জার্মানির অনন্য হালিশ দ্বীপপুঞ্জ
হালিশ দ্বীপপুঞ্জে নিয়মিত বন্যা হয়৷ কিন্তু ঢিবির উপর বসবাসের জায়গাগুলো দিব্যি দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ জার্মানির হালিশ দ্বীপুপুঞ্জে দ্বীপের সংখ্যা মোট দশটি৷ নির্জন, অপরূপ এই দ্বীপগুলির কথা জানুন ছবিঘরে৷
বিশালাকার: লাঙ্গেনিস দ্বীপ
জার্মানির উত্তর সাগর উপকূলে অবস্থিত ১০টি হালিশ দ্বীপের মধ্যে আয়তন ও জনসংখ্যার বিচারে লাঙ্গেনিস দ্বীপ সবচেয়ে বড়৷ এটি প্রায় দশ কিলোমিটার (৬.২ মাইল) দীর্ঘ এবং মাত্র দেড় কিলোমিটার (০.৯ মাইল) চওড়া৷ ১৮টি ‘ভাফটেন’-এ প্রায় ১১০ জন বাস করেন৷ কৃত্রিমভাবে উত্থাপিত ঢিবির উপর বাড়িগুলি দাঁড়িয়ে আছে৷ ঢিবিগুলিকে ‘ভাফটেন’ বলা হয়৷
খুব ভেজা
ঢিবির উপরে ঘরগুলি হালিশ দ্বীপপুঞ্জের একমাত্র অংশ যা ঝড় এলেও প্লাবিত হয় না৷ এর সবচেয়ে বড় অংশটি সমুদ্র দ্বারা আবৃত৷ এটিকে জার্মান ভাষায় ‘লান্ড উনটার’ বলা হয়৷ ঝড়ের সময় বাসিন্দারা তাদের বাড়িতে থাকেন, পশুগুলিকে টিলায় নিয়ে আসেন৷ সমুদ্রের জল সরে গেলে, পরবর্তী ঝড় বা জোয়ার না আসা পর্যন্ত সবাই স্থলভাগে থাকতে পারেন৷
হ্যালো হালিশ হুগে!
লাঙ্গেনিসের পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ হচ্ছে হালিশ হুগে৷ বেশ কয়েকটি ঘর সহ একটি আবাসিক ঢিবি দেখতে পাচ্ছেন আপনারা৷ কেন এত বিশাল আড়াআড়ি অংশে এত কাছাকাছি বাড়ি তৈরি করেন সবাই, জানলে আপনি আশ্চর্য হবেন৷ এর ফলে ঝড় এলে ঘরসমেত ঢিবিটিই একমাত্র শুকনো থাকে৷
অপূর্ব সুন্দর হালিশ হুগে
হালিশ হুগের আয়তন ৫.৭ বর্গ কিলোমিটার (২.২ মাইল)৷ লাঙ্গেনিসের আয়তনের অর্ধেকের চেয়ে সামান্য বেশি, কিন্তু জনসংখ্যা প্রায় একই, ১০০ জন৷ হুগেতে (৪৮০ জন) লাঙ্গেনিসের তুলনায় (২৩০ জন) বেশি সংখ্যক অতিথির থাকার ব্যবস্থা রয়েছে৷ হুগের হোটেল এবং অবকাশকালীন অ্যাপার্টমেন্টে বছরে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ গিয়ে থাকেন৷
চারটি বাড়ি, হালিশ গ্র্যোডেতে স্বাগত
তৃতীয় স্থানে রয়েছে গ্র্যোডে৷ এর আয়তন মাত্র ২.৫ বর্গ কিলোমিটার (০.৯ মাইল)৷ একটি ঢিবিতে চারটি আবাসিক বাড়ি রয়েছে যেগুলোতে এক ডজনেরও কম লোক থাকেন৷ দ্বিতীয় আবাসিক ঢিবির উপর আছে একটি গির্জা৷ এছাড়াও একটি ছোট কবরস্থান এবং ফাঁকা স্কুল রয়েছে, যেখানে এক শিক্ষকের জন্য একটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে৷
বেশি লোক, কম জমি: হালিশ ওলান্ড
ওলান্ডের আয়তন মাত্র দুই বর্গ কিলোমিটার (০.৭ মাইল)৷ তবে সেখানে গ্র্যোডের চেয়ে বেশি বাসিন্দা থাকেন, প্রায় ২০ জন৷ অবকাশযাপনের জন্য দুর্দান্ত জায়গা ওলান্ড৷ কারণ সেখানে ৪০টির বেশি অতিথি শয্যা, একটি লাইব্রেরি সহ কমিউনিটি সেন্টার, একটি গির্জা এবং একটি রেস্তোরাঁ রয়েছে৷ আপনি আর কী চান?
ছোট এবং আরামদায়ক: হালিশ নর্ডশ্ট্রান্ডিশমুয়া
মাত্র দুই বর্গকিলোমিটারের (০.৭ মাইল) কম আয়তনের নর্ডশ্ট্রান্ডিশমুয়ায় চারটি ঢিবি রয়েছে৷ সেখানকার জনসংখ্যা ২০ জন৷ জার্মানির সবচেয়ে ছোট স্কুলগুলির মধ্যে একটিও সেখানে আছে যেখানে রয়েছে হাতে গোনা কয়েকজন ছাত্র৷ অতিরিক্ত ভিড়ে ক্লাস করার সমস্যা এখানে নেই৷
চলুন যাওয়া যাক হামবুর্গ হালিশে
ছোট হালিশ দ্বীপের জন্য বড় একটি বাড়ি৷ হামবুর্গ হালিশ আয়তনে মাত্র এক বর্গকিলোমিটার এবং জনবসতিহীন৷ কিন্তু ‘হালিশ ক্রোগ’ নামে একটি রেস্তোরাঁ আছে৷ এটি ইস্টার থেকে অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত খোলা থাকে৷ হামবুর্গ হালিশ দেখাশোনা করে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ইউনিয়ন (এনএবিইউ)৷ এক পাখিরক্ষক সেখানে কাজ করেন৷ অন্যান্য হালিশ দ্বীপের মতো হামবুর্গ হালিশও পাখিদের অভয়ারণ্য৷
হালিশ জ্যুডাওকে জনবিস্ফোরণ!
প্রায় ০.৬ বর্গকিলোমিটার (০.২ মাইল) এলাকা নিয়ে থাকা জ্যুডাওক আমাদের হালিশ ব়্যাংকিংয়ে সপ্তম স্থান পাচ্ছে৷ এলাকা একই, কিন্তু জনসংখ্যা বাড়ছে৷ ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে এক দম্পতি এখানে চলে আসে৷ তাদের দুটি সন্তান রয়েছে৷ আকৃতির কারণে ‘উত্তর সাগরের হৃদয়’ নামেও পরিচিত এটি৷ আপনি এখানে বিয়ে করতেও পারেন৷ তাহলে, কে গাঁটছড়া বাঁধতে চান এখানে?
বসতি? হালিশ জ্যুডফাল
এটি মাত্র এক কিলোমিটারের একটু বেশি লম্বা এবং সবথেকে চওড়া অংশের প্রস্থ ৬০০ মিটার অর্থাৎ এক হাজার ৯৬৮ ফুটের একটু বেশি৷ একটি ঘরসহ আবাসিক ঢিবি আছে এখানে৷ একটি পরিবার শুধুমাত্র গ্রীষ্মকালে সেখানে বসবাস করে৷ এটি পাখি প্রজননের এলাকা৷ ঘোড়ার গাড়িতে চেপে এই দ্বীপ ঘুরে ফেলা সম্ভব৷
হালিশ নর্ডাওক
০.০৯ বর্গ কিলোমিটার (.০৫ মাইল) এলাকাসহ নর্ডাওক রয়েছে নবম স্থানে৷ এটি বাসস্থান ঢিবি ছাড়া একমাত্র হালিশ৷ একজন পাখি পালনকারীর থাকার জায়গা রয়েছে৷ তবে এখন সেখানে থাকেন না তিনি৷ দ্বীপটিকে ‘ফোগেলহালিশ’-ও (বার্ড হালিগ) বলা হয়৷ পাখিদের প্রজনন ঋতুর সময়টুকু বাদ দিলে আপনি হাইকিং করে দ্বীপটি ঘুরে দেখতে পারেন৷
তৃণভূমি এবং জল: হালিশ হাবেল
সবচেয়ে ছোট (০.০৬ বর্গ কিলোমিটার) হালিশ হাবেলে আপনাকে পর্যটন স্থান খুঁজতে যেতে হবে না৷ কারণ একমাত্র পাখি হলেই আপনাকে এখানে স্বাগত জানানো হতো৷ শুধুমাত্র একজন পাখি পর্যবেক্ষক নজর রাখেন দ্বীপটিতে৷