পাকিস্তানের ‘মরিচের রাজধানীতে’ কৃষকের হাহাকার
নেয়ার কুনরি শহরকে অনেকে চেনেন পাকিস্তানের ‘মরিচের রাজধানী’ হিসেবে৷ কিন্তু সেই রাজধানীর কৃষকেরাই এখন বিপর্যস্ত৷ প্রথমে দীর্ঘ খরা, তারপর ভয়াবহ বন্যায় প্রায় সব গাছ এবং মরিচ পচে শেষ৷ দেখুন ছবিঘরে...
পাকিস্তান ও মরিচ
বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ মরিচ উৎপাদনকারী দেশ পাকিস্তান৷ প্রতিবছর পাকিস্তানের কৃষকরা দেড় লাখ একর (৬০ হাজার ৭০০ হেক্টর) জমিতে গড়ে অন্তত এক লাখ ৪৩ হাজার টন মরিচ উৎপাদন করেন৷
খরা আর বন্যায় বিপর্যস্ত কুনরি
পাকিস্তানে সবচেয়ে বেশি মরিচ চাষ হয় দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর নেয়ার কুনরিতে৷ কিন্তু সেই শহরেই এখন দেখা দিয়েছে মরিচের আকাল৷ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে গত কয়েকবছর ধরে সেখানে খরা লেগেই থাকে৷ তাপমাত্রাও থাকে বেশি৷ এসব কারণে মরিচের ফলন কমছিল৷ তার ওপর গত আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে আসে বন্যা৷ পানিতে তলিয়ে যায় শত শত একর জমির মরিচ৷
কৃষকের মাথায় হাত
মরিচ চাষি লেমান রাজ প্রাকৃতিক দুর্যোগে সব হারানোর কথা জানাতে গিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘‘আমার ফসলের বড় রকমের ক্ষতি করেছিল খরা৷ খরার পর শুরু হলো প্রবল বৃষ্টি৷ আবহাওয়া পুরোপুরি বদলে গেল৷ বৃষ্টির কারণে শুরু হলো বন্যা৷ এখন দেখুন আমার মরিচগুলোর কী অবস্থা হয়েছে...৷’’৪০ বছর বয়সি লেমান রাজ হাতে নিয়ে দেখালেন মরিচ গাছ আর মরিচগুলোর পানিতে পচে কী অবস্থা হয়েছে৷
বাজারে ঘাটতি
কুনরির পাইকারি বাজার মির্চ মান্ডিতেও দেখা দিয়েছে মরিচের ঘাটতি৷ মরিচ ব্যবসায়ী রাজা দাইম বললেন, ‘‘ গত বছরের এই সময়ে এই বাজারে কমপক্ষে আট হাজার থেকে দশ হাজার বস্তা মরিচ ছিল৷ অথচ এই বছর সব মিলিয়ে দুই হাজার বস্তাও আছে কিনা সন্দেহ৷ কাল-পরশুর মধ্যে মরিচ আরো কমে যাবে৷’’
কী করণীয়?
পাকিস্তানে সাম্প্রতিক বন্যায় ৪০ বিলিয়ন ডলারের সমমূল্যের সম্পদ নষ্ট হয়েছে৷ কৃষিনির্ভর অর্থনীতির দেশটির বিপর্যয় কাটাতে হলে কৃষিখাতকে আবার চাঙ্গা করতে হবে৷পাকিস্তান এগ্রিকালচারেল রিসার্চ কাউন্সিলের পরিচালক মনে করেন, ‘‘বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে হলে জরুরি ভিত্তিতে খুব বড় ধরনের পরিকল্পনা নিতে হবে৷’’ মরিচ ক্ষেতে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করার বিষয়ে সরকারকে মনযোগী হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষিবিজ্ঞানীরা৷