জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের হার দ্রুত বেড়ে চলায় দুশ্চিন্তা
২৫ অক্টোবর ২০২১শীতের মাসগুলিতে ইউরোপে করোনা সংক্রমণ যে বাড়তে চলেছে, বিশেষজ্ঞরা অনেক আগে থেকেই এমন পূর্বাভাস দিয়ে চলেছেন৷ হেমন্ত কালের শুরু থেকেই বিশেষ করে করোনা টিকা না নেওয়া মানুষের মধ্যে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে৷ ইউরোপের একাধিক দেশ এমন মানুষকে কার্যত একঘরে করে রাখতে নানা কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ ইটালিতে শ্রমিক-কর্মীদের ক্ষেত্রে টিকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷ অস্ট্রিয়া টিকা না নেওয়া মানুষের জন্য কড়া লকডাউনের তোড়জোড় করছে৷ ফ্রান্সেও একাধিক কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে৷ ইউরোপের পূর্বাংশে সংক্রমণের হার মারাত্মক আকারণ ধারণ করেছে৷
একমাত্র জার্মানিতেই ‘মৌলিক নাগরিক অধিকার' রক্ষার তাগিদে সরকার ও প্রশাসন কোনো জোরালো উদ্যোগ নিতে পারছে না৷ অথচ করোনা সংক্রমণের হার দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে৷ সোমবার প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সাপ্তাহিক গড় সংক্রমণের হার ১১০ পেরিয়ে গেছে৷ এমন পরিস্থিতিতে এখনো পর্যন্ত মূলত টিকা না নেওয়া মানুষ আক্রান্ত হলেও ভবিষ্যতে আরও টিকাপ্রাপ্ত মানুষ সংক্রমণের শিকার হতে পারেন বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিচ্ছেন৷ বিদায়ী সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান এমন পরিস্থিতির মোকাবিলায় পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করলেও নভেম্বরের শেষে মহামারিকালীন জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর বিরোধী৷ গত সপ্তাহে ১৬টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য বেড়ে চলা করোনা সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে দেশজুড়ে কড়া পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করেছেন৷
জার্মানিতে প্রতি পাঁচ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে চার জন করোনা টিকা নিয়ে নেওয়ায় স্পান আনুষ্ঠানিকভাবে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আর বাড়াতে চান না৷ এর বদলে আঞ্চলিক ও স্থানীয় স্তরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করছেন তিনি৷ উল্লেখ্য, জার্মানিতে এখনো পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার মাত্র ৬৬ শতাংশ টিকার সব প্রয়োজনীয় ডোজ পেয়েছেন৷ যদিও এই হিসেবের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ ইউরোপের অনেক দেশ এ ক্ষেত্রে জার্মানির তুলনায় অনেক এগিয়ে রয়েছে৷
সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কার্ল লাউটারবাখ মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে৷ শীতের মাসগুলিতে স্কুলের মধ্যে যথেষ্ট তাজা বাতাস নিশ্চিত করা সম্ভব না হওয়ায় হেমন্তের ছুটির শেষে এমন ঝুঁকি বেড়ে যাবে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন৷ অনেক স্কুলে এখনো বাতাস শুদ্ধ করার ফিল্টার যন্ত্র বসানো সম্ভব হয় নি বলে সেই ঝুঁকি আরও বেশি৷ তাঁর মতে, একই কারণে দপ্তর, বার, রেস্তোরাঁতেও সংক্রমণ বাড়তে চলেছে৷ তিনি স্কুলে সপ্তাহে তিন বার করোনা পরীক্ষা চালু করার প্রস্তাব দিয়েছেন৷ সংক্রমণ সত্ত্বেও শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্কদের মতো সাধারণত রোগের উপসর্গ দেখা না গেলেও ‘লং কোভিড' বিপদের কারণ হতে পারে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)