1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভোটের আগে মধ্যবিত্ত, গরিবদের খুশি করার বাজেট

১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে সাধারণ মানুষকে খুশি করার চেষ্টা করলেন নরেন্দ্র মোদী।

https://p.dw.com/p/4Mx6r
ছবি: Adnan Abidi/REUTERS

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যে বাজেট পেশ করেছেন, তাকে এককথায় বলা যায় ভোটমুখি বাজেট। আয়করদাতা মধ্যবিত্তদের খুশি করার চেষ্টা যেমন আছে, তেমনই আছে গরিবদের জন্য প্রকল্পের বরাদ্দের প্রভূত বৃদ্ধি। প্রথমে করোনা ও পরে ইউক্রেন যুদ্ধের পর চাপে থাকা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দিকে বাজেটে খুব একটা চেষ্টা হয়নি বলে মনে করছেন বিরোধীরা। 

গরিবদের কার্যত বিনা পয়সায় বাড়ি দিতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বরাদ্দ ৬৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। প্রায় তিন কোটি মানুষকে বাড়ি দেয়া হবে। ২০২৪ সালের মধ্যে আরো ২০ কোটি মানুষের বাড়িতে কলের জল পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ বেড়েছে গরিবদের জন্য স্বাস্থ্যবিমা আয়ুষ্মান ভারতের।

অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ১৫ হাজার কোটি টাকা দিয়ে আদিবাসী উন্নয়ন যোজনা নেয়া হবে। প্রায় ছয় কোটি টাকা দিয়ে আদিবাসীদের জন্য আবাসিক একলব্য বিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে।

আয়করে ছাড়

এতদিন ধরে আয়করের ক্ষেত্রে বিপুল ছাড় দেয়নি মোদী সরকার। এখন আয়করের দুইটি স্কিম চালু আছে। একটি পুরনো একটি নতুন। পুরনো স্কিমে আয়কর ছাড় পাওয়া যায়। কিন্তু নতুন স্কিমে কোনো ছাড় হয় না, তবে আয়কর অনেক কম দিতে হয়। এবার নতুন ও পুরনো স্কিমে আয়কর ছাড় দেয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, সাত লাখ টাকা পর্যন্ত কোনো আয়কর দিতে হবে না। নয় লাখ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয় হলে ৪৫ হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে, যা আগের থেকে ২৫ শতাংশ কম। ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের মানুষদের জন্য কর কমিয়েছেন নির্মলা সীতারামন। তাদের বছরে দেড় লাখ আয়কর দিতে হবে। আগে দিতে হতো এক লাখ ৮৭ হাজার টাকা।

অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বছরে আয় ১৫ লাখ টাকার বেশি হলে ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। ১২ থেকে ১৫ লাখ হলে ২০ শতাংশ ও তার নিচে দশ শতাংশ কর দিতে হবে।

বরাদ্দ কমেছে

এই বছর বরাদ্দ কমেছে এমজিনারেগা বা ১০০ দিনের কাজে। গত বছর এই খাতে বরাদ্দ ছিল ৮৪ হাজার নয়শ কোটি টাকা। এবার তা কমে হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকা।

রেলের বরাদ্দ বেড়েছে

এবার ভারতীয় রেলের জন্য বরাদ্দ বেড়ে হয়েছে দুই লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। এর আগে কখনো রেলকে এত অর্থ দেয়া হয়নি। মোদী যখন প্রধানমন্ত্রী হন, তার তুলনায় এই বরাদ্দ অনেকটাই বেশি। বাড়তি বরাদ্দ দিয়ে আরো বুলেট ট্রেন, বন্দে বারত ট্রেন, হাইড্রোজেনে চলা ট্রেন চালানো হবে। তাছাড়া জোর দেয়া হবে বৈদ্যুতিকরণে, পরিচ্ছনতায়, পরিকঠামো উন্নতিতে এবং অবশ্যই রেলের পরিচ্ছন্নতায়।

দাম বাড়া-কমা

সিগারেটের দাম বাড়বে। কারণ, সিগারেটের উপর ১৬ শতাংশ বাড়তি কর বসানো হয়েছে। রান্নাঘরের চিমনির অন্তঃশুল্কের দাম বাড়বে। কারণ, চিমনির উপর শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। একই কারণে রুপোর দামও বাড়বে। ইমিটেশন গয়নার দাম বাড়বে।

মোবাইলের যন্ত্রাংশের উপর শুল্ক কমানো হয়েছে। তাই মোবাইল সস্তা হবে। শুল্ক ছাড়ের কারণে টিভি সস্তা হবে। ক্যামেরার লেন্স, সাইকেল, বাচ্চাদের খেলনার দাম কমবে। হীরের গয়নার দাম কমবে।

প্রতিক্রিয়া

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ''বাজেটে বঞ্চিতদের, গরিবদের প্রচুর সুবিধা দেয়া হয়েছে।''

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন, ''শুধু ভোটের কথা ভেবে বাজেট বানানো হয়েছে। এই বাজেটে কর্মসংস্থান তৈরির কোনো চেষ্টা হয়নি। যুবকদের কাজের ব্যবস্থা তাই করা যাবে না। মোদীা সরকার গ্যাস, আটা, দুধ সহ নানা জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেশকে লুট করছে।''

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেছেন, ''এ তো অমাবস্যার বাজেট, আলো নেই, দিশা নেই। শুধু অন্ধকার আছে।''

ডয়চে ভেলের দিল্লি প্রতিনিধি গৌতম হোড়৷
গৌতম হোড় ডয়চে ভেলের দিল্লি প্রতিনিধি৷