পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা
১৩ আগস্ট ২০২১ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নারী পুলিশ পরিদর্শকের অভিযোগ, ২০১৯ সালে সুদানের দারফুরে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে থাকাকালে এবং পরে দেশে ফেরার পর ঢাকার উত্তরার একটি হোটেলে তাকে কয়েক দফা ধর্ষণ করেন পুলিশ কর্মকর্তা মোক্তার৷
অভিযোগকারী পুলিশ পরিদর্শক বৃহস্পতিবার ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলার আবেদন করলে বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহার প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে তার জবানবন্দি শোনেন৷ পরে তিনি অভিযোগটি সরাসরি এজাহার হিসাবে গণ্য করতে ঢাকার উত্তরা পূর্ব থানাকে নির্দেশ দেন বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার মো. জাফর হোসেন জানান৷
অভিযোগটি ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয় জানিয়ে উত্তরা বিভাগের উপ কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, "আদালত থেকে কাগজ পাওয়ার পর মামলা হয়েছে৷ এখন আসামিকে গ্রেপ্তারসহ আইনগত যত বিষয় আছে আমরা দেখছি৷”
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে রাষ্ট্রপক্ষের পিপি আফরোজা ফারহানা অরেঞ্জ জানান, অভিযুক্ত পুলিশ সুপার মোক্তার হোসেন এখন বাগেরহাটে কর্মরত৷ মোক্তার হোসেনকে কয়েক দফা ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি৷
পিপিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "এখন মামলা হয়েছে, সে অনুযায়ী তদন্ত হবে৷ তদন্তেই সব জানা যাবে৷” তিনি আরো বলেন, "যিনি মামলা করেছেন, তিনি মামলা করার আগে পিবিআইতে কোনো অভিযোগ করেননি৷”
বাদী তার আর্জিতে লিখেছেন, ২০১৯ সালের মে মাসে সুদানের দারফুরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে যান পুলিশ সুপার মোক্তার হোসেন৷ তার আগে থেকেই বাদী ওই মিশনে ছিলেন৷ মোক্তার হোসেন তার ‘সহযোগিতা নেওয়ার নাম করে' তার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন৷ এক পর্যায়ে বিভিন্ন অজুহাতে তার বাসায় যাতায়াত শুরু করেন৷ ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর দুপুরে তার বাসায় তাকে ‘ধর্ষণ করেন' তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মোক্তার হোসেন৷ সেই ঘটনার বিবরণও মামলার আবেদনে তুলে ধরেছেন বাদী৷
মোক্তার হোসেন ধর্ষণের ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য ‘হুমকি দিয়ে' সেদিন চলে যান৷ পরে ২২ ডিসেম্বর আবারও বাদীর বাসায় গিয়ে প্রথমে ‘ভুল হয়েছে বলে ক্ষমা চান এবং আবারও ‘ধর্ষণ' করেন৷ আসামি বাদীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়েছিলেন৷ পরে ছুটিতে দেশে ফিরে ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ‘বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে' ঢাকার উত্তরার একটি হোটেলে নিয়ে তাকে আবারও ‘ধর্ষণ' করেন বলে বাদীর দাবি৷
সুদানের খার্তুমের একটি হোটেলে ওই বছরের ২৬ জুন থেকে ৩০ জুন এবং ১০ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর ঢাকার উত্তরার ওই হোটেলে ৩০৬ নম্বর কক্ষে আবারো তাকে ‘ধর্ষণ' করা হয় বলে অভিযোগ বাদীর৷
দেশে ফেরার পর বাদী বিয়ে নিবন্ধনের তাগিদ দিলে আসামি ‘তালবাহানা' শুরু করেন৷ ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল বাদী রাজারবাগে আসামির বাসায় উপস্থিত হয়ে বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে বললে আসামি ‘অস্বীকৃতি' জানান৷ এবং সেদিন আসামির স্ত্রী এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা বাদীকে ‘মারধর করেন' বলেও আর্জিতে অভিযোগ করা হয়েছে৷
মহামারির কারণে আদালত বন্ধ থাকায় মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে আর্জিতে উল্লেখ করেছেন বাদী৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)