জনসংখ্যা বাড়াতে মন্ত্রণালয়
৩১ আগস্ট ২০১২‘‘আমি আমার সমস্ত শক্তি ক্ষয় করে লেখাপড়া শিখে ভাল একটা চাকরিতে ঢুকেছি৷ দামি জুতা আর হাতব্যাগ কেনা আমার শখ৷ সন্তান থাকলে সেই শখ পূরণ সম্ভব নয়,'' মন্তব্যটা ৩২ বছর বয়েসি সিঙ্গাপুরীয় তরুণী মেরি চ্যান'এর৷
সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, সিঙ্গাপুরে ৩০ থেকে ৩৪ বছর বয়েসি তরুণদের ৪৪ শতাংশ এখনো বিয়ে করেনি৷ মেয়েদের মধ্যে এই হার ৩১ শতাংশ৷
তরুণদের মধ্যে বিবাহ নিয়ে এই অনাগ্রহতায় বেশ চিন্তিত সরকার৷ কেননা এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে দেশটিতে সিঙ্গাপুরীয় নাগরিকের সংখ্যা কমে, বেড়ে যাবে অভিবাসীর সংখ্যা৷ এই ধরনটা অবশ্য এখনই শুরু হয়ে গেছে৷ কেননা ২০০০ সালে সিঙ্গাপুরের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৪০ লক্ষ৷ গত বছর সেই সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৫২ লক্ষে৷ কিন্তু এই যে সংখ্যাবৃদ্ধি সেটা হয়েছে অভিবাসীদের কারণে৷
অবস্থা সামাল দিতে নভেম্বর থেকে কাজ শুরু করবে নবগঠিত ‘সামাজিক ও পরিবার উন্নয়ন' মন্ত্রণালয়৷
এই যে সমস্যা তার কথা কিন্তু শোনা যাচ্ছে অনেক দিন ধরেই৷ ফলে তরুণরা যেন বিয়ে করতে এবং সন্তান নিতে আগ্রহী হয় সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে আগেও চেষ্টা করা হয়েছে৷ যেমন ঘটক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা, মাতৃকালীন ছুটির সময়সীমা বৃদ্ধি, সন্তান নেয়ার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান ইত্যাদি৷ কোনো দম্পতি যদি প্রথম সন্তান নেয় তাহলে বোনাস হিসেবে তাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত দেয়া হয়৷ পরবর্তীতে আবারও সন্তান নিলে আবারও বোনাস দেয় সরকার৷
কিন্তু এসব সুযোগ সুবিধার পরও কেন তরুণরা আগ্রহী হচ্ছে না তার কারণ খুঁজতে এখন ব্যস্ত সরকার৷ তবে সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তান এরন্ সের মনে করেন, বর্তমান যুগে সন্তান লালন-পালন বেশ ব্যয়বহুল একটা ব্যাপার হয়ে উঠেছে৷ ফলে তরুণরা সেদিকে আগ্রহী হচ্ছে না৷
অধ্যাপকের এই মন্তব্যের সমর্থন পাওয়া যায় দুই সন্তানের মা জেনেভিভে লি'র কথায়৷ তিনি বলছেন, এই যুগে টিকে থাকতে হলে সন্তানদের সেরা করে গড়ে তোলাটা জরুরি৷ ফলে তাদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হয়, যেটা ব্যয়বহুল৷
জেডএইচ / এসবি (ডিপিএ)