নির্বাচন কমিশনের সংলাপের লক্ষ্য কী?
২৪ মার্চ ২০২২তবে নির্বাচন কমিশন মনে করে আলোচনা খুব ভালো হচ্ছে৷ এই আলোচনা থেকে তারা গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ পাচ্ছেন, যা তাদের কাজে লাগবে৷
দায়িত্ব নেয়ার পরপরই হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন সংলাপে মনেযোগী হয়েছে৷ ১৩ মার্চ তারা প্রথম সংলাপ করেন শিক্ষাবিদদের সঙ্গে৷ প্রথম দিনের সংলাপে আমন্ত্রিত ৩০ জন শিক্ষাবিদের মধ্যে ১৩ জন অংশ নেন৷ ২২ মার্চ দ্বিতীয় দফা সংলাপ হয় বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে৷ সেখানে আমন্ত্রিত ৩৯ জনের মধ্যে ১৭ জন অংশ নেন৷ দুইটি সংলাপেই ৫০ ভাগেরও কম আমন্ত্রিত অংশ নিয়েছেন৷
সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে এবার নির্বাচন কমিশনের সংলাপের উদ্দেশ্য সুনিদিষ্ট নয়, টার্গেটেড নয়৷ তারপরও প্রত্যেক আলোচনার মধ্য দিয়ে জ্ঞান অর্জন হয়৷ এবারও কিছু বিষয় এসেছে৷ চাইলে নির্বাচন কমিশন তা কাজে লাগতে পারে৷’’
তিনি মনে করেন, ‘‘সবাই সংলাপে না এলেও যারা এসেছেন, তারা কম গুরুত্বপূর্ণ নয়৷ তারা ভালো কিছু পরামর্শ দিয়েছেন৷ বাকিরা হয়ত দেশে ছিলেন না বা নানা কাজে ব্যস্ত ছিলেন, তাই আসেননি৷’’
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশন এই আলোচনার মধ্য দিয়ে কী জানতে চান, তাদের উদ্দেশ্য কী, সেটা স্পষ্ট নয়৷ তিনি বলেন, ‘‘আলোচনার কোনো বিষয় নেই৷ যে যার মতো কথা বলছেন৷ যা ভালো মনে করছেন তাই বলছেন৷ কিন্তু কমিশনের তো একটা টার্গেট থাকতে হবে৷ এই আলোচনা থেকে তারা কী পেতে চান তা তো নির্দিষ্ট হতে হবে৷’’
তার মতে, হোম ওয়ার্ক না করেই এই আলোচনা শুরু করা হয়েছে৷ ফলে আগ্রহও কম দেখা যাচ্ছে৷ নির্বাচনি আইন, সমস্যা কোথায়, সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা কোথায়- এই বিষয়গুলো নিয়ে আগে কাজ করা দরকার৷ তারপর এসব বিষয় নিয়ে পরামর্শ নিলে ভালো হতো৷ এখন তারা যা আলোচকদের কাছ থেকে শুনছেন তা কোন কাজে লাগাবেন? আদৌ কি কোনো কাজে লাগানো হবে? নাকি শুধু আলোচনার জন্য আলোচনা?
তিনি বলেন, ‘‘সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা তো সবাই বলে৷ ওনারাও বলেন৷ এই বলাই তো যথেষ্ট নয়৷ সেটা কীভাবে করা যায় তা সুনির্দিষ্ট করতে অ্যাজেন্ডা ঠিক করে আলোচনা প্রয়োজন৷ নয়তো এতে কোনো ফল আসবে বলে মনে হয় না৷’’
তার কথা, ‘‘তারপরও আলোচনা ভালো৷ প্রত্যেক নির্বাচন কমিশনই সংলাপ করেছে৷ কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে আমন্ত্রিতদের ৫০ ভাগেরও কম আসছেন৷ আসলে এভাবে কার্ড পাঠিয়ে দাওয়াত দিলে হয় না৷ সত্যিকারের যোগাযোগ করতে হয়৷’’
নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান জানান, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে তৃতীয় সংলাপ হবে৷ কতগুলো সংলাপ হবে তা এখনো ঠিক হয়নি৷ তবে সবার শেষে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ হবে৷
তিনি বলেন, ‘‘এই সংলাপ থেকে পাওয়া পরামর্শ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অবশ্যই নির্বাচন কমিশন কাজে লাগাবে৷ সেজন্যই এই সংলাপ৷’’ তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘৫০ ভাগেরও কম আমন্ত্রিত সংলাপে আসছে এই তথ্য ঠিক না৷ প্রথমে আমন্ত্রণ জানানোর পর যারা কনফার্ম করেন, তাদের চূড়ান্ত আমন্ত্রণ জানানো হয়৷ আর আমাদের আমন্ত্রণে যারা আসছেন, তারা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি৷’’
৭ জানুয়ারির ছবিঘরটি দেখুন...