দক্ষিণপন্থিদের হারানোর লক্ষ্যে ফ্রান্সে নতুন কৌশল
৩ জুলাই ২০২৪ফ্রান্সে প্রথম পর্বের নির্বাচনে ৩১ দশমিক চার শতাংশ ভোট পেয়ে শক্তিশালী জায়গায় অতি দক্ষিণপন্থি দল এনআর। এই পরিস্থিতিতে রোববার সেখানে দ্বিতীয় এবং চূড়ান্ত পর্বের ভোট। এই ভোটই নিশ্চিত করবে পার্লামেন্টে কারা ক্ষমতায় আসবে। এই পরিস্থিতিতে অতি দক্ষিণপন্ধিদের হারাতে জোটবদ্ধ হচ্ছে ফ্রান্সের বিরোধী শক্তি। বামপন্থি এবং মধ্যপন্থি দলগুলি একত্রিত হয়ে একটি রিপাবলিকান জোট তৈরি করেছে অঘোষিতভাবে। সেই জোটকে শক্তিশালী করতে এবং ভোট সংঘবদ্ধ করতে প্রায় ২০০ জন প্রার্থী নিজেদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তারা চান, দক্ষিণপন্থি বিরোধী ভোট একই জায়গায় যাক।
প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর মধ্য়পন্থি দল এবং বামপন্থিরা একত্রিত ভাবে ৩৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে প্রথম পর্বে। তাদের আশা দ্বিতীয় পর্বে এর চেয়েও বেশি ভোট পেয়ে তারা পার্লামেন্টে নিম্নকক্ষের ক্ষমতা নিজেদের হাতে রাখতে পারবে।
এখনো পর্যন্ত ২১০ জন মাক্রোঁপন্থি এবং বামপন্থি প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। তারা জানিয়েছেন, ভোট সংঘবদ্ধ করার জন্য়ই এই কৌশল তারা নিয়েছেন। ফরাসি পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে আসন সংখ্যা ৫৭৭। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য় প্রয়োজন ২৮৯টি আসন। প্রথম পর্বের ভোটের পর বুথ ফেরত সমীক্ষা দেখিয়েছে, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও তার ধারেকাছে আছে দক্ষিণপন্থি এনআর। তারাও ছোট ছোট দলগুলির সঙ্গে জোট তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে।
এর আগে এনআর-এর ঝুলিতে ছিল মাত্র ১৪ শতাংশ ভোট। রাতারাতি সেই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বাড়িয়ে ফেলেছে তারা। প্রথম রাউন্ডের নির্বাচনে ৭৬ জন প্রার্থী ইতিমধ্যেই নির্বাচিত হয়ে গেছেন। এদের অধিকাংশই অতি দক্ষিণপন্থি বা অতি বামপন্থি। বাকি ৫০১টি আসনের ভাগ্য নির্ধারিত হবে রোববার। সেখানে একেকটি আসনে তিন বা চারজন করে প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ভোট ভাগাভাগি কমাতে ওই আসনগুলি থেকেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন ২১০ জন প্রার্থী। তারা চাইছেন, তাদের ভোটও দক্ষিণপন্থি বিরোধী শিবিরে যাক।
বুথ ফেরত সমীক্ষায় দক্ষিণপন্থিরা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও তার খুব কাছাকাছি থাকছে। এই পরিস্থিতিতে তাদের নেতা লা পেন জনগণের কাছে আরো বেশি সমর্থনের আর্জি জানিয়েছেন। যদি কোনোভাবে দক্ষিণপন্থিরা ক্ষমতায় চলে আসেন, তাহলে এক আশ্চর্য পরিস্থিতি তৈরি হবে ফ্রান্সে। মধ্যপন্থি প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর সঙ্গে সমঝোতা করে সরকার চালাতে হবে তাদের। কারণ, মাক্রোঁর সময় শেষ হবে ২০২৭ সালে।
বুথ ফেরত সমীক্ষার ফালফল সামনে আসার পর ফ্রান্সজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। রাস্তায় নেমে দক্ষিণপন্থিদের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন প্রতিবাদীরা। তাদের বক্তব্য, দক্ষিণপন্থিরা জিতে গেলে ফ্রান্সের মূল স্পিরিটটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এসজি/জিএইচ (এএফপি, রয়টার্স)