ইহুদি-মুসলমদের মধ্যে বিশ্বাস বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তারা এখন এখন বিশ্বাস করেন যে ধর্ম এবং রাজনীতিকে আলাদা করা যায়৷ মতামতে পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও শান্তিপূর্ণভাবে একসাথে থাকার ইচ্ছায় মার্গবুর্গে রাজনৈতিক আলোচনাকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় না৷ এল জায়েত বলেন, ''সবকিছুই যে সুন্দর আর আলোকিত তা নয় , এখানেও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মাঝে মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায় তবে এখানে আমরা একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করি, কেউ কারো শত্রু নই ৷'' পাশ্চাত্যের মিডিয়াগুলোতে হয়রত মোহাম্মদ (সাঃ)এর কার্টুন নিয়ে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিলো তা তারা সংলাপের মাধ্যমে ভালোভাবেই সমাধানের চেষ্টা করেছেন বলেও জানান অ্যাসোসিয়শনের প্রতিষ্ঠাতারা৷
এই সংগঠনের মূল কথা, ইহুদী ও মুসলমানদের মধ্যে অমিলের চেয়ে মিল বেশি ৷ ২০১৯-এ, অনেক নারী হিজাব বা হেডস্কার্ফ পরার কারণে আক্রমণের শিকার হলে বিষয়টি তাদের ভালোভাবেই বুঝিয়ে বলা হয়৷ পরে তারা মারবুর্গে হেডস্কার্ফ ডে-র আয়োজন করেন৷ ২০১২ সালে মুসলিম ছেলেদের খতনার আইনের বিরুদ্ধে ইহুদি এবং মুসলমানদের বিক্ষোভের কথাও তুলে ধরেন৷ একইরকমভাবে দাফন করার অনুষ্ঠানের বিষয়টিও আলোচনায় আসে৷
গত সেপ্টেম্বরে মারবুর্গের মসজিদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও ইহুদীরা অংশ নিয়েছেন৷ অন্যদিকে এই প্রতিষ্ঠানের আয়োজিত বুখেনভাল্ড কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের বাস ট্যুরে অংশ নিয়েছিলো ইহুদি, খ্রিস্টান এবং মুসলমানেরা৷
আগামীতে দাবা টুর্নামেন্ট এবং রান্নার কোর্স আয়োজন করার মধ্য দিয়ে সকলকে আরো কাছাকাছি আনতে চান উদ্যোক্তারা৷ খাবার মানুষকে একত্রিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে বলে তারা মনে করেন৷
অলিভার পিপার/এনএস