জার্মানির অর্ধেক মানুষ করোনা টিকা নিয়েছেন
২৯ জুলাই ২০২১অন্যদিকে ছয় কোটি ১১ লাখ মানুষ শুধু প্রথম ডোজ নিয়েছেন৷ তবে টিকা কর্মসূচির বর্তমান ধীর গতি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি আসন্ন হেমন্ত ও শীতকালের পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন৷ যত বেশি মানুষ দ্রুত করোনা টিকা নেবেন, পরিস্থিতি সবার জন্য ততটাই নিরাপদ হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ উল্লেখ্য, বিশেষজ্ঞদের মতে সমাজের উপর কার্যকর প্রভাবের জন্য কমপক্ষে ৮০ শতাংশ মানুষের টিকা নেওয়া প্রয়োজন৷ জার্মানি ৫০ শতাংশের গণ্ডি পেরোলেও আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কমপক্ষে আরও ৩০ শতাংশ মানুষকে টিকা নিতে রাজি করানো সম্ভব হবে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে৷ বিশেষ করে টিকাদান কর্মসূচির গতি বেড়ে চলা করোনা সংক্রমণের হারের সঙ্গে তাল মেলাতে পারবে না বলে অনেক বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করছেন৷ রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের সূত্র অনুযায়ী জার্মানিতে করোনায় আক্রান্ত মানুষের প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই চরম ছোঁয়াচে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট পাওয়া গেছে৷ প্রতিষ্ঠানের প্রধান লোটার ভিলারের মতে, জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়ে গেছে৷
এখনো আবেদন-নিবেদনের মাধ্যমেই টিকার বিষয়ে সংশয়ী মানুষদের মন জয় করতে চান জার্মানির বেশিরভাগ রাজনৈতিক নেতা৷ ২৬ সেপ্টেম্বর সাধারণ নির্বাচনের আগে ভোটারদের চটাতে চাইছেন না তাঁরা৷ ফলে ফ্রান্স ও গ্রিসের মতো দেশের মতো কমপক্ষে বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না৷ এমনকি যারা এখনো টিকা নিতে প্রস্তুত নন, তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের প্রশ্নেও বিতর্ক বেড়ে চলেছে৷ তবে সংক্রমণের হার কমাতে বিদেশে ছুটি কাটিয়ে দেশে ফেরা মানুষদের জন্য করোনা টেস্ট বাধ্যতামূলক করার প্রশ্নে ঐকমত্য বাড়ছে৷ অবিলম্বে এই নিয়ম চালু করার জন্য ফেডারেল সরকারের উপর চাপ বাড়ছে৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, যত দেরিতে এই নিয়ম কার্যকর হবে, সংক্রমণের হার কমাতে সেই পদক্ষেপের কার্যকারিতা ততই কমে যাবে৷
জার্মানির সাধারণ নির্বাচনের পরে সংক্রমণের হার আরও বাড়তে থাকলে যে টিকা নিতে অনিচ্ছুক মানুষের উপর চাপ বাড়বে, সেই ইঙ্গিত এখনই পাওয়া যাচ্ছে৷ ভাইস চ্যান্সেলর, অর্থমন্ত্রী ও এসপিডি দলের চ্যান্সেলর পদপার্থী ওলাফ শলৎস এমন মানুষের জন্য বিনামূল্যে করোনা টেস্ট বন্ধ করার পক্ষে সওয়াল করেছেন৷ বাভেরিয়ার মুখ্যমন্ত্রী মার্কুস স্যোডারও কমপক্ষে অক্টোবর থেকে এই নিয়ম চালু করার ডাক দিয়েছেন৷
জার্মানিতে করোনা পরিস্থিতির মূল্যায়নের বর্তমান কাঠামো নিয়েও বিতর্ক চলছে৷ প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সংক্রমণের গড় সাপ্তাহিক হার বা ইনসিডেন্সের মাত্রার ভিত্তিতেই সরকার যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্পান ও কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা সেইসঙ্গে হাসপাতাল ও স্থানীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের উপর চাপের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেবার পক্ষে সওয়াল করছেন৷ বিশেষ করে বয়স্ক ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের সিংহভাগ করোনা টিকা পেয়ে যাওয়ায় সংক্রমণের হার বাড়লেও আক্রান্তদের মধ্যে বেশি মানুষ গুরুতর অসুস্থ হচ্ছেন না বলে নতুন মাপকাঠি চাইছে একাধিক মহল৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)