1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিএনপির ১৫ দিনের কর্মসূচি শুরু, আওয়ামী লীগও থাকছে মাঠে

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ঢাকার পাশে টঙ্গী ও কেরানীগঞ্জে সমাবেশের মধ্য দিয়ে সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে টানা ১৫ দিনের কর্মসূচি শুরু করেছে বিএনপি।

https://p.dw.com/p/4WYnc
ফাইল ফটো
ফাইল ফটোছবি: Mortuza Rashed/DW

বিএনপি নেতারা বলেছেন, এই সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে আওয়ামী লীগ অতীতে যেমন অবরোধ, ঘেরাও ও হরতাল দিয়ে আন্দোলন করেছে তারাও সেভাবে করবেন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগও বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণার পরদিন মঙ্গলবার টানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের কথা, এটা তাদের কোনো পাল্টা কর্মসূচি নয়। তাদের এই কর্মসূচি নির্বাচনমুখী এবং নির্বাচন পর্যন্ত চলবে।

বিএনপির ১৫ দিনের কর্মসূচি ৩ অক্টোবর শেষ হবে। ওই দিনই তারা নতুন কর্মসূচি দেবে। মঙ্গলবার টঙ্গী ও  কেরানীগঞ্জের সমাবেশ ছাড়া বিএনপি  ২১ সেপ্টম্বর ময়মনসিংহ বিভাগের কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে সিলেট পর্যন্ত রোডমার্চ, ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকার যাত্রাবাড়ী ও উত্তরায় দুটি সমাবেশে এবং একই দিনে বাদ জুমা খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় সারা দেশের জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে দোয়া মাহফিলের কর্মসূচি দিয়েছে। 

২৩ সেপ্টেম্বর বরিশাল বিভাগে রোড মার্চ, ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার রায়ের বাজার ও আমীন বাজারে দুটি সমাবেশ, ২৬ সেপ্টেম্বর খুলনা বিভাগে রোডমার্চ এবং একই দিনে ঢাকায় পেশাজীবীদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার গাবতলী ও নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লায় সমাবেশ, ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মহিলা দলের সমাবেশ, ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় শ্রমজীবীদের সমাবেশ, ১ অক্টোবর ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ রোডমার্চ, ২ অক্টোবর ঢাকায় কৃষক সমাবেশ ও ৩ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামে বিএনপির রোডমার্চ ।

কর্মসূচির কিছু কিছু যুগপৎ কর্মসূচি হিসেবে পালন করবে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক ৩৭টি দল। প্রত্যেক দলের নিজস্ব কর্মসূচির কথা জানান, যুগপৎ আন্দোলনের শরিক  বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, "আমরা সমাবেশগুলো এক সঙ্গেই করছি। তবে রোর্ড মার্চ করছিনা। এর পরিবর্তে আমরা আলাদাভাবে নানা কর্মসূচি দিয়েছি।”

তবে ৩ অক্টোবরের পর থেকে সব কর্মসূচিই যুগপৎ হবে জানিয়ে তিনি বলেন,"অক্টোবরেই আমাদের আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে হবে। ওই সময়ের মধ্যেই সরকারকে বিদায় করতে হবে। নভেম্বর মাসে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাই তার আগেই আমাদের যা করার করতে হবে।”

৩ অক্টোবরের পর আন্দোলনের ধরন কেমন হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন,"ঘেরাও, অবরোধসহ সব কর্মসূচিই দেয়া হবে। হরতালও আমাদের চিন্তার বাইরে নেই। তবে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চাইছি।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "রাজপথে যদি কোনো সংঘাত হয় তাহলে তা সরকার ও সরকারের দলের কারণে হবে। আমাদের দিক থেকে কোনো আশঙ্কা নাই।”

তিরি আরো বলেন,"আওয়ামী লীগ তো এখন বিরোধী দলের লেজুড়ে পরিণত হয়েছে। আমরা কর্মসূচি দিলে তারাও পাল্টা কর্মসূচি দেয়।”

বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, "আওয়ামী লীগ যদি আমাদের ওপর আক্রমণ করতে আসে আমরা কি বসে থাকব? আমরা বসে থাকব না। আমরাও তাদের প্রতিহত করব। তাতে যদি সংঘাত হয়, হবে। আর শান্তিপূর্ণভাবে কোনো দাবি আদায় হয় না। ”

তার কথা,"এই ১৫ দিনের কর্মসূচিতে আশা করি সরকার আমাদের দাবী মেনে নেবে। যদি মেনে না নেয় তাহলে অতীতে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়কের দাবি আদায় করতে যা যা করছে আমরা তাই করব। তারা যেভাবে আন্দোলন করছে আমরাও সেভাবেই আন্দোলন করব। তাতে হরতাল, অবরোধ , ঘেরাও যা করার দরকার আমরা তাই করব। ”

এদিকে সোমবার বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণা পরদিন মঙ্গলবার  শাসক দল আওয়ামী লীগও টানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তাদের কর্মসূচির মধ্যে আছে, ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুরের পর ঢাকার বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সমাবেশ৷ ২৫ সেপ্টেম্বর একই সময়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ উত্তরায়, দক্ষিণ আওয়ামী লীগ যাত্রাবাড়ীতে সমাবেশ করবে। ২৭ সেপ্টেম্বর টঙ্গীতে সমাবেশ করবে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগ।

‘আওয়ামী লীগ যদি আক্রমণ করতে আসে, আমরা তাদের প্রতিহত করবো’

একই দিন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ রাজধানীর কাফরুলে সমাবেশ করবে। ২৮ সেপ্টেম্বর পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বাদ আসর দোয়া ও মিলাদ মাহফিল সারাদেশে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন (২৮ সেপ্টেম্বর) উপলক্ষে ২৯ সেপ্টেম্বর বেলা ৩টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ৩০ সেপ্টেম্বর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে কৃষক লীগের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ । ৪ অক্টোবর চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এর বাইরেও আরো কর্মসূচি থাকবে বলে আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেনে জানানো হয়। নেতারা বলেন, নিয়মিত শান্তি সমাবেশ তো সারাদেশে চলছেই।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন,"বিএনপি তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করবে সেটা তাদের ব্যাপার। তারা কীভাবে পালন করবে সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই। আমারা বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল নির্ভয়ে নিঃসংকোচে তাদের কর্মসূচি পালন করতে পারে। কোনো বাধা ছাড়াই সব কর্মসূচি পালন করতে পারবে। তারা তো মাঠে, ঘাটে, সভা-সমাবেশে, টেলিভিশনে সবখানে সরকারের বিরুদ্ধে  মিথ্যাচার করছে। কেউ তো তাদের বাধা দিচ্ছে না। ”

তার কথা,"কিন্তু এই  রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে তারা যদি জ্বালাও পোড়াও করে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করে, মানুষের সম্পদ ও জীবন ধ্বংস করে তাহলে কিন্তু সরকার কঠোর হবে। রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে সরকার যেমন বাধা দেবে না, তেমনি মানুষের জীবন ও সম্পদ নষ্ট করতেও দেবে না সরকার।”

‘বিএনপি মাঠে-ঘাটে মিথ্যাচার করছে, কেউ তো বাধা দিচ্ছে না’

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন," আমাদের কর্মসূচি বিএনপির কোনো পাল্টা কর্মসূচি নয়। আমাদের কর্মসূচি নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনমুখী এবং এটা  নির্বাচন পর্যন্ত চলবে। আমরা কর্মসূচি দিয়েছি সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করতে। সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ মানুষের কাছে তুলে ধরতে। আগামী নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণ হয়, সাধারণ মানুষ যাতে ভোট দেয় সেজন্য আমরা কর্মসূচি দিয়েছি।”