প্রধানমন্ত্রী হত্যাচেষ্টায় যুক্ত সকলেরই কারাদণ্ড
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১দেড় যুগ আগের তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার এই ঘটনায় সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব এবং বিএনপিকর্মী আরিফুর রহমান ও রিপনকে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে৷
কলারোয়া উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের বাচ্চুকে নয় বছর এবং বাকি ৪৬ জনকে দুই থেকে সাত বছরের সাজা দিয়েছে আদালত৷ ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম৷
বৃহস্পতিবার সকালে সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারক হাকিম হুমায়ুন কবীর জনাকীর্ণ এজলাসে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন৷ কারাগারে থাকা আসামিদের ৩৪ জন রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন৷ বাকি ১৬ জনকে পলাতক দেখিয়ে মামলার বিচার কাজ চলে, দণ্ডিত সকলেই বিএনপি নেতাকর্মী৷
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী এবং আসামি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের স্ত্রী শাহনাজ পারভিন বকুল বলেন, ‘‘এটা সাজানো, আমরা হাই কোর্টে যাব৷ আমরা সেখানে নিশ্চয় ন্যায্য বিচার পাব৷'' রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর বলেন, ‘‘আমরা সন্তুষ্টও না, অসন্তুষ্টও না৷ রায় পর্যবেক্ষণ করে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব৷''
হাই কোর্ট গতবছর অক্টোবরে তিন মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিলে নভেম্বরে ফের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়৷
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আদালত এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়৷ রায়ের পর আদালতের বাইরে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল করেন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা৷
যা ঘটেছিল
২০০২ সালে এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ‘ধর্ষণের শিকার' হলে ওই বছর ৩০ অগাস্ট শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে তাকে দেখে মাগুরায় যাওয়ার পথে তার গাড়িবহরে এই হামলার ঘটনা ঘটে৷ কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়া হয়৷ শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাসহ স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাংবাদিকরা সেদিন আহত হন৷ হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনের পৃথক ধারায় দেওয়া তিনটি অভিযোগপত্রের মধ্যে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় হল বৃহস্পতিবার৷ বাকি দুটি মামলা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন৷
দণ্ডিত যারা
মামলায় দণ্ডিত কারাগারে থাকা আসামিরা হলেন- সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আশরাফ হোসেন, নজরুল ইসলাম, মো. আব্দুর রাজ্জাক, শেখ তামিম আজাদ মেরিন, মো. আব্দুর রকিব মোল্যা, মো. আক্তারুল ইসলাম, মো. আব্দুল মজিদ, মো. হাসান আলী, ময়না, মো. আব্দুস সাত্তার, তোফাজ্জেল হোসেন সেন্টু, মো. জহুরুল ইসলাম, গোলাম রসুল, অ্যাডভোকেট মো. আব্দুস সাত্তার, আব্দুস সামাদ, মো. আলতাফ হোসেন, শাহাবুদ্দিন, মো. সাহেব আলী, সিরাজুল ইসলাম, রকিব, ট্রলি শহীদুল, মো. মনিরুল ইসলাম, শেখ কামরুল ইসলাম, ইয়াছিন আলী, শেলী, শাহিনুর রহমান, দিদার মোড়ল, সোহাগ হোসেন, মাহাফুজুর মোল্লা, আব্দুল গফফার গাজী, রিঙ্কু, অ্যাডভোকেট মো. আব্দুস সামাদ, টাইগার খোকন ওরফে বেড়ে খোকন৷
আর আব্দুল কাদের বাচ্চু, মফিজুল ইসলাম, মো. আলাউদ্দিন, খালেদ মঞ্জুর রোমেল, আরিফুর রহমান, রিপন, ইয়াছিন আলী, রবিউল ইসলাম, মাজাহারুল ইসলাম, আব্দুল খালেক, আব্দুর রব, সঞ্জু, নাজমুল হোসেন, জাবিদ রায়হান লাকী, কণক, মো. মাহাফুজুর রহমান পলাতক আসামি৷
এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)