‘নশ্বর' ইউরোপের চ্যালেঞ্জের কথা বললেন শলৎস ও মাক্রোঁ
২৮ মে ২০২৪ইউরোপের চালিকাশক্তি হিসেবে পরিচিত দুই দেশ জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যে সম্পর্ক সাম্প্রতিক কালে অনেক ঝড়ঝাপটার মধ্য দিয়ে গেছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর ব্যক্তিগত সমীকরণের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা গেছে৷ ফলে কঠিন সংকটের সময়ে ইউরোপের দিশা নিয়ে সংশয় বাড়ছে৷ কিন্তু জার্মানিতে মাক্রোঁর রাষ্ট্রীয় সফরে দুই নেতা আবার একই সুরে কথা বলে কিছুটা স্বস্তি আনলেন৷
ফিনান্সিয়াল টাইমস সংবাদপত্রের জন্য এক যৌথ লেখায় শলৎস ও মাক্রোঁ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন৷ তাঁদের মতে, প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে এই রাষ্ট্রজোটকে নাটকীয় মাত্রায় উদ্যোগ নিতে হবে৷ বিশেষ করে কার্বনের উপর অর্থনৈতিক নির্ভরতা কমানো বড় চ্যালেঞ্জ বলে দুই নেতা মনে করেন৷ কিন্তু এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণের বদলে প্রত্যেক সদস্য দেশকে নিজস্ব পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে৷ ফলে ফ্রান্সের ক্ষেত্রে পরমাণু শিল্পখাত বাড়তি সুবিধা পাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ শলৎস ও মাক্রোঁ ইইউ পর্যায়ে একক আর্থিক বাজার সৃষ্টির উদ্যোগ চূড়ান্ত করতে দেউলিয়া আইন, কর বিনিয়োগ কাঠামো চালু করার আহ্বান জানান৷ তাঁদের মতে, ‘আমাদের ইউরোপ আসলে নশ্বর৷ তাই আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে৷''
ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস সংসদে সেই ঘটনাকে জার্মানির প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে ‘সাইটেনভেন্ডে' বা যুগান্তকারী পরিবর্তন হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন৷ মাক্রোঁ সেই শব্দটিকে বৃহত্তর অর্থে প্রয়োগ করে লেখেন, গত পাঁচ বছরে করোনা মহামারি, ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার চলমান হামলা বা একাধিক ভূ-রাজনৈতিক রদবদল সেই পরিবর্তন তুলে ধরছে৷
আসন্ন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে শলৎস ও মাক্রোঁ ইউরোপীয় ইউনিয়নের একক সাধারণ বাজার আরো মজবুত করার আহ্বান জানান৷ গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের জোগানের ক্ষেত্রে বহির্বিশ্বের উপর নির্ভরতা কমিয়ে ইউরোপে বিনিয়োগ আরো বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছেন দুই শীর্ষ নেতা৷ মঙ্গলবার বার্লিনের কাছে মেসেব্যার্গে শলৎস ও মাক্রোঁর নেতৃত্বে দুই দেশের মন্ত্রিসভার যৌথ বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরো অগ্রগতির আশা করা হচ্ছে৷ জার্মানিতে ২৪ বছর পর কোনো ফরাসি প্রেসিডেন্টের রাষ্ট্রীয় সফরকে ঘিরে বিশেষ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)