মরুভূমিতে চাষাবাদ: পানি সাশ্রয়ে ভার্টিক্যাল ফার্ম
উচ্চ তাপমাত্রা এবং জলের সংকট। আরব আমিরাতকে এজন্য চাষাবাদের জন্য খুব একটা উপযোগী বলে মনে না হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন ও করোনা মহামারির ফলে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে।
মরুর দেশে
“আমি যখন মরভূমিতে টমেটো চাষের কথা বললাম, সবাই আমাকে পাগল ভেবেছিল”, বলছিলেন পিওর হারভেস্ট স্মার্ট ফার্মের প্রতিষ্ঠাতা স্কাই কুরৎস। দেশটিতে বছরে গড়ে মাত্র ১২ দিন বৃষ্টি হয়, মাত্র এক শতাংশ জমি চাষের যোগ্য। ফলে ৮০ শতাংশ খাবারই আমদানি করতে হয়। চাষাবাদের জন্যও একেবারেই অনুপযোগী বলে মনে করা হয় দেশটিকে।
ভার্টিক্যাল ক্ষেতই সমাধান?
কিন্তু কুরৎসের মতো বেশ কয়েকজন নবীণ উদ্যোক্তা এ নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। নতুন কৃষি প্রযুক্তিতে কোটি কোটি টাকাও বিনিয়োগ করছে আমিরাত সরকার। ভার্টিক্যাল ফার্মিং প্রযুক্তিও এর একটি।
নির্দিষ্ট তাপমাত্রা, সাশ্রয়ী জল
গ্রিনহাউজের মধ্যে কয়েক ধাপে একটার ওপর আরেকটা গাছের স্তর চাষ করা হয়। এলইডি আলোর সাহায্যে তাপমাত্রা ও আলো নিয়ন্ত্রণ করা হয়৷ যাতে বাড়তি জল খরচ না হয়, সেজন্য ফোঁটায় ফোঁটায় জল দেয়ার ব্যবস্থা থাকে। তাছাড়া বাড়তি জল ওপরের স্তর থেকে নীচের গাছে যাওয়ায় অপচয় একেবারেই হয় না। এর ফলে তীব্র গরম বা কনকনে শীত, সারা বছরই চাষ করা সম্ভব হয়।
জমির চেয়েও ভালো ফলন
আরেকটি ভার্টিক্যাল ফার্ম এরোফার্মের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক ওশিমা জানান, জমিতে যে ফসলের পাতা ছাড়তে ৩০ থেকে ৪০ দিন লাগে, এই পদ্ধতিতে সেটা ১০-১২ দিনেই করা সম্ভব। ২০২১ সালের মধ্যে রাজধানীর সবচেয়ে বড় ভার্টিক্যাল ফার্মে বিভিন্ন প্রজাতির ৮০০ ফসল ফলানোর জন্য আবু ধাবি বিনিয়োগ কার্যালয় থেকে বড় আকারের অনুদানও পেয়েছে এরোফার্ম।
খাদ্য নিরাপত্তা
২০১৮ সালে উচ্চপ্রযুক্তির খাদ্য উৎপাদনের কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তখন থেকেই নানা প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারী করমুক্ত সুবিধা নিয়ে দেশটিতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহে চাপ পড়ছে। মহামারির কারণে সব লকডাউনে থাকায় খাদ্য সংকটেও পড়েছিল দেশটি। ভার্টিক্যাল ফার্মের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার স্বপ্ন দেখছে মরুর দেশ আরব আমিরাত।