ট্যাঙ্কের পর কি যুদ্ধবিমান পাবে ইউক্রেন?
১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩প্রথমে দ্বিধান্বিত ছিল জার্মানি। পরে তারা অত্যাধুনিক লিওপার্ড ২ ট্যাঙ্ক পাঠাতে রাজি হয়েছে। পোল্যান্ডও তাদের কাছে থাকা লিওপার্ড ২ ট্যাঙ্ক কিয়েভকে দিতে চেয়েছে। এই ট্যাঙ্ক পাওয়ার পরই ইউক্রেন এখন অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান চাইছে।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রেজনিকভ ক্যানাডার সংবাদমাধ্যম সিবিসি-কে বলেছেন, অত্য়াধুনিক যুদ্ধবিমান পাওয়ার বিষয়ে তারা আশাবাদী। ন্যাটো শরিকদের কাছ থেকে এই যুদ্ধবিমান পেলে তা গেমচেঞ্জার হবে বলে তার দাবি।
কোন যুদ্ধবিমান কতগুলি তারা চাইছে তা ইউক্রেন স্পষ্ট করে জানায়নি। তবে ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, শক্তিশালী যুদ্ধবিমান তাদের দরকার। এই বিমানের মধ্যে আছে, এফ ১৬, এফ৩৫এস, রাফায়েল, ইউরোফাইটার, টর্নেডো, গ্রিপেনের মতো যুদ্ধবিমান।
জার্মানির সমরাস্ত্র বিশেষজ্ঞ ব্রুনো লেটে ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''অনেক ইউরোপীয় দেশ এখন এফ১৬-র জায়গায় এফ৩৫সি নিচ্ছে। ইউক্রেনের কাছে যে যুদ্ধবিমান ছিল, তা যুদ্ধের প্রথমেই ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন তাদের কাছে পুরনো সোভিয়েত জমানার কিছু যুদ্ধবিমান আছে। ফলে এই একটা দিকে তারা বেশ কিছুটা পিছিয়ে আছে।''
অ্যামেরিকা কী বলছে?
অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগে জানিয়েছেন, তিনি ইউক্রনকে যুদ্ধবিমান দেয়ার বিরোধী। হোয়াইট হাউস থেকে গত জুন মাসে জানানো হয়েছিল, ইউক্রেনকে ইউরোপীয় দেশগুলি মিগ ২৯-এর মতো যুদ্ধবিমান দিচ্ছে।
সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম পলিটিকো জানিয়েছে, কিছু মার্কিন সেনা অফিসার ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দেয়ার পক্ষে। তারা এখন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি বোঝাচ্ছেন।
জার্মানি ও ইউরোপের দেশগুলি
জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দেয়ার বিপক্ষে। তার মতে, এই বিষয়ে আগে সার্বিক আলোচনা হওয়া দরকার।
কিন্তু ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ সোমবার বলেছেন, নীতিগতভাবে তিনি কোনোকিছুই উড়িয়ে দিচ্ছেন না। নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, তিনি খোলা মনেই সবকিছু বিবেচনা করতে রাজি। পোল্যান্ড ইউক্রনকে এফ ১৬ দিতে রাজি।
ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান না দেয়ার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় দেশগুলির যুক্তি হলো, এই অত্যাধুনক যুদ্ধবিমান হাতে পেলে কিয়েভ রাশিয়ার ভিতরে গিয়ে আঘাত হানতে পারবে। সেটা তারা চাইছেন না। সেজন্যই বিষয়টা এতটা স্পর্শকাতর।
রাশিয়ার বক্তব্য
রাশিয়া চায় না, ইউক্রনকে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান দিক পশ্চিমা দেশগুলি। তারা জানিয়ে দিয়েছে, লিওপার্ড ট্যাঙ্ক পাঠানোর ফলে শুধু যে রুশ সেনা মারা যাবে তাই নয়, সাধারণ মানুষও মারা যাবে। এরপর তারা চায় না যে, ইউক্রেন অত্য়াধুনিক যুদ্ধবিমান পাক।
রাশিয়া তো জার্মানিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।
কী হতে পারে?
ইউরোপীয় দেশগুলি প্রথমে ইউক্রেনকে ট্যাঙ্ক দিতে চায়নি। পরে তারা তা দিয়েছে। তেমনই ইউক্রেন আশা করছে, তারা যুদ্ধবিমানও দেবে।
বিশেষজ্ঞ লেটে বলেছেন, ''যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি দখে মনে হচ্ছে, ইউরোপের দেশগুলি এখন ইউক্রেনের চাহিদা মেনে তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিতে পারে। যাতে ইউক্রেন পাল্টা আঘাত হানতে পারে।''
এলা জয়নার/জিএইচ/ডিডাব্লিউ