1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তদন্তের নামে নতুন ‘গেম’ কিনা সন্দেহ রোহিঙ্গাদের

১৭ জুলাই ২০১৯

রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা তদন্তের প্রাথমিক প্রক্রিয়া হিসেবে বাংলাদেশ সফর করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রতিনিধিদল৷ তারা বাংলাদেশে অফিস খুলে তদন্ত শুরু করতে চায়৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো রোহিঙ্গারা কি আস্থাশীল?

https://p.dw.com/p/3MCXz
Geflüchtete Rohingya in Bangladesch
ছবি: Reuters/Z. Bensemra

আইসিসির ডেপুটি প্রসিকিউটর জেমস ক্রিকপ্যাট্রিক স্টুয়ার্টের নেতৃত্বে মঙ্গলবার রাতে প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় এসেছে৷ তারা ২১ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবেন৷ বুধবার সকালে তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছেন৷ আইন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে৷ তারা কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও যাবেন৷
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ মাধ্যমকে কিছু জানানো হয়নি৷ তবে বিভিন্ন সূত্রে কথা বলে জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরুর আগে তারা বাংলাদেশে একটি অফিস চালু করতে চায়৷ আর এ নিয়ে একটি চুক্তিও সই করতে ইচ্ছুক তারা৷ তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে চায়৷ জানা গেছে  তাদের নিয়ম অনুযায়ী  সেই চুক্তিটি করতে পরারাষ্ট্র, আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মতি প্রয়োজন৷ তদন্ত চালিয়ে যাওয়া, সাক্ষি সুরক্ষা এবং তদন্তকারীদের কূটনৈতিক সুবিধা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে চুক্তিটি চায় আইসিসি৷
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিতে গণহত্যা ও মানবাবিরোধী অপরাধ হয়েছে বলে বিশ্বাস করার যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাওয়ায় দুই সপ্তাহ আগে আইসিসির কাছে তদন্তের অনুমতি চেয়েছেন আদালতের প্রসিকিউটর ফেতু বেনসুদা ৷ আইসিসি প্রতিনিনিধি দল এর আগে মার্চেও একবার বাংলাদেশে এসেছিল৷
তদন্ত শুরুর এই প্রক্রিয়ার খবর বাংলাদেশে কক্সবাজারে ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গা শরনার্থীরাও পেয়েছেন৷ তারাও জেনেছেন যে আইসিসি প্রতিনিধি দল ক্যাম্পে যাবে৷ রোহিঙ্গাদের কথা, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সাক্ষ্য প্রমাণ যথেষ্ট আছে৷ এগুলো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন বার বার সংগ্রহ করেছে৷ কিন্ত রোহিঙ্গাদের মধ্যে এ নিয়ে আস্থার অভাব আছে৷ বরং তাদের মধ্যে আশঙ্কা এটা নতুন কেনো ‘গেম'-এর অংশ কিনা৷

আমাদের তাই সন্দেহ এই নতুন তদন্ত আবার কোনো গেম কিনা: ইউনূস আরমান

কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা শরনার্থী  ইউনূস আরমান বলেন, ‘‘জাতিসংঘ, ওআইসি, আইসিসি এর আগেও আমাদের এখানে এসেছে৷ ২০১৭ সালে কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদন দেয়া হয়৷ তারা কিন্তু মিয়ানমারের ওপর কোনো চাপ দিচ্ছেনা৷ মিয়ানমারে এখনো রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে৷ তারা আসেন৷ আশ্বাস দেন ৷ চলে যান৷ কোনো কাজ হয় না৷ আমাদের তাই সন্দেহ এই নতুন তদন্ত আবার কোনো গেম কিনা৷''
তিনি বলেন, ‘‘তারপরও আমরা আশাবাদী৷ তারা চাইলে আমরা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ নিয়ে প্রস্তুত আছি৷ মিয়ানমারে ধর্ষণের শিকার নারী ও তাদের সন্তানেরা ক্যাম্পে ক্যাম্পে৷''
নোম্যান্সল্যান্ডে ২০১৭ সালের অগাস্ট থেকে অবস্থান করছেন দিল মোহাম্মদ৷ তিনি বলেন,‘‘এর আগে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি আমাদের কাছে এসেছিল৷ আমরা আমাদের ওপর নির্যাতন ও গণহত্যার কথা বলেছি৷ প্রমাণও দিয়েছি৷ এবার আসবে কিনা জানি না৷ তকে আসলে আমরা তথ্য প্রমাণ দিতে পারব৷''

মিয়ানমারে বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে: ড.মিজানুর রহমান


রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত শুরু হলে তা কতদিন লাগতে পারে তা এখনো নিশ্চিত নয়৷ আর  তদন্ত পদ্ধতি কি হবে তাও জানা যায়নি৷ আন্তর্জাতিক আইনের অধ্যাপক ও মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন,‘‘আইসিসি ৪ ধরণের অপরাধের তদন্ত ও বিচার করে৷ যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা, আগ্রাসন ও শান্তির বিরুদ্ধে মানবাতাবিরোধী অপরাধ৷ মিয়ানমারে বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে৷ আর এই তদন্ত এখন আইসিসি নিজে থেকেই করতে চায়৷ দ্বিপাক্ষিকভাবে মেটানোর কথা বলে বাংলাদেশ মামলা করতে যায়নি৷ এখন বাংলাদেশের উচিত হবে আইসিসিকে সব ধরণের সহায়তা করা৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘বাংলাদেশ সরকারের কাছে যেসব ডকুমেন্ট আছে৷ কোনো বেসরকারি উদ্যোগে যদি কোনো ডকুমেন্ট সংগ্রহ করা হয়ে থাকে তা যাতে আইসিসির তদন্তকারীরা পান সেই সহযোগিতা করতে হবে৷ তাদের স্বাধীন তদন্তে সরকার সহযোহিতা করা উচিত৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য