1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মার্চেই ডাকসু নির্বাচন!

১২ জানুয়ারি ২০১৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের- ডাকসু নির্বাচন হতে পারে মার্চের মধ্যেই৷ দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনাও তাই৷ এখন প্রশ্ন হলো এজন্য কতটুকু প্রস্তুত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ?

https://p.dw.com/p/3BSBx
ছবি: DW/M.M. Rahman

আদালতের নির্দেশে ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে৷ এরইমধ্যে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধনে কমিটি হয়েছে৷ ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কমিটির প্রধান আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান৷ গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত হলে ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং তফসিল ঘোষণা করার কথা৷ ১০ জানুয়ারির ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ক্যাম্পসে সক্রিয় সব ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা৷

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা গঠনতন্ত্রে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদকের পদ অন্তর্ভূক্ত করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছি৷ যুদ্ধাপরাধী ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলো যাতে ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সেজন্য তাদের গঠনতান্ত্রিকভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছি৷ আমরা বলেছি, একাডেমিক ক্যালেন্ডারে পরীক্ষার তারিখ যেন সুনির্দিষ্ট থাকে, সেভাবে ডাকসু নির্বাচনের তারিখও প্রতিবছর সুনির্দিষ্ট করে দিতে হবে৷ ডাকসুর মেয়াদ কোনোভাবেই ৩৬৫ দিন বা এক বছরের বেশি হতে পারবে না৷ আমরা গঠনতন্ত্রের বাংলা সংস্করণ চেয়েছি৷''

সাদ্দাম হোসেন

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা সেদিনের বৈঠকে প্রক্টরিয়াল নিরাপত্তা নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলাম৷ আমাদের নেতাকর্মীরা হলগুলোতে অবস্থান করতে পারছেন না৷ তারা ক্যাম্পাসেও স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা বা ক্লাস করতে পারেন না৷ তাই ডাকসু নির্বাচনের পূর্বশর্ত হলো ক্যাম্পাসে সহাবস্থান৷ এই সহাস্থান নিশ্চিত করা না গেলে ডাকসু নির্বাচন অর্থবহ হবেনা৷''

আর ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি  মো. ফয়েজ উল্লাহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সহাবস্থানের বিষয়টি এককভাবে কোনো ছাত্র সংগঠনের নয়, এটা সবার জন্য৷ আমার ছাত্র সংগঠনের কিছু সদস্যকেও হলে তুলতে পারিনি৷ হলগুলো সরকারি ছাত্র সংগঠনের নিয়ন্ত্রণে৷ সেজন্য আমরা গঠনতন্ত্রে একটা সংশোধনীর প্রস্তাব দিয়েছি৷ আর তা হলো, ভোট কেন্দ্রগুলো হলে হলে না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে করা৷ হলে যে একটা চাপ থাকে, একাডেমিক ভবনে করলে সেই চাপ থাকবে না৷ সবাই নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবেন৷ আর শতকরা ৬৫ ভাগ ছাত্র হলের বাইরে থাকেন৷''

মো. ফয়েজ উল্লাহ

তবে তিনি বলেন, ‘‘সব কিছুর উপরে চাই নির্বাচনটা মার্চের মধ্যে হোক৷ অনেক দিন পর একটা সুযোগ এসেছে ডাকসু নির্বাচনের৷''

সহবস্থানের প্রশ্নে সাদ্দাম হোসেন বলছেন, ‘‘এটা নিয়ে কেউ রাজনৈতিক বক্তব্য দিলে আলাদা কথা৷ কিন্তু ডাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রার্থী ও ভোটার হবেন৷ এ ব্যাপারো কোনো বাধা আসবে বলে আমি  মনে করিনা৷''

আগামী সোমবার পর্যন্ত ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধনী প্রস্তাব দেয়া যাবে৷ এরপর ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ডাকসুর নতুন গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত হবে, তারপর ভোটার তালিকা৷ তবে ভোটার তালিকার প্রাথমিক কাজ আগেই হয়েছে৷ গত অক্টোবরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের একটি তালিকা তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হলের সঙ্গে সংযুক্ত ও আবাসিক মিলিয়ে মোট ৩৮ হাজার ৪৯৩ জন শিক্ষার্থীর তথ্য রয়েছে৷ এর মধ্যে ১৪ হাজার ৫০৯ জন নারী শিক্ষার্থী ও ২৩ হাজার ৯৮৪ জন পুরুষ শিক্ষার্থী৷ এটা ধরেই ভোটার তালিকা তৈরি সহজেই কম সময়ে করা যাবে৷ তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতারা মনে করেন মার্চের মাঝামাঝিই নির্বাচন সম্ভব৷ তাই ফেব্রুয়ারিতেই ডাকসুর তফসিল চাইছে অনেক ছাত্র সংগঠন৷

মো. আখতারুজাজামান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজাজামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মার্চের মধ্যেই আমাদের নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা আছে৷ আর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমরা নির্বাচন করতে প্রয়োজনীয় কাজ এগিয়ে নিচ্ছি৷ আমাদের শৃঙ্খলা কমিটিতেও মার্চের মধ্যে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেয়া আছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘ভোটার তালিকার জন্য হলভিত্তিক ছাত্রদের ডাটাবেজের কাজ চলছে৷ ডাকসুর গঠনতন্ত্র যুগোপযোগী করার কাজ চলছে৷ ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠকও করছি৷''

ক্যাম্পাসে সহাবস্থান প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের প্রভোস্ট কমিটিতে আলোচনা হয়েছে৷ সেখানে প্রভোস্টরা বলেছেন হলগুলোতে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান আছে৷ বিশ্ববিদ্যালয় সব শিক্ষার্থীর জন্য উন্মুক্ত৷ এখানে সবাই ক্লাস করছে, পরীক্ষা দিচ্ছে৷ সহাবস্থান নিয়ে কোনো সমস্যা নেই৷''

সর্বশেষ ১৯৯০ সালের ৬ জুন ডাকসু নির্বাচন হয়৷ সেই নির্বাচনে জয়ী হয় ছাত্রদলের প্যানেল৷ আমান উল্লাহ আমান ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং খায়রুল কবির খোকন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন৷ এর আগের বছর ১৯৮৯ সালেও ডাকসু নির্বাচন হয়৷ আর সেই নির্বাচনে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ ভিপি এবং মুশতাক আহমেদ জিএস নির্বাচিত হন৷ এই প্যানেলটি ছিল ছাত্রলীগসহ বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর একটি যৌথ প্যানেল৷ ১৯৭১ সালের পর ডাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র সাত বার৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান