1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ড্র্যাগন বেবি’

২৩ জানুয়ারি ২০১২

লুনার বা চান্দ্র বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী আজ থেকে চীনে শুরু হচ্ছে নতুন বছর৷ চীনা রীতি অনুযায়ী, বছরটা ‘ড্র্যাগন বর্ষ’ হওয়ায় সেদেশের মানুষের কাছে নতুন বছরটা আলাদা একটা গুরুত্ব পাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/13o42
চীনে নববর্ষকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি হিসেবে ড্রাগনের ছবি আঁকা হচ্ছেছবি: Reuters

প্রতি ১২ বছরে একবার ‘ড্র্যাগন বর্ষ' ফিরে আসে৷ এই ১২ বছরের একেকটা একেক জীব বা প্রাণীর নামে পরিচিত৷ যেমন ইঁদুর, বাঘ, খরগোশ, সাপ, বানর, ছাগল ইত্যাদি৷ এর মধ্যে ড্র্যাগনের নামে যে বছর সেটা চীনাদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ৷ কেননা তাদের কাছে ড্র্যাগন হচ্ছে সাহসিকতার প্রতীক৷

তাই বিশেষ এই বছরে কোনো সন্তান জন্ম নিলে সে সাহসি ও জ্ঞানী হবে এবং পরিবারের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে বলে ধরে নেয়া হয়৷ এই বিশ্বাস থেকে চীনাদের মধ্যে ড্র্যাগন বর্ষে সন্তান জন্ম দেয়ার একটা পরিকল্পনা লক্ষ্য করা গেছে অতীতে৷ এবং এই বিষয়টা শুধু চীনে নয় - সিঙ্গাপুর, হংকং সহ আশেপাশের অনেক দেশেই এই প্রবণতাটা দেখা যায়৷

যেমন সিঙ্গাপুরে দেখা গেছে গত ড্র্যাগন বর্ষে অর্থাৎ ২০০০ সালে সন্তান জন্ম দেয়ার হার তার আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ বেশি ছিল৷ এর আগের ড্র্যাগন বর্ষ ১৯৮৮ সালেও ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিল৷

China Neujahr
চীনা শিশুরা ড্রাগন নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করছেছবি: AP

এবারও যে তেমনটাই হতে পারে সেটা ধরে নেয়া যায়৷ ইতিমধ্যে সে লক্ষণও দেখা গেছে৷ যেমন গত কয়েকবছর ধরে অনেক চীনাই তাদের সন্তান জন্ম দেয়ার স্থান হিসেবে হংকং'কে বেছে নিচ্ছে৷ এবারও তারা ড্র্যাগন বর্ষে সন্তান নেয়ার জন্য হংকং'এর হাসপাতালগুলোতে আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখছেন৷ ফলে তৈরি হচ্ছে সঙ্কট৷ সমস্যায় পড়ছেন হংকং'এর স্থানীয় বাসিন্দারা৷ তারা হাসপাতালগুলোতে জায়গা পাচ্ছেন না৷ যেমন ৩৮ বছরের মিশেল লি৷ আগামী এপ্রিলে তিনি দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেয়ার আশা করছেন৷ কিন্তু এখনো তিনি কোনো হাসপাতাল খুঁজে পান নি৷ লি বলছেন, তিনি যখন গর্ভবতী হওয়ার কথা শোনেন তখনই বুকিং দিতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু হাসপাতাল থেকে বলে দেয়া হয় ‘দেরি হয়ে গেছে'৷

হংকং'এর সরকারি হাসপাতালের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাক হঙ বলছেন, আগের চেয়ে লোকবল ও সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হয়েছে৷ কিন্তু চীন থেকে আসা প্রসূতিদের সংখ্যা এত বেশি যে, তাতেও কাজ হচ্ছে না৷

সমস্যা প্রকট হওয়ায় হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে সেদেশের সরকারকে৷ ইতিমধ্যে হংকং সরকার সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের ব্যবস্থা করেছে৷ এছাড়া একেকটি হাসপাতাল চীন থেকে আসা কতজন প্রসূতিকে জায়গা দিতে পারবে সেটাও নির্ধারণ করে দিয়েছে৷

এদিকে সিঙ্গাপুরে দিন দিন সন্তান প্রসবের হার কমছে৷ এক হিসেবে দেখা গেছে, ২০০০ সালে যেখানে একজন নারী গড়ে ১.৬ জন সন্তানের জন্ম দিতেন, ২০১১ সালে সেটা কমে এসেছে ১.২'তে৷ এই পরিস্থিতিতে চিন্তাগ্রস্ত সেদেশের সরকার৷ তাই প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন বলছেন, সিঙ্গাপুরের পরিচিতি টিকিয়ে রাখতে স্থানীয় নাগরিকদের বেশি বেশি সন্তান নেয়া উচিত৷ তিনি বলছেন, অভিবাসীদের উপর থেকে নির্ভরতা কমাতে এটা প্রয়োজন৷ উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে সিঙ্গাপুরের জনসংখ্যা ৫২ লক্ষ - যার এক চতুর্থাংশই বিদেশি৷ প্রধানমন্ত্রী লি আশা করছেন ড্র্যাগন বর্ষকে ঘিরে সিঙ্গাপুরিয়দের মধ্যে সন্তান নেয়ার প্রবণতা বাড়বে৷ উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী লি নিজে চার সন্তানের জনক৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম