বন্যা, খরা, দাবদাহ: ব্রাজিলে খামখেয়ালি আবহাওয়া
ব্রাজিলে আবহাওয়ার চরম রূপ৷ ছবিঘরে দেখুন কীভাবে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ যুঝছেন বিপরীতধর্মী আবহাওয়ার সাথে...
চরম দাবদাহ
পৃথিবীর দক্ষিণার্ধ্বে এখনও গ্রীষ্ম আসেনি, কিন্তু ল্যাটিন অ্যামেরিকার বিভিন্ন অংশে ইতিমধ্যেই চরম দাবদাহ দেখা দিয়েছে৷ গত সপ্তাহে ব্রাজিলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে৷ রিও ডি জেনেইরোর প্রায়া ভেরমেলহা সমুদ্রসৈকতে মানুষের ভিড়ও তাই চোখে পড়ার মতো৷
ভয়াবহ তাপমাত্রা
জনপ্রিয় সংগীশিল্পী টেইলর সুইফটের কনসার্টে ঢোকার আগে একটু ঠাণ্ডা পানি মুখে ছিটিয়ে নিচ্ছেন রিও ডি জেনেইরোর এক টেইলর-ফ্যান৷ গত শুক্রবার টেইলর সুইফটের একটি কনসার্ট চলাকালে চরম গরমের কারণে এক টেইলর-অনুগামী মারা যান৷ স্টেডিয়ামে পানি না থাকার কারণে আয়োজকদের তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়৷ সেদিন, বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ সবকিছু মিলিয়ে হিট ইনডেক্সের মতে, তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৫৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস!
গরম থেকে বাঁচতে পানি
একই অবস্থা ব্রাজিলের মধ্য অঞ্চলেও৷ সাও পাওলো শহরে ফোয়ারার পানিতে শীতলতার খোঁজ করছে এই মেয়েটি৷ এই শহরেই কিছু দিন আগে ভুল করে স্কুলবাসের ভেতরেই থেকে যায় এক শিশু৷ প্রচণ্ড গরমে সেখানেই মারা যায় সে৷ ব্রাজিলের জাতীয় আবহাওয়া বিভাগ রাজধানী ব্রাসিলিয়া ও ১৫টি রাজ্যে পরিস্থিতি ভয়াবহ ঘোষণা করেছে৷
হাওরেও আগুন!
পোর্তো জোফরের আকাশে ঘন, কালো ধোঁয়া৷ ছাড়া পায়নি বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাওর, ব্রাজিলের পানতানালও৷ বিশ বছরে প্রথম এই হাওরেও দাবানল দেখা গেলো৷ মাতো গ্রোসো ও মাতো গ্রোসো দে সুল রাজ্যগুলিতেও জরুরি অবস্থার ঘোষণা করা হয়েছে৷
খারাপ খবরের নতুন রেকর্ড
ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম বলছে, নভেম্বর মাসেই তিন হাজার দাবানলের ঘটনা উঠে এসেছে৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, আগুন লাগার পেছনে মূল কারণ মানবসৃষ্ট, যেমন চাষের জমিতে বর্জ্য পোড়ানো৷ খরার ফলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে৷
পুড়ে ছাই গাছপালা
আগুন ইতিমধ্যেই তার প্রভাব বিস্তার করেছে পানতানালের ৩৫ হাজার হেক্টেয়ার জমিতে৷ এর আয়তন যুক্তরাজ্যের সমান৷ এনকোন্ত্রো দাম আগুয়াস জাতীয় পার্কের জন্য এই বিপর্যয় ভয়াবহ৷ এখানকার বাসিন্দা জাগুয়ারদের জীবন এই আগুনের ফলে বিপদের মুখে৷ গবেষকেরা বলছেন, ইতিমধ্যেই এই পার্কের ৩৪ শতাংশ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে৷
পানির নীচে মাটি
একদিকে ব্রাজিলের উত্তর ও মধ্য অঞ্চলে গরমের দাপট৷ অন্যদিকে, দেশটির দক্ষিণের জনগণের সামনে উল্টো পুরাণ৷ সান্তা কাতারিনা ও রিও গ্রান্দে দো সুল অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টির ফলে ধস নামায় ও বন্যার কারণে চয়জন প্রাণ হারিয়েছেন গত সপ্তাহেই৷
কাদার সাথে লড়াই
তাকারি নদীতে পানির মাত্রা বাড়তে বাড়তে এক পর্যায়ে রিও গ্রান্দো দো সুল অঞ্চলের বেশ কয়েকটি শহরে ঢুকে যায়৷ রোকা সালেস শহরে পানির তোড়ে এসে জমা কাদা ও ময়লা পরিষ্কারের কাজ করছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা৷
ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
গত কয়েক মাস ধরেই ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চল লড়ছে মুষলধারে বৃষ্টির সাথে৷ সাথে সেপ্টেম্বর মাসে যুক্ত হয় ঘূর্ণিঝড়ও৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন খামখেয়ালি আবহাওয়ার পেছনে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন৷