রবি শঙ্করের চিরবিদায়
১৩ ডিসেম্বর ২০১২সেতার সম্রাট পণ্ডিত রবি শঙ্কর, ভারতীয় ধ্রুপদী সংগীতের শিকড়কে শক্ত হাতে ধরে রেখে পশ্চিমের সংগীত জগতকে গ্রহণ করেছেন দক্ষতার সাথে৷ পেয়েছেন বিশ্ব খ্যাতি ও সাফল্য৷ তিনি সূচনা করেছেন বিশ্ব সংগীতে এক নতুন অধ্যায়৷
কিংবদন্তি পণ্ডিত রবি শঙ্করের জন্ম ১৯২০ সালে ভারতের বেনারস শহরে৷ ওস্তাদ আলাউদ্দীন খানের কাছে সেতারে তাঁর হাতেখড়ি৷ সেতারে শিক্ষা লাভের পর ৪০'এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে সুরকার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি৷ ৪৯ থেকে ৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন অল ইন্ডিয়া বেতারের সংগীত পরিচালক৷ পঞ্চাশের শেষার্ধ থেকে ইউরোপ ও অ্যামেরিকায় সেতার কনসার্ট পরিবেশন শুরু করেন এই ‘ভারত রত্ন'৷ এ সমস্ত কনসার্টের মধ্য দিয়ে সাফল্যের সাথে তিনি ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী ধ্রুপদী সংগীত পৌঁছে দেন বিশ্ব সংগীতের দরবারে৷
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাংলাদেশের অসহায় নিপীড়িত জনগণের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেন পণ্ডিত রবি শঙ্কর৷ বিশ্ব বিখ্যাত সংগীত গোষ্ঠী বিটলস-এর সদস্য প্রয়াত জর্জ হ্যারিসনের সহায়তায় নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে বিশ্বখ্যাত সংগীত তারকাদের নিয়ে পণ্ডিত রবি শঙ্কর আয়োজন করেন এক বিরাট ‘চ্যারিটি' সংগীতানুষ্ঠান, ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ'৷ এই অনুষ্ঠানে পণ্ডিত রবি শঙ্করের সেতার পরিবেশনা মুগ্ধ করে অসংখ্য অনুরাগীদের৷
ষাটের দশকে দিকপাল বেহালা বাদক ইয়েহুদ মেনুহিন-এর সঙ্গে তাঁর ঐতিহাসিক কনসার্ট, ‘ওয়েস্ট মিটস ইস্ট' – ‘পাশ্চাত্যের সাথে প্রাচ্যের মিলন' বিশ্বসংগীতাঙ্গনে বিপুল সড়া জাগিয়েছিল৷ ১৯৬৭ সালে এই অ্যালবামের জন্য দু'জনেই গ্র্যামি পুরস্কারে ভূষিত হন৷ ভারত রত্ন, তিনবার গ্র্যামি সহ আরো বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন বিশ্ব সংগীত জগতের এই মহানায়ক পণ্ডিত রবি শঙ্কর৷