1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভিসির ভাগবাঁটোয়ারা টেন্ডারবাজির প্রমাণ আছে!

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ফারজানা ইসলাম কি টিকে থাকতে পারবেন? তার পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র-শিক্ষকরা এখন একযোগে আন্দোলন করছেন৷ ভর্তি পরীক্ষায় তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষার পর দেয়া হবে কঠোর কর্মসূচি৷

https://p.dw.com/p/3PxPn
Bangladesch Rezwanul Haque Chowdhury Shovon und Golam Rabbani
ছবি: bdnews24.com

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকেরা বলছেন, ভিসি ফারাজানা ইসলাম যে ছাত্রলীগের সাথে উন্নয়ন কাজের টাকার ভাগ বাটোয়ারা করেছেন এটা প্রমাণিত৷ তার ভিসি পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই বলেও মনে করছেন তারা৷ শুধু পদত্যাগই নয়, চাঁদাবাজির তদন্ত এবং ভিসিহ যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনারও দাবি তুলেছেন তারা৷

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার কাজে যে চাঁদাবাজি হচ্ছে, এর অভিযোগ ওঠে গত মাসে ঈদের ঠিক আগে আগে৷ তখন থেকেই ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' নামের প্ল্যাটফর্মে সোচ্চার হন শিক্ষক এবং ছাত্ররা৷ গত ২৫ আগস্ট থেকে তারা আন্দোলন শুরু করেন৷

বরাবরই কোনো ধরনের দুর্নীতি বা চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছে, সে কথা অস্বীকার করে এসেছেন ভিসি৷ এমনকি আন্দোলনরত শিক্ষক এবং ছাত্রদের সাথে ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর যে বৈঠক হয়, সেখানেও টেন্ডার ছিনতাই এবং ছাত্রলীকে চাঁদা দেয়ার কথা অস্বীকার করেন তিনি৷ এমনকি ছাত্রলীগের সদ্য পদচ্যূত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক শোভন-রাব্বানীর সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠকের কথাও তিনি গোপন করেন৷ পরে আবার নিজেই সংবাদ সম্মেলন করে জানান, শোভন-রাব্বানী তার কাছে চাঁদা চেয়েছেন।

আশিকুর রহমান

‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' প্ল্যাটফর্মের মুখপাত্রদের একজন গণিত বিভাগের ছাত্র আশিকুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ভিসি যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাদের চাঁদা দিয়েছেন এটা প্রমাণিত৷ এরইমধ্যে দ্ইুজনের অডিও প্রকাশ হয়েছে, যারা নিজেরা ২৫ লাখ টাকা করে পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন৷ আমরা মনে করি ভিসির আর তার পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই৷‘‘

ভিসি মোট ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা চাঁদা দিয়েছেন বলে অভিযোগ৷ আর শোভন-রাব্বানী মোট কাজের টাকার ৫-৬ পার্সেন্ট চেয়েছে এটা ভিসি নিজেই বলেছেন৷

‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়ক এবং দর্শন বিভাগের অধ্যাক ড. রায়হান রাইনের অভিযোগ এই পুরো বিষয়টি আগে গোপন করেছেন ভিসি ফারাজানা ইসলাম৷ তিনি বলেন, ‘‘ভিসি আমাদের সাথে একাধিক বৈঠকে চাঁদাবাজির তথ্য গোপন করে অনৈতিক কাজ করেছেন৷ তিনি নিজেই চাঁদা দেয়ার সাথে জড়িত৷ আমাদের কাছে তথ্য প্রমাণ এবং অডিও ভিডিও আছে৷ তার ছেলে, স্বামী, পিএস এবং প্রকল্প পরিচালক ছাত্রলীগকে চাঁদা দেয়া এবং ভাগ বাটোয়ারার সাথে জড়িত৷ তাই শুধু তার পদত্যাগ নয়, তিনিসহ আরো যারা জড়িত তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে৷''

ড. রায়হান রাইন

শিক্ষক ও ছাত্ররা প্রতিদিনই এখন নানা কর্মসূচি পালন করছেন৷ তিন দফা ভিসির অফিস ঘেরাও করেছেন৷ আগামী রোববার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে৷ তাই ১ অক্টোবর পর্যন্ত কেনো কঠোর কর্মসূচিতে যাচ্ছেনা না তারা। তবে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষা কেন্দ্রে ভিসিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।

অধ্যাপক ড. রায়হান রাইন বলেন,‘‘তিনি, চাঁদাবাজি ও টেন্ডার ছিনতাই এর ঘটনা তদন্ত করে মামলা দায়েরে প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রাখেননি। তিনি বলছেন নিজের বিরুদ্ধে নিজে কিভাবে তদন্ত করবেন। আর এতেই প্রমাণিত হয় তিনি অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত। তিনি এর মধ্যে সরে না গেলে ভর্তি পরীক্ষার পর কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেব।''

এদিকে ছাত্রলীগের অপসারিত সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর অনুসারীরা বুধবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও ভিসি ফারজানা ইসলামের পদত্যাগের দাবীতে আন্দোলন শুরু করেছে। চাঁদাবাজির অপরাধে তারা ভিসিরও পদত্যাগ চায়।

এনিয়ে ফারজানা ইসলামকে বার বার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মঞ্জুরি কমিশন ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানা গেছে।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের  অধ্যাপক ফরজানা ইসলাম ২০১৪ সালের মার্চে প্রথম দফা উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। আর গত বছর তাকে দ্বিতীয় দফায় নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি ভিসি হওয়ার আগ পর্যন্ত তার আগের উপাচার্যকে সরানোর আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের মুখে কোনো ভিসির অতীতে টিকে থাকার রেকর্ড নেই বলে জানা গেছে।

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য