রানির মৃত্যুতে বিশ্বনেতাদের শোক
৯ সেপ্টেম্বর ২০২২মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার স্ত্রী জিল বাইডেন বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ''রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জন্যই যুক্তকাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে এরকম সুসম্পর্ক রয়েছে। তার মর্যাদার কোনো তুলনা ছিল না। তিনি ১৪ জন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।'' বাইডেন পরে ব্রিটিশ দূতাবাসে গিয়ে তাঁর শ্রদ্ধা জানিয়ে আসেন।
জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল গুতেরেস বলেছেন, তিনি শোকাহত। রাজপরিবার, সরকার ও যুক্তরাজ্যের মানুষের প্রতি তিনি সমবেদনা জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি টুইট করে বলেছেন, রানির মৃত্যুতে তিনি শোকাহত।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিন ব্রিটেনের রাজা চার্লসকে টেলিগ্রাম পাঠিয়ে বলেছেন, এই ক্ষতি অপূরণীয়। চার্লস যেন এই সময়ে শক্ত থাকেন এবং সাহসের সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেন।
জার্মানির প্রতিক্রিয়া
জার্মানির নেতারা যুক্তরাজ্য ও জার্মানির মধ্যে সম্পর্ক ভালো করার ক্ষেত্রে রানির ভূমিকার কথা স্মরণ করেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তিনি কীভাবে কাজ করেছেন, সেটাও জানিয়েছেন জার্মানির নেতারা।
চ্যান্সেলর শলৎস বলেছেন, ''জার্মানি সহ বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের কাছে রানি এলিজাবেথ ছিলেন অনুপ্ররণা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতার পর তিনি যেভাবে যুক্তরাজ্য ও জার্মানির মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি করেছেন, তা কখনো ভোলার নয়। তার অভাব আমরা অনুভব করব।'' তার রসিকতাবোধের কথাও উল্লেখ করেছেন শলৎস।
প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার জানিয়েছেন, ''তাঁর বিপুল অভিজ্ঞতা ছিল, স্বাভাবিক কর্তৃত্ব ছিল, এক অসাধারণ কর্তব্যবোধ ছিল, তাই তিনি আমাদের স্মৃতিতে থেকে যাবেন।'' তিনি বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তিনিই পুনর্মিলনের হাত বাড়িয়েছিলেন।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেয়ারবক বলেছেন, তিনি ছিলেন তার দেশের শক্তি ও আস্থার প্রতীক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতার পর তার ভূমিকার জন্য জার্মানি তার প্রতি কৃতজ্ঞ।
মোদীর প্রতিক্রিয়া
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে বলেছেন, ''২০১৫ ও ২০১৮ সালে আমি রানি এলিজাবেথের সঙ্গে দেখা করি। সেই স্মৃতি আমি কখনো ভুলব না। তার উষ্ণতার কথাও ভুলব না। তিনি আমাকে তার বিয়েতে মহত্মা গান্ধী যে রুমাল উপহার দিয়েছিলেন, সেটা দেখিয়েছিলেন।''
মোদী বলেছেন, ''রানি এলিজাবেথকে সময় মনে রাখবে। তিনি তার দেশ ও জনগণকে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তা ভোলার নয়। তার মৃত্যুতে আমি ব্যথিত।''
ইউরোপের শ্রদ্ধাঞ্জলি
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ বলেছেন, তিনি ছিলেন ফ্রান্সের বন্ধু। গত ৭০ বছর ধরে তিনি ছিলেন ব্রিটেনের ধারাবাহিকতার প্রতীক।
আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্টিন বলেছেন, ''আয়ারল্যান্ডের সরকারের পক্ষ থেকে আমি গভীর শোকপ্রকাশ করছি। যুক্তরাজ্যের মানুষ তাদের প্রিয় রানিকে হারালো। তিনি ২০১১ সালে আয়ারল্যান্ডে এসেছিলেন। তখন আমাদের সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশীর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন।''
ইইউ-র প্রধান উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেছেন, তিনি ব্রিটেনের মানুষ ও রাজপরিবারের প্রতি গভীর শোক জানাচ্ছেন।
বাকি বিশ্বনেতাদের শোকবার্তা
ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, ''তিনি আমাদেরও রানি ছিলেন। ক্যানাডার মানুষের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা ছিল।'' নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আর্ডেন জানিয়েছেন, তারা জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ জানিয়েছেন তিনি শোকাহত। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি বলেছেন, তিনি ছিলেন মহান ও দয়ালু শাসক।
এছাড়াও বিশ্বের প্রায় সব দেশের রাষ্ট্রপ্রধান তাদের শোকের কথা জানিয়েছেন।
জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স)