ঢাকায় নির্বাচনি প্রচারণায় নেই আচরণবিধির বালাই
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীদের নির্বাচনি প্রচারণা চলছে জোরেশোরে৷ কিন্তু নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া প্রার্থী ও প্রচারণার আচরণ বিধিমালা রাজধানী ঢাকায় যেন শুধু কাগজকলমেই সীমাবদ্ধ। দেখুন ছবিঘরে...
সড়কে ক্যাম্প
নির্বাচন আচরণ বিধিমালায় বলা হয়েছে, সড়কে বা সাধারণ চলাচলের পথে কোনো ধরনের ফটক, তোরণ অথবা ক্যাম্প নির্মাণ করা যাবে না। কিন্তু ঢাকার ফার্মগেট এলাকার খামারবাড়ি মোড়ে দেখা গেল এমন একটি নির্বাচনি ক্যাম্প৷
নেই মুদ্রণের বিস্তারিত
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন থেকে প্রকাশিত গেজেটে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, নির্বাচনি প্রচারণার কাজে ব্যবহৃত পোস্টারে মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা এবং পোস্টার মুদ্রণের তারিখ লিখে দিতে হবে। কিন্তু ঢাকা-৮ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের পোস্টারে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্যই দেখা গেল না।
গাছেও ব্যানার
নির্বাচন আচরণ বিধিমালাতে কোনো গাছ, বৈদ্যুতিক খুঁটি, ব্রিজের পিলার, সড়ক দ্বীপ, সড়ক বিভাজক, বাড়ির ছাদে কোনো ধরনের পোস্টার, ব্যানার ইত্যাদি ঝুলানোয় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সরেজমিনে ঘুরে প্রায় প্রতিটা সড়কেই এই বিধিমালার বিপরীত চিত্র দেখা গেল।
পথরোধ করে জনসভা
নির্বাচন আচরণ বিমিমালায় পূর্বানুমতি সাপেক্ষে পথসভা ও ঘরোয়াসভা করার কথা বলা হলেও অধিকাংশ প্রার্থীই তা মানছেন না। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে ও চলাচলের সড়ক আটকে জনসংযোগ করছেন প্রার্থীগণ৷
অসময়ে মাইক
অযান্ত্রিক যানবাহনে দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে নির্বাচনি প্রচারে মাইক ব্যবহারের কথা নির্বাচন বিধিমালায় বলা হলেও পুরান ঢাকার এতিমখানা রোডে সকাল ১১টায় মাইকিং করতে দেখা যায়।
প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের ক্ষতিসাধন
পুরান ঢাকার লালবাগ কেল্লার দেওয়ালে কর্তৃপক্ষের নোটিশ অগ্রাহ্য করে ঢাকা-৭ আসনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী হাজী মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আহম্মেদের পোস্টার লাগাতে দেখা হয়।
ফটক বা তোরণ নির্মাণ
নির্বাচন আচরণ বিধিমালায় বলা হয়েছে, প্রচারণায় কোনো ধরনের স্থায়ী বা অস্থায়ী বিলবোর্ড বা তোরণ নির্মাণ করা যাবে না। কিন্তু পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকায় ঢাকা-৭ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ সোলায়মান সেলিমের নির্বাচনি প্রচারণায় এই বিধি ভঙ্গ করা হয়েছে।
দেওয়াল ছেয়ে গেছে পোস্টারে
পুরান ঢাকার অধিকাংশ দেওয়াল নির্বাচনি পোস্টারে প্রায় ঢেকে গেছে। অথচ নির্বাচন আচরণ বিধিমালায় বলা রয়েছে, দেওয়ালে কোনোরূপ পোস্টার লাগানো অথবা রং দিয়ে কারো প্রচারণা করা যাবে না।
ব্যক্তিগত বাহনে পোস্টার
নির্বাচন বিধিমালায় বলা হয়েছে, নির্বাচনি প্রচারণায় বাস, কার, ট্রাক, ট্রেন, লঞ্চ সব ধরনের যানবাহনে প্রার্থীর কোনো পোস্টার লাগানো যাবে না। কিন্তু পুরান ঢাকার এতিমখানা রোডের এক সরকারি কার্যালয় প্রাঙ্গণে একটি ব্যক্তিগত গাড়িতেও পোস্টার দেখা যায়।
ঢাকার বাইরে প্লাস্টিকে মোড়ানো পোস্টার
নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন সংক্রান্ত বিধিমালায় বলা হয়েছে, পোস্টার বা ব্যানার সাদা-কালো রঙের হতে হবে এবং কাগজের পোস্টার কোনোরূপ পলিথিনে মোড়ানো যাবে না। কিন্তু ঢাকার এক প্রেসে গিয়ে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের পোস্টারে এই বিধিমালা ভঙ্গের নমুনা দেখা যায়।
বিধি ভঙ্গের শাস্তি
নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। শাস্তি হিসেবে অনধিক ছয় মাসের কারাদণ্ড, অনধিক ৫০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে প্রার্থীকে দণ্ডিত করা হতে পারে।