1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে আতঙ্ক ক্রমশ ছড়াচ্ছে, চীনে মৃত ১৭৭০

১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

করোনা ভাইরাসে চীনে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়ল। আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। করোনা আতঙ্ক ছড়িয়েছে দিল্লিতেও।

https://p.dw.com/p/3XsF9
ছবি: picture-alliance/dpa/Chinatopix

করোনা আতঙ্ক এ বার ছড়ালো দিল্লিতে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে ১৭ জনকে ভর্তি করা হল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে। অন্য দিকে, চীনের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। দেশের সরকারি সংবাদ সংস্থার খবর, সোমবার সকাল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৭৭০। শুধু রবিবারেই মৃত্যু হয়েছে আরও ১০৫ জনের। তাইওয়ানেও এক করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এরই মধ্যে অ্যামেরিকা জাপান উপকূলে আটকে থাকা প্রমোদতরি থেকে মার্কিন নাগরিকদের উদ্ধার করেছে।

ভারতের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে জানুয়ারির গোড়ায় চীন থেকে ৫ হাজার ৭০০ জন দিল্লি ফিরেছিলেন। তখনও বিমানবন্দরে করোনা সতর্কতা জারি হয়নি। থার্মাল স্ক্রিনিংও শুরু হয়নি। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এর মধ্যে ৪ হাজার ৭০৭ জনের সঙ্গে যোগাযোগ করা গিয়েছে। তার মধ্যে ১৭ জনের শরীরে করোনার জীবাণু আছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়েছে। বাকিদেরও আপাতত বাড়িতে আইসোলেশনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও প্রায় এক হাজার জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাদের শরীরেও যদি করোনা জীবাণু থাকে, তাহলে তা ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। করোনা ভাইরাস যাতে দেশে ছড়িয়ে না পড়ে, তার সমস্ত রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

চীনে মৃত্যু মিছিল অব্যাহত। সরকারি হিসেব, সোমবার সকাল পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৭৭০ জনের। শুধু রবিবারেই মৃত্যু হয়েছে ১০৫ জনের। যার মধ্যে একশ জনই হুবেই প্রদেশের। দেশের সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ হাজার পার করে গিয়েছে। হুবেই প্রদেশ কার্যত মৃত্যু নগরীতে পরিণত হয়েছে। চীনের প্রশাসন রবিবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, হুবেইয়ের সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাইরের কোনও গাড়ি হুবেইয়ের রাস্তা দিয়ে যেতে পারবে না। হুবেই থেকেও কোনও গাড়ি বাইরে যেতে পারবে না। অথচ এখনও হুবেইয়ে আটকে আছেন বহু বিদেশি। পাকিস্তানের একটি সূত্রের দাবি, সেখানে হাজারখানেক পাকিস্তানি ছাত্র আটকে আছে। রবিবার যা নিয়ে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে বিক্ষোভ হয়। শতাধিক মহিলা হাতে পোস্টার নিয়ে সরকারি ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, ভারত, বাংলাদেশ, এমনকী নেপাল তাদের নাগরিকদের চীন থেকে বিশেষ তৎপরতায় ফিরিয়ে আনলেও পাকিস্তান এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। বহু ছাত্র হুবেই প্রদেশে আটকে আছেন। আটকে থাকা সেই ছাত্রদের মায়েরাই রবিবার বিক্ষোভ দেখান।

যাত্রীর করোনা ভাইরাস, সমুদ্রে ভাসছে প্রমোদতরি

এ দিকে জাপান উপকূলে দাঁড়িয়ে থাকা প্রমোদতরিতে আরও ৭০ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের জীবাণু মিলেছে। তারই মধ্যে অ্যামেরিকা রবিবার তাদের নাগরিকদের ওই জাহাজটি থেকে উদ্ধার করে দেশে উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে। একটি কার্গো বিমানে তাদের অ্যামেরিকা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহ টেক্সাসে সেনা ঘাঁটিতে তাঁদের আইসোলেশনে রাখা হবে। তবে যে ৪০ জন মার্কিন নাগরিক জাহাজে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের দেশে ফেরানো হয়নি। জাপানেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে। ওই জাহাজে আটকে আছেন শতাধিক ভারতীয়। গত সপ্তাহে একটি ভিডিও তৈরি করে তাঁরা দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন, দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করার জন্য। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ভারত তেমন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারপ্রধান সোমবার টুইট করে জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই লড়াই সকলের লড়াই। চীনের স্বাস্থ্য দফতরের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সোমবার বৈঠক হওয়ার কথা। কী ভাবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে, তা নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ফের সতর্ক করে বলেছেন, অপেক্ষাকৃত গরিব দেশে এই ভাইরাস কোনও ভাবে ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। ফলে সকলকেই ভাইরাসটি নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের খবর মিলেছে সংযু্ক্ত আরব আমিরাত থেকে। তবে জার্মানিতে যাঁদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল, ক্রমশ তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশের স্বাস্থ্য দফতর। অন্য দিকে, তাইওয়ানে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।

এসজি/জিএইচ (আল জাজিরা, রয়টার্স, ইকনমিক টাইমস)