1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সৌরশক্তি থেকে বৈদ্যুতিক গাড়ি

৩ এপ্রিল ২০১৮

কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে একদিকে যেমন দারিদ্র্য ও অনগ্রসরতা, অন্যদিকে তেমন গার্ডেন সিটির মতো আবাসিক এলাকায় কার পার্কের মাথায় সোলার প্যানেল বসানো; আবার রেস্টুরেন্টের ময়লা বেসমেন্টে নিয়ে গিয়ে আলাদা করা হয়৷

https://p.dw.com/p/2vMi6
Mercedes Benz F015
ছবি: Reuters/S. Marcus

সকালে চায়ের জল গরম করার সময়েও আইদা মুনেনের মুখে হাসি ফোটে – কেননা তাঁর ফ্ল্যাটে গরম পানির খরচ ৩০ শতাংশ কমে গেছে, যা খুব কম নয়৷ গত বছরের শেষদিক থেকে মুনেনে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির উত্তরে অবস্থিত গার্ডেন সিটি-তে বাস করছেন৷ অভিজাত, উচ্চবিত্ত এলাকা৷ এখানে যুগপৎ পরিবেশ সুরক্ষা ও বাসিন্দাদের খরচ কমানোর একটি নতুন উদ্যোগ চলেছে৷

আবাসিক এলাকাটির আসে কাছের একটি বহুতল কার পার্কের ছাদ থেকে৷ ব্যবসায়ী ও ফ্ল্যাটের মালিক আইদা রজব মুনেনে জানালেন, ‘‘দিনে ভালো রোদ্দুর থাকলে গোটা ফ্ল্যাটে গরম পানির ব্যবস্থা হয়ে যায়৷ আকাশে মেঘ থাকলে হিটার কাজ করে ও তা থেকে গরম পানি পাওয়া যায়৷ তবে সাধারণত আমাদের হিটার ব্যবহার করার দরকার পড়ে না৷ সূর্যের আলো থেকেই সারা ফ্ল্যাটে পানি গরম হয়ে যায়৷''

যে শহরে সবই পাবেন

 গার্ডেন সিটি একটি আদর্শ পরিবেশবান্ধব প্রকল্প – যেমন তার নকশা ও নির্মাণে, তেমনই তার আবর্জনা ফেলার ব্যবস্থায়৷ আবাসিক এলাকায় প্রতিদিন যে ময়লা ফেলা হয়, তার সবটা গিয়ে জমা হয় পাশের গার্ডেন সিটি শপিং সেন্টারে – যেখানে অবস্থাপন্নেরা বাজার করে থাকেন৷

শপিং সেন্টারের বাড়িটি কেনিয়ার সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব ভবনগুলির মধ্যে গণ্য, বলে তার ম্যানেজারের দাবি৷ প্লাস্টিকের কাপ, স্ট্র, প্যাকেজিং, রেস্টুরেন্ট থেকে ফেলা খাবারদাবার, সব গিয়ে জমা হয় শপিং সেন্টারের বেসমেন্টে৷ সেখানে হাতে করে বিভিন্ন ধরনের ময়লা আলাদা করা হয়৷ কার্ডবোর্ড আর কার্টনগুলি যায় কাগজের স্তূপে; টি-ব্যাগ যায় অরগ্যানিক ময়লা ফেলার বিন-এ; পানীয়ের ক্যান যায় ধাতুর দিকে; পিইটি বোতলগুলো জমা হয় প্লাস্টিক হিসেবে – প্রচুর কাজ৷

শেখা ও শেখানো

গার্ডেন সিটি শপিং সেন্টারের ম্যানেজার এডউইন মুগাম্বি বললেন, ‘‘এদেশে আমরা এখনও শিখছি: কাজেই আমাদের গ্রাহকরা সব কিছু মিশিয়ে ফেলেন, যে কারণে আমাদের হাতে করে সব কিছু আলাদা করতে হয়৷ কিন্তু আমরা গ্রাহকদের ক্রমাগত সচেতন করছি, বর্জ্য আলাদা করার শিক্ষা দিচ্ছি৷ কাজেই আমরা এক বছরের মধ্যে বর্জ্য আলাদা করার প্রাথমিক পর্যায়ে পৌঁছে যাব বলে আমাদের আশা৷''

পার্কিং গ্যারেজের ছাদে প্রায় ৩,০০০ সোলার প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ সোলার ইনস্টলেশনটি আফ্রিকার বৃহত্তম সোলার ইনস্টলেশনগুলির মধ্যে পড়ে৷ এছাড়া সোলার প্যানেলের ছাদের নীচে রাখা গাড়িগুলোও গরম হয় না৷ আর একটা সুবিধেও আছে, বলে মুগাম্বি অভিমত প্রকাশ করলেন: ‘‘সোলার প্যানেলের চাহিদা যতো বাড়বে, তাদের দামও ততো কমবে, যার ফলে আরো অনেক মানুষ সেগুলো কিনতে পারবেন ও প্রকৃতিদত্ত সূর্যালোক ব্যবহার করে নিজেদের বাড়িতে বিদ্যুৎ পেতে পারবেন৷''

বিনিয়োগের অর্থ আসে ও মুনাফা যায় শিল্পোন্নত দেশে

কেনিয়ায় বাড়ির ছাদে সোলার প্যানেল এখনও খুব কমই দেখা যায়৷ শপিং সেন্টারের কার পার্কের সোলার ইউনিটের টাকাও এসেছে শিল্পোন্নত দেশগুলির বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে৷ যে কারণে প্রকল্পের আর্থিক মুনাফা কেনিয়ায় থাকে না৷ ক্রসবাউন্ডারি সংস্থার ম্যানেজিং পার্টনার ম্যাট টিলিয়ার্ড জানালেন, ‘‘আমাদের বিনিয়োগকারীরা সবাই অ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যে থাকেন৷ আমাদের সোলার ফান্ড ও অন্যান্য বিনিয়োগের জন্য পূর্ব আফ্রিকা থেকে পুঁজি সংগ্রহ করতে পারলে খুবই ভালো হতো, কিন্তু বাস্তব এই যে, আসল পুঁজি শিল্পোন্নত দেশগুলিতেই রয়েছে৷ কাজেই বাইরে থেকে পুঁজি আনা ভবিষ্যতেও আমাদের কাজের একটা বড় অঙ্গ থাকবে৷''

আগামীতে গার্ডেন সিটি শপিং সেন্টারের কার পার্কের প্রতিটি সোলার পার্কিং স্পটে ইলেকট্রিক কার-এর জন্য চার্জিং স্টেশন থাকবে – আফ্রিকায় যা অভিনব বললেও কম বলা হয়৷

আইদা রজব মুনেনের মতে, ‘‘বিশেষ করে নাইরোবির বিজনেস এলাকায়  যদি বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য আরো বেশি ব্যাটারি চার্জ করার স্টেশন থাকত,তাহলে বেশ ভালো হতো৷ অন্য সব শপিং মল-গুলোও সেই ব্যবস্থা করতে পারে – তাহলে খুব ভালো হয়, বলে আমার ধারণা৷ নাইরোবিতে প্রচুর যানবাহন, কাজেই বেশি ইলেকট্রিক কার চললে বায়ুদূষণও কম হবে৷''

মানুয়েল ওসারকেস/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য