1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাড়ছে রাজনৈতিক সহিংসতা, পাল্টাপাল্টি দোষারোপ রাজনীতিবিদদের

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

কয়েক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটছে৷ বিএনপির নেতারা বলছেন, হামলা-মামলা করে সরকার টিকে থাকতে চায়৷ আর আওয়ামী লীগের নেতাদের দাবি, ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে হামলা হচ্ছে বিএনপি নেতাদের উপর৷

https://p.dw.com/p/4H1yB
Bangladesch | Proteste gegen Spritpreise
ছবি: Shuvro Kanti Das

এদিকে  হামলা, মামলা ও সংঘর্ষের মধ্যেই সরকার বিরোধী আন্দোলন আরো তীব্র করতে চাইছে বিএনপি৷ তারা মনে করছে, এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই সাধারণ মানুষকে সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামানো যাবে৷

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘‘সরকারের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে৷ তাই হামলা-মামলা করে টিকে থাকতে চাইছে৷ এই আন্দোলনেই সরকারের পতন হবে৷’’

এর জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘‘বিএনপির নেতারা কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে হামলার শিকার হলেও দায় চাপাচ্ছে আওয়ামী লীগের ওপরে৷ আর গত ১২ বছর ধরেই তো তারা সরকারের পতন ঘটাচ্ছে৷ তাদের কথার জবাব দেয়ার প্রয়োজন মনে করি না৷’’

হামলা, সংঘর্ষ, মামলা বাড়ছে

বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করেহামলা, সংঘর্ষ, মামলা এবং ১৪৪ ধারার ব্যবহার বাড়ছে৷ শনিবার ঢাকা ও  কুমিল্লায় হামলার পর রবিবার লালমনিরহাটে বিএনপির কর্মসূচি পণ্ড করে দিয়েছে পুলিশ৷

‘বিএনপি তো গত ১২ বছর ধরেই সরকারের পতন ঘটাচ্ছে’

ঢাকার বনানী এলাকায় শনিবারের হামলায় বিএনপি নেতা সেলিমা রাহমান, সৈয়দ মেয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিরিন সুলতানা, শামা ওবায়েদ ও তাবিথ আউয়ালসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন৷ আর কুমিল্লায় বরকত উল্লাহ বুলু ও তার স্ত্রী শামীমা বরকত হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন৷

বিএনপি শনিবার ঢাকায় জ্বালানি তেলসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও তাদের তিন কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন এবং মৌন অবস্থান কর্মসূচি পালনের সময় সন্ধ্যায় বনানী এলাকায় হামলার শিকার হন তারা৷

এর আগে গত আগস্টেও বিএনপির শীর্ষ নেতারা হামলার শিকার হন৷ বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টুর গাড়ি বহরে হামলা এবং গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের কেরাণীগঞ্জের বাড়িতে হামলা করা হয়৷

মিন্টুর গাড়ি বহরে হামলা হয় ফেনীর দাগনভূঞা এলাকায় যাওয়ার পথে৷ হামলার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে দায়ী করা হয়৷

বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, গত ২২ আগষ্ট  থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিএনপির কর্মসূচিতে হামলায় চার জন নিহত হয়েছেন৷ আহত হয়েছেন দুই হাজার ৭৬৮ জনের বেশি নেতাকর্মী৷ সারাদেশে মোট মামলা হয়েছে ৭২ টি৷

তিনি জানান, মামলায় নাম উল্লেখ করে চার হাজার ৯৭০ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে৷ অজ্ঞাত আসামি প্রায় ২৩ হাজার ১৫০জন৷ সারাদেশে ২৫ জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে৷ ২৮৪ জনেরও বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷

আর বিএনপি'র নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের গাড়ি, বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৫০টি হামলা হয়েছে৷ তিনি দাবি করেন, এইসব হামলার জন্য পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগি সংগঠনগুলো দায়ী৷

জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির জন্যই কি ইভিএম?

রবিবারও  ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে বিএনপির ৯ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ গত বৃহস্পতিবার মিরপুরে বিএনপির কর্মসূচি চলাকালে ‘পুলিশের ওপর হামলা’ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে৷

আন্দোলন আরো তীব্র করবে বিএনপি?

বিএনপির তৃনমূল পর্যায়ের একাধিক নেতা জানিয়েছেন বিভিন্ন ইস্যুতে দলটি সামনে একের পর এক কর্মসূচি দেবে বলে কেন্দ্র থেকে তাদের জানানো হয়েছে৷ এর মধ্য দিয়েই পর্যায়ক্রমে কঠোর কর্মসূচিতে যাবে তারা৷ এইসব কর্মসূচিতে সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে৷

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির ভোলা জেলার তৃণমূল পর্যায়ের এক নেতা জানান, ‘‘এখানে সময়কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে৷ আওয়ামী লীগ বর্তমান মেয়াদে এক বছরের কিছু বেশি সময় ক্ষমতায় আছে৷ তাদের সময় যত কমবে আন্দোলন তত তীব্র করার পরিকল্পনা আছে কেন্দ্রের৷’’

তিনি বলেন, ‘‘এখন বিভিন্ন কর্মসূচিতে প্রচুর দলীয় নেতাকর্মী উপস্থিত হচ্ছেন৷ হামলা মামলা এখন তাদের ভীত করছে না৷ কারণ আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে৷’’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘‘এই হামলা, মামলায় আমরা ভীত নই৷ আমরা আমাদের আন্দোলন আরো তীব্র করব৷ এভাবেই চূড়ান্ত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন ঘটানো হবে৷’’

তিনি বলেন, ‘‘এই সরকারের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে৷ তাই তারা হামলা-মামলার মধ্য দিয়ে টিকে থাকতে চাইছে৷ কিন্তু এতে আমাদের নেতা-কর্মীরা মোটেই ভীত নয়৷ তারা আরো উজ্জীবিত হচ্ছে৷ আমাদের কর্মসূচিগুলোতে প্রচুর লোক হচ্ছে৷ সাধারণ মানুষ অংশ নিচ্ছে৷ এটা এখন আর বিএনপির আন্দোলন নয়৷ দেশের মানুষের আন্দোলন৷ আন্দোলন এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে যাচ্ছে৷’’

তিনি মনে করেন, আওয়ামী লীগ আর কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি দিতে পারবে না৷ ‘‘তাদের সঙ্গে দেশের মানুষ নেই৷ তারা ভয় পেয়েছে তাই বিএনপিকে ভয় দেখাতে চাইছে,'' বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী৷

‘আমাদের আন্দোলন আরো তীব্র করব’

‘১২ বছর ধরেই তারা সরকারের পতন ঘটাচ্ছে’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ দাবি করেন, ‘‘কুমিল্লায় বরকত উল্লাহ বুলুর ওপর হামলা হয়েছে চায়ের দোকানে৷ এটা তার ব্যক্তিগত বা পারিবারিক শত্রু করেছে কি না আমরা কি জানি? এখন কোথাও কোনো বিএনপি নেতার ওপর ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে হামলা হলেও আওয়ামী লীগকে দায়ী করা হয়৷’’

বনানীর হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘তারা বিদ্যুতের দাবিতে মোমবাতি জ্বালিয়েছে বিদ্যুতের আলোর মধ্যে৷ উপরে বিদ্যুতের ল্যাম্প পোস্টে আলো জ্বলছিল৷ তারা তাদের আন্দোলকে একটা হস্যকর পর্যায়ে নিয়ে গেছে৷ এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সাধারণ মানুষ যদি প্রতিবাদ করে আমাদের কী করার আছে?''

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘বিএনপি তো গত ১২ বছর ধরেই সরকারের পতন ঘটাচ্ছে৷ এখনও একই কথা বলছে৷ এ ধরনের কথার জবাব দেয়ার দরকার আছে বলে মনে করি না৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান