প্যারট ফিশ
৩০ জুন ২০১৫জুসন কাজুয়েরো, যারা ডাক নাম জা, দু'ঘণ্টা চেষ্টা করে অল্প কিছু মাছ ধরেছেন৷ দুঃখের বিষয় সবগুলো মাছই ছোট, একটিও প্রাপ্তবয়স্ক নয়৷ এগুলো বেচে তার নৌকার তেল খরচ উঠবে কিনা সন্দেহ আছে৷
প্যারট ফিশ ধরা জা-এর জন্য অন্য মাছ ধরার চেয়ে তিনগুন বেশি লাভজনক৷ এগুলোর মাংস বেশি নরম নয়, ফিলেট হিসেবে চমৎকার৷ এসব মাছের মাংস ছাড়া বাকিটা তার দরকার হয়না৷
তবে পরিবেশবিদরা উদ্বিগ্ন৷ গত এক দশক ধরে কনসারভেশন ইন্টারন্যাশনাল গবেষণা করছে, কেন প্রবাল প্রাচীর ব্যাপক ক্ষতির শিকার হচ্ছে৷ দীর্ঘ সময় এটা ভাবা হয়েছিল পানির পিএইচ লেভেলের কারণে হয়ত এটা হচ্ছে৷ কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে শুধুমাত্র প্যারট ফিশের অভাবের কারণে এটা হচ্ছে৷
ব্রাজিলের শীর্ষ রিফ বিশেষজ্ঞরা এখন বুঝতে পেরেছেন প্রবাল প্রাচীর রক্ষা করতে চাইলে প্যারট ফিশও বাঁচাতে হবে৷ ১০০ কিলোমিটার লম্বা আব্রোলোস হচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় প্রবাল প্রাচীর৷ এই ট্যুরে দু'টো প্রাচীর পরীক্ষা করা হচ্ছে৷ এদের একটিতে মাছ ধরা যায়৷ অন্যটিতে নিষিদ্ধ৷
রোনাল্ডো ফ্রান্চিনি এখনকার পানি মনিটর করছেন৷ তিনি মাছের প্রজাতি, প্রবাল শ্রেণি এবং শ্যাওলার ঘনত্বের হিসেব রাখছেন৷ তিনি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন, যে এখানে সম্প্রতি ব্যাপক হারে মাছ ধরা হয়েছে৷
প্যারট ফিশ জা-এর মতো জেলেদের জীবনে সচ্ছলতা এনে দিয়েছে৷ এখন তারা এটা হারাতে চান না৷ তারা এখন তাদের নৌকার জন্য ইঞ্জিন কিনতে পারেন৷ ফলে দ্রুত তীরে ফিরে আসা যায়৷ ১৫ বছর আগে জা-এর বাবা ইউসুফ প্রথম প্যারট ফিশ ধরা শুরু করেন৷ তিনি বলেন, শুরুর দিকে পর্যাপ্ত বড় মাছ ছিল৷ পরবর্তীতে সেগুলো খাওয়া ফ্যাশনে পরিণত হয়৷
অন্যদের মতো জা-ও জানেন ৫০ সেন্টিমিটার বড় না হওয়া পর্যন্ত এ সব মাছ প্রজনন ক্ষমতা অর্জন করে না৷ তবে বাকি সবার মতো তিনিও মনে করেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা মোটেই সমাধান হতে পারে না৷ তবে শেষ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আসতেও পারে৷ গবেষকরা এমন এক জায়গায় গিয়েছেন যেখানে পাঁচ বছর আগে মাছ শিকার নিষিদ্ধ হয়৷ শুরুতে তারা বড় মাছ দেখেননি৷ কিন্তু পরে বুঝতে পারেন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে৷ এখানে প্রাপ্তবয়স্ক মাছ রয়েছে৷ নিষেধাজ্ঞায় মনে হচ্ছে কাজ হয়েছে৷
স্বাস্থ্যবান প্রবাল প্রাচীর দেখতে সুন্দর৷ এটা এমন জায়গা যেখানে প্যারট ফিশ নিরাপদে বাড়তে পারে৷ সব জায়গা এমন করতে চাইলে অনেক কাজ এবং ধৈর্য্য প্রয়োজন৷ আর সে কাজ পানির চেয়ে মাটিতে বেশি৷