1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
ব্যবসা-বাণিজ্য

প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা: যাদের বেশি দরকার তারাই অবহেলিত

৫ এপ্রিল ২০২০

প্রধানমন্ত্রীর ধারণকৃত সংবাদ সম্মেলন অনলাইনে অধীর আগ্রহে শুনলাম৷  ক্রান্তিলগ্ন পার করা বাংলাদেশের অনেকেই নিশ্চয়ই প্রত্যাশা নিয়ে বসেছিলেন এই দুর্যোগে আশ্বস্ত হবার জন্য৷

https://p.dw.com/p/3aTsi
Bangladesch Töpferei
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman

রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য আগেই পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ দুই ভাগ সুদে যা ঋণ হিসেবে পাবেন উদ্যোক্তারা৷ তবে গত দুই দিনের ঘটনা আর সংবাদে মনে হচ্ছে তৈরি পোশাক খাতের মালিকরা এতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি৷ তারা আশা করেছিলেন বিনা শর্তে অফেরতযোগ্য টাকা৷ এই অসন্তোষ প্রকাশেই হাজার হাজার শ্রমিককে তারা পায়ে হাঁটিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে বাধ্য করিয়েছেন এমন খবরও আসছে৷

রোববার প্রধানমন্ত্রী আরো বিস্তৃত আকারে প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণা দিলেন৷ সেখানে সরাসরি অবশ্য তৈরি পোশাক খাতের জন্য কিছু বলা নেই৷ তবে বৃহৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য যে চার ধরনের আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে তার অন্তত তিনটি থেকেই তৈরি পোশাক তথা বস্ত্র খাতের মালিকরাও চাইলে কম বেশি সুবিধা পাবেন৷ বৃহৎ শিল্প হিসেবে সাড়ে চার শতাংশ সুদে ৩০ ‍হাজার কোটি টাকার ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকার ইউডিএফ কিংবা সাত শতাংশ সুদে পাঁচ হাজার কোটি টাকার নতুন ঋণ তহবিলের আওতার বাইরে থাকছেন না তারাও৷

বিশ্ব অর্থনীতিতে আসন্ন মহামন্দার ধাক্কা ঠেকাতে সব দেশের সরকারই এখন কৌশল খুঁজছে৷ প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে উন্নত থেকে উন্নয়নশীল সবাই অর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছে৷ ক্যানাডা, র্জামানি, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশগুলোতে যা জিডিপির সাড়ে তিন থেকে দশ ভাগের মত৷ তারা এই অর্থের বড় অংশটাই বিভিন্ন কোম্পানি, শিল্প প্রতিষ্ঠানে ঢালছে৷ কারণ সেখানে শতভাগ কর্মসংস্থানই আনুষ্ঠানিক খাত নির্ভর৷ তারপরও বেকার, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্যেও এইসব ঘোষিত প্যাকেজে নির্দিষ্ট অঙ্কের বরাদ্দ রয়েছে৷ এরিমধ্যে যোগ্যরা সেখান থেকে বিশেষ ভাতা পেতেও শুরু করেছেন৷  

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি, টাকার অঙ্কে নেহায়েত কম নয়৷ জিডিপির হিসাবে প্রায় তিন ভাগের মত৷ কিন্তু এই অর্থ দেশের কত শতাংশের জন্য? যদি ধরেও নেই শিল্প খাতে যারা কাজ করেন এই অর্থে তাদের সবার জীবিকা, মজুরির নিশ্চয়তা মিলবে তাও সংখ্যাটি বড়জোর দুই কোটি হয়৷ বাস্তবতাটা তারপরও ভিন্ন৷ 

DW-Mitarbeiter Porträt Faisal Ahmed
ফয়সাল শোভন, ডয়চে ভেলেছবি: Masum Billah

পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশের কর্মসংস্থানে নিযুক্ত ছয় কোটির বেশি মানুষ৷ এর ৮৫ ভাগ বা ৫ কোটির বেশি রয়েছেন অনানুষ্ঠানিক খাতে৷ তাদের মধ্যে রয়েছেন কৃষি, র্নিমাণ, পরিবহন সহ বিভিন্ন খাতের শ্রমিক, দিনমজুর, ছোট দোকানদারসহ প্রতিদিনের গ্রাসাচ্ছদনের জন্য লড়াই করা মানুষেরা৷ যাদের বেশিরভাগেরই একদিন রোজগার না থাকা মানে এক একটি পরিবারের উপোস থাকা৷ এই পাঁচ কোটি মানুষের বাইরে আছেন দরিদ্র্য-হতদরিদ্র্য, বেকারসহ আরো কয়েক কোটি৷ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ৭২ হাজার কোটি টাকায় এই মানুষগুলোর মুখ খুঁজে পাওয়া যায় না৷

জিডিপির বছর বছর উল্লম্ফন আর মুষ্টিমেয়ের আর্থিক উন্নয়নের গল্পের আড়ালে চাপা পড়ে গেছেন দরিদ্ররা৷ কিন্তু প্রকৃত চিত্রটা এখন ক্রমশ নগ্ন হয়ে উঠেছে৷

প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্য অবশ্য সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়ানোর কথা বলেছেন৷ বিভিন্ন ভাতার সুবিধাভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি, নগদ অর্থ প্রদান, দশ টাকা মূল্যের চাল বিতরণ এমন পাঁচটি উদ্যোগের কথা তিনি জানিয়েছেন৷ এজন্য কত টাকার বরাদ্দ রয়েছে, স্পষ্টত কত মানুষকে তার সরকার এর আওতায় আনতে চায় সেটি পরিস্কার করতে পারেননি তিনি৷

অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত ৫ কোটি শ্রমিক, চার কোটি দরিদ্র্য, শ্রমশক্তির ২৭ লাখ বেকারের ক্ষুধা নিবারণের কথা দয়া করে সবার আগে ভাবুন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য