ব্রিটেনের নির্বাচনে পালাবদলের পূর্বাভাস
৪ জুলাই ২০২৪বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে রাজনৈতিক পালাবদল এক প্রকার নিশ্চিত – জনমত সমীক্ষার ভিত্তিতে এমনটাই ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ সেই হিসেব অনুযায়ী প্রায় ১৪ বছর ধরে একটানা ক্ষমতায় থাকার পর রক্ষণশীল টোরি দলের ভরাডুবি আসন্ন৷ সে ক্ষেত্রে ঋষি সুনাককে ক্ষমতাচ্যুত করে বিরোধী লেবার পার্টির নেতা কিয়ের স্টারমার ব্রিটেনের আগামী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, টোরি পার্টি এতকাল ক্ষমতায় থাকলেও দলের মধ্যে চরম কোন্দল ও অস্থিরতা জনপ্রিয়তা কমার অন্যতম কারণ৷ গত আট বছরে পাঁচ বার প্রধানমন্ত্রী বদল হয়েছে৷ ফলে ভোটাররা অবশেষে দেশের নেতৃত্বে পরিবর্তন চাইছেন৷ সক্রিয়ভাবে লেবার পার্টিকে অনেকেই সমর্থন করছেন না৷ বরং টোরিদের বিরুদ্ধে ক্ষোভের ফায়দা তুলতে পারছে বিরোধী লেবার পার্টি৷ ক্ষমতায় এলেও সেই দলের ঘাড়ে বিপুল দায়িত্ব এসে পড়বে, এমনটা স্বীকার করে নিচ্ছেন স্টার্মার৷ নিউ স্টেটসম্যান সংবাদপত্রকে তিনি বলেন, ‘‘আজ ব্রিটেন নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারে৷ আরো পাঁচ বছর রক্ষণশীলরা ক্ষমতায় থাকলে কিন্তু সেটা হবে না৷ একমাত্র লেবারকে ভোট দিলেই পরিবর্তন আসবে৷’’
কোণঠাসা টোরি পার্টির নেতা ঋষি সুনাক মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগেই সাধারণ নির্বাচন ঘোষণা করে দলের মধ্যেও সমালোচনার মুখে পড়েছেন৷ দলের জনপ্রিয়তার অভাব কার্যত মেনে নিয়েই নির্বাচনের প্রচারে তিনি সরাসরি পুনর্নিবাচনের ডাক না দিয়ে লেবার দল ক্ষমতায় এলে দেশের কী দশা হবে, সে বিষয়ে ভোটারদের সতর্ক করে দিচ্ছেন৷ ভোটগ্রহণের দিনেও তিনি বলেন, লেবার আগামী সরকার গঠন করলে করের হার বাড়বে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া থমকে যাবে এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার এই সময়ে ব্রিটেন আরো দুর্বল হয়ে পড়বে৷
ব্রেক্সিট, করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের মতো সংকটের কারণে ব্রিটেনে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার উপর গভীর প্রভাব ফেলছে৷ তবে প্রতিবাদ হিসেবে প্রতিবেশি ফ্রান্সের মতো সে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার উগ্র দক্ষিণপন্থি শিবিরের বদলে মধ্য বামপন্থি শক্তির প্রতি আস্থা দেখাচ্ছেন৷ জনমত সমীক্ষার পূর্বাভাস সত্য হলে লেবার পার্টি বিশাল ব্যবধানে জয়ের মুখ দেখবে৷ তবে ভোটগ্রহণের হার ও শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেওয়া ভোটারদের আচরণের উপর চূড়ান্ত ফল নির্ভর করবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ তার উপর ‘দ্য সান' নামের প্রভাবশালী ট্যাবলয়েড সংবাদপত্র স্টারমারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে৷
টোরি দলের সম্ভাব্য ভরাডুবির পেছনে দক্ষিণপন্থি রিফর্ম ইউকে দলের নেতৃত্বে নাইজেল ফারাজের আচমকা আবির্ভাবকেও দায়ী করা হচ্ছে৷ মধ্যপন্থি লিব ডেম পার্টিও নির্বাচনে ভালো ফল করতে পারে৷ স্কটল্যান্ডে ভালো ফল করার পর লেবারের মধ্যেও আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গেছে৷ বৃহস্পতিবার নীয় সময় রাত নয়টায় ভোটগ্রহণ শেষ হলে দশটা থেকে এক্সিট পোল প্রকাশ করা হবে৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)