বাংলাদেশি ‘ক্রীতদাস’ উদ্ধার
১৮ অক্টোবর ২০১৪থাইল্যান্ডের উপকূলবর্তী একটি জঙ্গলে গত সোমবার ওই ৮৯ জন বাংলাদেশিকে পাওয়া যায়৷ উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রির জন্য অপহরণ এবং ভাল চাকরির লোভ দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে জাহাজে করে থাইল্যান্ডে নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে৷
থাই পুলিশ শনিবার তাদের উদ্ধারের পর খোলামেলা একটি ঘরের মধ্যে রেখেছে৷ আবদুর রহিম নামের এক ব্যক্তি উদ্ধার হওয়ার পর গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাদের জঙ্গলে নিয়ে আসার পর কোন খাবার দেয়া হয়নি৷ ১০ দিন ধরে তারা গাছের পাতা খেয়ে বেঁচে ছিলেন৷
তিন সন্তানের বাবা আবসার মিয়া জানিয়েছেন, বাড়ির জন্য তার মন কাঁদছে৷ তিনি স্বজনদের কাছে ফিরতে চান৷
থাই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে থাইল্যান্ডের পর্যটন কেন্দ্র ফুকেটের উত্তরে ফাঙ্গা দ্বীপ থেকে মোট ১৩০ জন বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয়৷
এর আগে গত সপ্তাহে থাইল্যান্ডের সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকায় করে নেয়া মোট ৩১০ জন যাত্রীর মধ্যে ১৭৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন৷ ১৩৪ জনকে আগেই উপকূল থেকে উদ্ধার করা হয়৷ তাদের মধ্যে ১৬ জন রোহিঙ্গা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ তবে শনিবার উদ্ধার করা ৮৯ জন আগে নিখোঁজ ১৭৬ জনের মধ্যে কেউ কি না তা নিশ্চিত করেনি থাই কর্তৃপক্ষ৷
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের একটি সরকারি প্রতিনিধি দল এখন থাইল্যান্ডে রয়েছেন৷ তারা উপকূল থেকে উদ্ধার হওয়া ১৩৪ জনের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করছেন৷ জিজ্ঞাসাবাদে দু'জন - যাদের মধ্যে একজন কিশোরও রয়েছেন - জনিয়েছেন যে তাদের বাংলাদেশ থেকে ‘অপহরণ' করে নেয়া হয়েছে৷ অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাদের অপহরণের পর প্রথমে মাছধরা জাহাজে আটকে রাখে পরে কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর এলাকা থেকে থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল উপকূলের একটি দুর্গম দ্বীপের উদ্দেশে রওয়ানা হয়৷
উদ্ধারকৃতরা জানান, তাদের জঙ্গলে আটকে রেখে ব্যাপক মারধর ও নির্যাতন করা হয়েছে এবং ঠিক মতো খাবারও দেওয়া হয়নি৷
বাংলাদেশের এক কর্মকর্তা থাই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আমরা এ ধরনের ঘটনা আর কখনো ঘটতে দেখিনি৷ কারণ বাংলাদেশ থেকে সাধারণত পাচারের ঘটনা ঘটে না৷
উল্লেখ্য, মানব পাচার প্রতিরোধে থাইল্যান্ডের অবস্থা খুবই নাজুক৷ ২০১৪ সালে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট মানব পাচার ইনডেক্সে থাইল্যান্ডের অবস্থা আরো নামিয়ে টায়ার-৩ এ রেখেছে৷ আর এই ঘটনার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে যে থাইল্যান্ডের দক্ষিণে মানব পাচার রুট পুরোপুরি খোলা রয়েছে এবং পাচারকারীরা সেখানে সক্রিয় আছেন৷