1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফিজির পেঁপে সমবায়

ইওয়ানে লেভিটান/এসি২৪ ডিসেম্বর ২০১৪

ধরুন প্রশান্ত মহাসাগর, ফিজি দ্বীপপুঞ্জ৷ তারপর ভাবুন পেঁপে গাছ, পাকা পেঁপে, তবে অরগ্যানিক পেঁপে; তাতে রাসায়নিক, কীটনাশক এ সব কিছু পড়েনি৷ খোদ নিউজিল্যান্ড থেকে অর্ডার আসছে সেই পেঁপের....কিছু বুঝলেন?

https://p.dw.com/p/1E8YO
Papaya
ছবি: picture-alliance/dpa

প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র ফিজি৷ সেই ফিজি দ্বীপের পশ্চিমাঞ্চলে রয়েছে একটি বিশেষ উর্বর এলাকা৷ এখানকার উষ্ণ, আর্দ্র আবহাওয়া গ্রীষ্মমণ্ডলের ফল-ফুলের জন্য খুব ভালো, কিন্তু ফল তোলার জন্য ভোরে উঠতে হয়৷ চাষী কেসাইয়া বুইরুয়া: ‘‘সূর্য ওঠার আগেই আমাদের এখানে আসতে হয়৷ ছেলেরা ফল তোলে, মেয়েরা সেগুলোকে ব্যাগে পোরে৷ সেটাই হলো আমাদের রোজকার প্রোগ্রাম৷''

এই ‘প্রোগ্রাম' বা দৈনন্দিন কর্মসূচির স্রষ্টা হলেন লিভাই তোরা৷ এ যাবৎ তাঁর গাঁয়ের চাষিরা চাষবাস করে বিশেষ রোজগার করতো না৷ কাজেই লিভাই তোরা এমন কোনো ফল চাষের কথা ভাবেন, যা এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাবে – আরো বড় কথা: যে ফল ভালো বিক্রি হবে৷ ফলটি হল পেঁপে, কিন্তু অরগ্যানিক পেঁপে৷ রাসায়নিক ছাড়া প্রাকৃতিক, স্বাভাবিক পেঁপে!

লিভাই তোরা গাঁয়ের আর কয়েকজন জোয়ান চাষিকে নিয়ে একটি সমবায় গঠন করেছেন৷ গাঁয়ের চারপাশের জমি চাষিদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে৷ প্রত্যেকে এক টুকরো করে জমি পেয়েছে৷ লিভাই তোরা বলেন: ‘‘আমাদের এই ধরনের মানুষজনকেই টার্গেট করা উচিত৷ এদের পরিচালনা দরকার, স্পষ্ট শর্তাবলী দরকার৷ এদের প্রয়োজন কোনো একটা আদর্শ এবং সেই সঙ্গে শৃঙ্খলা, আমরা যে পরিবেশটা সৃষ্টি করতে পেরেছি৷''

Senior Experten Service in Bonn BESCHRÄNKUNG
ছবি: SES

সবে মিলে করি কাজ

তরুণ ‘অরগ্যানিক ফার্মার'-রা একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেন, কাজ করেন, শেখেন৷ প্রত্যেক চাষির পরিবার আছে কাছেপিঠের কোনো গ্রামে৷ এখানে চাষিরা যা রোজগার করেন, সেটা যায় প্রধানত ছোট ছোট ভাইবোনদের মানুষ করার কাজে৷ কেসাইয়া বুইরুয়া বলেন: ‘‘গাঁয়ে আমাদের নানান সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়৷ কাজেই এই পেঁপে থেকে আমাদের কিছু রোজগার হয়৷''

অরগ্যানিক পেঁপের জন্য বেশি দাম পাওয়া যাবে৷ কিন্তু সে জন্য চাষিদের পেঁপে সমবায়কে একটি সার্টিফিকেট বা অনুমোদনপত্র দেখাতে হবে, যা পাওয়া খুব সহজ নয়৷ নিরপেক্ষ কন্ট্রোলারদের এই খামারে এনে সার্টিফিকেট যোগাড় করতে খরচ পড়ে বছরে প্রায় আট হাজার ইউরো, যা এই পেঁপেচাষিদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়৷ কিন্তু লিভাই তোরা তার একটি সমাধান বার করেছেন: পার্টিসিপেটিভ গ্যারান্টি সিস্টেম বা পিজিএস৷

চাষিরা সবাই মিলে একটি গোষ্ঠী তৈরি করেন৷ সেই গোষ্ঠীর সদস্যরা পরস্পরের অরগ্যানিক চাষের পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ করেন৷ বিশ্বের বিশটি দেশে এই স্বেচ্ছাপ্রণোদিত নিয়ন্ত্রণকে মূল্যবান অরগ্যানিক সার্টিফিকেটের সমতুল্য বলে গণ্য করা হয়৷ লিভাই তোরা-র মতে: ‘‘বাস্তবিক জমিতে যারা কাজ করছে, যারা হাত নোংরা করছে, তারাই আপনাকে গ্যারান্টি দিচ্ছে৷ দালালের কথা ভুলে যান, আমদানিকারক, ডিস্ট্রিবিউটর, ওসব ভুলে যান৷ সাপ্লাই চেনের শেষে যে রয়েছে, সেই খামারচাষি স্বয়ং আপনাকে গ্যারান্টি দিচ্ছে৷''

বিকল্প অরগ্যানিক সার্টিফিকেট

ফিজি-র পেঁপেচাষিরা নিজেদের জন্য অনেক কড়া নিয়ম সৃষ্টি করেছেন৷ অপরদিকে তাদের চাষবাস আর ফসল যাতে ভালো হয়, সে জন্য তারা প্রতিদিন একসঙ্গে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন৷ তার পর কেসাইয়া বুইরুয়া খাতায় সব কিছু লিখে রাখেন: গাছ কতটা বেড়েছে? কতগুলো ফল ধরেছে? প্রত্যেক দু'সপ্তাহ অন্তর অন্যান্য চাষিরা কেসাইয়া-র জমিতে এসে রিপোর্ট দিয়ে যান – এটাই হলো কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রণ৷ কেসাইয়া খুব কড়া: ইতিমধ্যেই পাঁচজন চাষির অরগ্যানিক খেতাব গেছে৷

কারেন মাপুসুয়া ‘পোয়েটকম'-এর হয়ে কাজ করেন৷ এই ‘পোয়েটকম' প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পরিবেশ সম্মত চাষবাসের সর্বোচ্চ সংগঠন৷ পদ্ধতিটা গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে বলে তাঁর আশা৷ বিকল্প অরগ্যানিক সার্টিফিকেটের কল্যাণে ফিজি-র কয়েকটি দ্বীপ ইতিমধ্যেই পুরোপুরি পরিবেশ সম্মত চাষবাস চালাচ্ছে৷ মাপুসুয়া বলেন: ‘‘চিন্তা করে দেখলে, সর্বোচ্চ পর্যায়ে, বিজ্ঞান কিংবা চিকিৎসাবিদ্যায়, সতীর্থরাই তো আমাদের নিয়ন্ত্রণ করেন৷ কাজেই আমরা সেই বিজ্ঞান কিংবা সেই ওষুধে বিশ্বাস করি৷ সেইভাবেই আমরা এই চাষিদেরও বিশ্বাস করতে পারি৷''

এবং তাতে কাজ হয়েছে৷ লিভাই তোরা তরুণ পেঁপে চাষিদের নতুন খবরটা দিলেন: নিউজিল্যান্ডের একটি অরগ্যানিক খাবারদাবার বেচে, এমন বড় সাপ্লায়ার ফিজি-র প্রকল্পটির কথা জানতে পেরে এখানে প্রথম অর্ডার দিয়েছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান