নিরাপত্তা পরিষদে সিরিয়ার বিরুদ্ধে নতুন খসড়া প্রস্তাব
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১১সিরিয়ায় সরকারি বাহিনীর দমন-পীড়ন বন্ধে দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অনুমোদনের জন্য একটি নতুন খসড়া প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে৷ এর একটি কপি মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা এএফপি'র কাছেও পৌঁছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং পর্তুগাল এই খসড়া প্রস্তাব তৈরি করে৷ কিন্তু চীন এবং রাশিয়া এটি অনুমোদনে ভেটো দেবে এমন হুমকির কারণে নতিন প্রস্তাবে দেখা যাচ্ছে কিছুটা নরম সুর৷ অবশ্য এই প্রস্তাবটির পক্ষে সমর্থন বাড়বে বলে আশা করছেন ইউরোপীয় কূটনীতিকরা৷ এই প্রস্তাবের বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইউরোপীয় এক কূটনীতিক বলেন, ‘‘সেখানকার নির্যাতনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদের শক্ত অবস্থান জরুরি৷'' অপর এক কূটনীতিক বলেন, ‘‘নিরাপত্তা পরিষদে এই প্রস্তাবের পক্ষে শীঘ্রই সংখ্যা গরিষ্ঠতা লাভ করা সম্ভব হবে বলে আশা রয়েছে৷''
সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দামেস্ক প্রশাসনের হত্যা ও নির্যাতন নীতির বিরুদ্ধে সপ্তমবারের মতো কড়া উদ্যোগ নিল৷ ইইউ ইতিমধ্যে সিরিয়ার ৫৬ জন শীর্ষ নাগরিক এবং ১৮ টি দপ্তরকে কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে৷ তাদের উপর ইউরোপ সফরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং তাদের সম্পদ আটকে দিয়েছে ইইউ৷ ইইউ'এর পাশাপাশি মার্কিন প্রশাসনও আসাদ সরকারের দমন-পীড়ন বন্ধে তিন দফা পদক্ষেপ নিয়েছে৷ এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও সিরীয় নেতা আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন৷ তবে সিরিয়ায় গত মার্চ থেকে চলমান বিক্ষোভ-আন্দোলন নিয়ে মাত্র একবার বিবৃতি দিয়েছে চীন ও রাশিয়া৷
পশ্চিমা গোষ্ঠীর এসব পদক্ষেপের প্রভাব সিরিয়ার উপর পড়তে শুরু করেছে৷ যার সাম্প্রতিক প্রমাণ পাঁচ শতাংশের বেশি শুল্ক বিশিষ্ট সকল পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করার সিরীয় সিদ্ধান্ত৷ আসাদ প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় খুব আশ্চর্য হলেও দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আদিব মায়ালেহ বলছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে সিরিয়া বার্ষিক ৪.৪ বিলিয়ন ইউরো বাঁচাতে পারবে৷ তিনি আরো জানান, সিরিয়ার বর্তমান সংরক্ষিত মুদ্রা তহবিল ১৭ বিলিয়নেরও বেশি এবং এটির সুরক্ষার জন্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবেই সরকার আমদানির উপর এই সীমা টেনে দিয়েছে৷ তবে সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে গাড়ি, আবাসন, আসবাবপত্র, পোশাক এবং কিছু খাদ্য সামগ্রীর দাম চড়তে শুরু করেছে৷ তাই স্থানীয় পণ্যের উপরই বেশি করে নির্ভর করতে হবে এমন উদ্বেগ ও অভিযোগ শোনা যাচ্ছে দেশটির সাধারণ মানুষের মাঝে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ