জার্মানিতে পোষা প্রাণী কবর দেয়ার জমজমাট ব্যবসা
২০ নভেম্বর ২০১০এখন এমন অনেক মালিক আছেন যারা কফিন সাজিয়ে প্রাণপ্রিয় পোষা বিড়াল বা কুকুরকে চিরবিদায় জানাতেও পিছপা হননা৷ আর তাঁদের কাছে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এইসব প্রতিষ্ঠান৷ এরকম প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উলরিকে মাউটে৷ তিনি বললেন, ‘‘মাঝে মাঝে এদের মালিককে দেখলে মনে হয়, যেন তাঁরা তাঁদের সন্তান কিংবা কাছের কোনো আত্মীয়কেই সমাহিত করছেন৷''
অনেক সময় মৃত পশুর দেহ চলে যায় বিশাল এক গ্রাইন্ডারে অন্যান্য পশু বর্জ্যের সঙ্গে৷ গ্রাইন্ডারে সব কিছু পিষে ফেলে তৈরি হয় পশুপাখির খাবারের মত কিছু জিনিস৷ বার্লিনের পশুপাখিদের সমাধিস্থানে কাজ করেন কারিন মিটশকে৷ তিনি বলেন, ‘‘এতদিনের পোষা ছোট্ট প্রিয় প্রাণীটিকে ময়লা আবর্জনার মতো কেবল ফেলে আসা এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা৷''
রাজধানী বার্লিনের শ্টেগলিৎস এলাকায় তিনি যে সমাধিস্থানে কাজ করেন সেখানে প্রায় ৮শ' বিড়াল, কুকুর এবং পাখিকে কবর দেয়ার মতো ব্যবস্থা রয়েছে৷ মিটশকে বলেন, ‘‘অনেক মালিক আছেন যারা মৃত প্রাণীর কবরে ভালোবাসার চিহ্ন হিসেবে ঐ প্রাণীটির প্রিয় খাবার, ছবি, খেলনা এমনকি তাকে উদ্দেশ্য করে চিঠিও রেখে যান৷''
কফিন কেমন হবে, কবর দিতে কতখানি জায়গা লাগবে এসবের উপর নির্ভর করে প্রাণীটিকে সমাধিস্থ করতে কত টাকা দিতে হবে৷ এই কবরস্থানের স্বত্বাধিকারী ক্লেমেনস ভেনার বললেন, সাধারণত চারশ' থেকে ৫শ' ইউরো খরচ করে পশুপাখিদের কবর দেওয়া যায়৷ তবে তাঁর তত্ত্বাবধানে সবচেয়ে ব্যয়বহুল সমাধি দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে৷ খরচ পড়বে সতেরোশ' ইউরো বা প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ করে৷
ভেনার দু'বছর ধরে এই কবরস্থান পরিচালনা করে আসছেন এবং এসময়ের মধ্যে প্রায় সাড়ে তিনশ' পশুপাখিকে এখানে কবর দেওয়া হয়েছে৷ তবে গরু, ছাগল বা ঘোড়া এখানে কবর দেয়ার অনুমতি নেই৷ পশুপাখিদের কবর দেওয়ার প্রতিষ্ঠানগুলোর সংঘ বলছে, পশুপাখিদের কবর দেয়ার ব্যাপারটা দশ বছর আগেও বেশ অজানা ছিলো৷ কিন্তু এখন এই ব্যবসা বেশ রমরমা৷ বর্তমানে জার্মানিতে এইধরণের একশ বিশটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক