1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মনের ভয় দূর করার মেকানিজম ইসির নেই

২৪ জানুয়ারি ২০২০

ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে তত শঙ্কা বাড়ছে৷ ভোটার থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞ সবার মনেই প্রশ্ন ভোট দিতে পারবেন কীনা৷ নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলছেন, মানুষের মনের ভয় দূর করার মেকানিজম তাদের কাছে নেই৷

https://p.dw.com/p/3Wl6p
Bangladesch Dhaka Wahlen
ছবি: DW/A. Islam

সপ্তাহ পেরুলেই ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন৷ চলছে প্রার্থীদের প্রচার৷ পেস্টার আর নানা প্রতীকে ছেয়ে গেছে নগরী৷ তারপরও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা কাটেনি৷ অনেকেরই মনে প্রশ্ন ‘ভোট দিতে পারবেনতো'? জবাবে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেছেন, সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে৷ যে ভয়ের কথা বলা হচ্ছে তা মনের ভয়৷

শুক্রাবাদের দোকানদার জামাল হোসেন ওই এলাকারই ভোটার৷ তিনি ভোট দিতে চান৷ দক্ষিণ সিটিতে তার পছন্দের মেয়র প্রার্থী আছেন, আছেন কাউন্সিলর প্রার্থী৷ তাদের জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী৷ তারপরও তার প্রশ্ন, ‘‘ভোট কি দিতে পারব?''

জামাল হোসেন

কেন এই শঙ্কা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আগেতো ভোট দিতে পারি নাই৷ ঘুমিয়ে ভোট দিয়েছি৷ ভোট দিতে গিয়ে শুনি আগেই আমার ভোট দেয়া হয়ে গেছে৷ এরকম ঘটনা একবার নয়, দুইবার হয়েছে৷ এবার এখন পর্যন্ত প্রচার প্রচারণা ভালোই হচ্ছে৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভোটের একই অবস্থা হবে বলে মনে হয়৷''একই রকম শঙ্কা প্রকাশ করেছেন আরো অনেকে৷

গাবতলীতে প্রচার কার্যক্রমের সময় ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের ওপর হামলার ঘটনা ছাড়া এখন পর্যন্ত বড় ধরনের সংঘাতের অভিযোগ পাওয়া যায়নি৷ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর প্রার্থীদের পোস্টার আছে৷ যদিও শুরুর দিকে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে পোস্টার লাগাতে না দেয়া ও ছিড়ে ফেলার অভিযোগ ছিল৷ তবে এই সহাবস্থান কতদিন বজায় থাকবে তা নিয়েও সন্দেহ আছে৷

সাবেক তত্ত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হাফিজউদ্দিন খান বলেন, ‘‘প্রচার প্রচারণা চলছে৷ সবাই মাঠে আছে৷ কিন্তু তার মধ্যেইওতো তাবিথ আউয়ালের ওপর হামলা হয়েছে৷ নির্বাচন কমিশনকেতো কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখছি না৷ আচরণবিধিও লঙ্ঘন হচ্ছে৷ কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না৷''

হাফিজউদ্দিন খান

তবে নির্বাচন কমিশন বলছে নির্বাচনের মাঠ থেকে তারা এখনো বড় কোনো অভিযোগ পায়নি৷ মাঠে প্রার্থীদেরও অবশ্য প্রচারে আগ্রহের কমতি নেই৷ এই  সুযোগে ঢাকায় বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতা-কর্মীরাও এখন প্রকাশ্যে আসতে পারছেন৷ ডেমরা এলাকায় এমন কয়েকজনকে দেখা গেছে যারা দীর্ঘদিন গ্রেপ্তার হয়রানির ভয়ে এলাকায় আসার সুযোগ পাননি৷ উত্তর বাড্ডায় ঘুরেও এমন নেতা-কর্মীদের পাওয়া গেছে৷ শুরুতে তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক থাকলেও আপাতত তা অনেকটাই কেটে গেছে৷ ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷

তবে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে তত শংকা বাড়ছে বলে মনে করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান৷ তিনি বলেন, ‘‘যতই দিন যাচ্ছে নির্বাচনে উদ্বেগের উপাদানগুলো বাড়ছে৷ প্রতিনিয়ত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সংকুচিত হচ্ছে৷ তাই নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক ও অংশগ্রহণমূলক হওয়ার ব্যাপারে উদ্বেগ বাড়ছে৷''

তাঁর মতে, ‘‘নির্বাচন কমিশন ব্যর্থতা ও অবৈধতার অনেক নজির রেখেছে৷ আর কমিশনের মধ্যেই নানা মত আছে৷ তারপরও আমি আশা করব এবার তারা যদি ভালো কিছু পদক্ষেপ নিয়ে ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পারে তাহলে কিছুটা হলেও তাদের ইমেজ পুনরুদ্ধার হবে৷''

রফিকুল ইসলাম

তবে নির্বাচন কমিশন সেই দায়িত্ব পালন করবে এমনটা আশা করেন না হাফিজউদ্দিন খান৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার নিজেরও এই নির্বাচন কমিশনের ওপর কোনো আস্থা নাই৷ তাদের দক্ষতা, নিরপেক্ষতার ওপর আমার কোনো আস্থা নাই৷ তাই আমিও নির্বাচন নিয়ে ভয়ের মধ্যে আছি৷ তারা অতীতে তাদের দায়িত্ব পালন করে নাই৷ হঠাৎ করে তারা ভালো হয়ে যাাবে এটা আশা করা যায় না৷'

এর জবাবে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘ঢাকা শহরে বা বাংলাদেশে সবাই নির্ভয়ে চলাফেরা করছেন৷ অফিস আদালত কাজকর্ম সমানে করছেন৷ বাজারে যাচ্ছেন, ব্যবসা করছেন৷ কিন্তু ভোট দেয়ার ব্যাপারে বলছেন আমি ইনসিকিউরড ফিল করছি৷ এখন আমরা কী করতে পারি৷ আমরা কী করলে সিকিউওরড ফিল করবেন৷ সেই ক্ষমতা আমাদের আছে কিনা৷ ওই সামর্থ্য আমাদের আছে কিনা৷ এটা নিশ্চিত তাহলে মনের ভয়৷ এখন মনের ভয় দূর করার কোনো মেকানিজম আমাদের কাছে নাই৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমরা সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছি৷ ফিজিক্যালি যাতে কিছু না হয় তার নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করেছি৷ আপনাদেরকে বলব আপনারা নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যান৷ আপনি নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন৷ এই নিশ্চয়তা আমরা দিচ্ছি৷'' 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান